কেনিয়ায় নতুন কর আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, নিহত অন্তত ১০
কেনিয়ায় নতুন কর আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছেন পুলিশ। গার্ডিয়ান জানায়, কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা পার্লামেন্টে ভাঙচুর করার চেষ্টা চালালে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস এবং গুলি ছোড়ে।
এসময় পার্লামেন্ট ভবনের ভেতর থেকে আগুনের শিখা বের হতে দেখা যায়।
এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
পার্লামেন্টের বাইরে রয়টার্সের এক সাংবাদিক অন্তত পাঁচজন বিক্ষোভকারীর মরদেহ দেখেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিক্ষোভকারী ডেভিস তাফারি রয়টার্সকে বলেন, 'আমরা পার্লামেন্ট বন্ধ করে দিতে চাই এবং প্রত্যেক এমপির পদত্যাগ করা উচিত। আমাদের নতুন সরকার দরকার।'
উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে কেনিয়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় অসহনীয় পর্যায়ে উঠেছে। এর মধ্যে সরকার কর বৃদ্ধির আইন করায় দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগ চান।
এই দাবিতে এক সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ শুরু হয়। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি ছাড়া দেশটির অন্যান্য বড় ও ছোট শহরেও বিক্ষোভ চলছে। বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠী ও পুলিশের নজরদারি সংস্থা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পুলিশিং ওভারসাইট অথরিটির তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে বিক্ষোভে একজন নিহত ও অন্তত ২০০ জন আহত হয়েছেন।
মূলত তরুণরাই এ বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এক্স ও টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজমের মাধ্যমে বিলটির বিরোধিতা করছে তারা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, গত পাঁচ দিনে বিক্ষোভে জড়িত সন্দেহে কমপক্ষে ১২ জনকে 'অপহরণ' করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কেনিয়ার সম্প্রচারমাধ্যম কেটিএন জানিয়েছে বিক্ষোভের খবর প্রকাশের কারণে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারা চ্যানেল বন্ধের হুমকি পেয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ, টানা দুই বছরের খরা এবং মূল্যস্ফীতিসহ বেশ কয়েকটি ধাক্কায় জর্জরিত কেনিয়ার অর্থনীতি।
এই পরিস্থিতির মধ্যে সরকার ঋণের বোঝা কমাতে কর অতিরিক্ত ২৭০ কোটি ডলারের বেশি বাড়ানোর বিল অনুমোদন করেছে।
রুটি, রান্নার তেল, গাড়ি এবং আর্থিক লেনদেনের মতো কিছু ক্ষেত্রে সরকার নতুন কর আইনে কিছু ছাড় দিয়েছে। কিন্তু তা বিক্ষোভকারীদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। সরকারি হিসাব বলছে, কেনিয়ার সরকারের বার্ষিক আয়ের ৩৭ শতাংশই যায় ঋণের সুদ পরিশোধে।
পার্লামেন্ট মঙ্গলবার আর্থিক বিল অনুমোদন করেছে। এখন সেটি প্রেসিডেন্টের কাছে সই করার জন্য পাঠানো হবে। এ বিলে প্রেসিডেন্টের কোনো আপত্তি থাকলে তিনি তা পার্লামেন্টে ফেরত পাঠাতে পারেন।
Comments