ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ ও কম্পিউটারে কর কমার সম্ভাবনা

ওয়াশিং মেশিন
ছবি: সংগৃহীত

দেশে ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ ও কম্পিউটার তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী দুই থেকে তিন বছর আমদানি করা যন্ত্রাংশে শুল্ক কম দেওয়ার সুযোগ পেতে পারে। কেননা, সরকার পর্যায়ক্রমে করছাড়ের সুযোগ কমানোর পরিকল্পনা করছে।

আবার অন্যদিকে, যেসব প্রতিষ্ঠান বর্তমানে কম শুল্কে কাঁচামাল কিনছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১ জুলাই শুরু হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরে বাড়তি শুল্ককর গুণতে হতে পারে।

এয়ার কন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটর উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য বর্তমান কর সুবিধা আগামী ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

তবে নতুন অর্থবছরে এয়ার কন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসার আমদানি শুল্ক পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার চিন্তা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

দেশে কম্প্রেসার তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুরক্ষা দিতে আমদানি করা কম্প্রেসারের দাম বেঁধে দেওয়া হতে পারে।

ওয়ালটন হোম অ্যান্ড কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সেসের চিফ বিজনেস অফিসার মোস্তফা কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওয়াশিং মেশিন, রেফ্রিজারেটরের মতো হোম অ্যাপ্লায়েন্সের শুল্ক সুবিধা শুধু যে বিদেশি বিনিয়োগকেই আকর্ষণ করবে তা নয়। এটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি অনেক কর্মসংস্থান তৈরি করবে।'

শুল্ক সুবিধার জন্য 'ধন্যবাদ' জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'এই সুবিধা স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও প্রতিযোগিতামূলক হতে আগ্রহী করবে। পণ্যের দাম কমবে। গ্রাহকরাই লাভবান হবেন।'

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশ কেনায় শুল্ক সুবিধা আগামী ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হতে পারে।

কম্পিউটার নির্মাতারা যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক সুবিধা পাবেন আগামী ২০২৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

প্রিফেব্রিকেটেড স্টিলের কাঁচামাল আমদানির সুযোগ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে যন্ত্রাংশ আমদানির ওপর রেয়াতি শুল্কের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।'

বর্তমানে আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কাঁচামাল কেনার সময় প্রতিষ্ঠানগুলো যে শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে এর কোনো সময়সীমা নেই।

২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আসার পর বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা ভাবছি, যাতে কর কমানোর সংস্কৃতি থেকে বের হওয়া যায়। কিছু খাত শুল্ক সুবিধা পেয়ে ভালো অবস্থানে উঠে এসেছে। এখন তাদেরকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।'

এ ছাড়া, কার্পেট শিল্পের প্রসারে এই খাতে ব্যবহার করা পলিপ্রোপিলিন সুতা আমদানিতে শুল্ক বর্তমানের ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

একইভাবে পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী শিল্পের জন্য আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে করার সম্ভাবনা আছে।

সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন) ও অটোমেটেড টেলার মেশিনের যন্ত্রাংশ আমদানিতে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত রেয়াতি শুল্ক দেওয়া হতে পারে। তবে আগামী অর্থবছরে আমদানি শুল্ক বর্তমানের এক শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হতে পারে।

একইভাবে, সরকার দেশীয় ফেরোএলয় উত্পাদন শিল্পে সহায়তা নিশ্চিত করতে চায়। রড, বার ও অ্যাঙ্গেল উত্পাদনে ফেরোএলয় ব্যবহার করা হয়।

এই শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ম্যাঙ্গানিজের ওপর শুল্ক অর্ধেক কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করা হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

NCP unveils 24-point ‘New Bangladesh’ manifesto, calls for Second Republic and new constitution

Key pledges include recognising the July uprising and ensuring justice for those affected

45m ago