‘অস্তিত্ব সংকটে’ ট্রাভেল এজেন্টরা

ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বের কারণে যাত্রীরা, বিশেষ করে অভিবাসী শ্রমিকরা ঢাকা বিমানবন্দরে ভোগান্তিতে পড়েন। ছবি: আনিসুর রহমান/স্টার

দেশব্যাপী ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের কারণে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সব কার্যক্রম বন্ধ থাকায় 'অস্তিত্ব সংকটে'র সম্মুখীন প্রায় চার হাজার ট্রাভেল এজেন্ট।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (এটিএবি) বলছে, ১৮ জুলাই থেকে সব ধরণের ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি, তারিখ পরিবর্তন ও হোটেল বুকিং বন্ধ থাকায় এটিএবির লোকসান প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

এটিএবি জানিয়েছে, ট্রাভেল এজেন্টরা বিভিন্ন করপোরেট ও নিয়মিত গ্রাহকদের কাছ থেকে টিকিট বিক্রির টাকাও আদায় করতে পারেনি। কারণ, ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক পরিষেবা বন্ধ থাকায় আর্থিক লেনদেন স্থগিত ছিল।

এটিএবি সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ গতকাল মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইন্টারনেট পরিষেবা অবিলম্বে পুরোপুরি চালু না হলে আমাদের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের কার্যক্রম শুরু করা দরকার।'

তিনি বলেন, 'সামনে আমাদের জন্য হয়তো আরও খারাপ সময় অপেক্ষা করছে।'

বর্তমান পরিস্থিতি আরও দুইদিন চলমান থাকলে দেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলো আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) বিল পরিশোধ করতে পারবে না বলে আশঙ্কা এটিএবির।

বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইনস আইএটিএ থেকে টিকিট বিক্রির বিপরীতে অর্থ সংগ্রহ করে। এই সংস্থাটি ট্রাভেল এজেন্ট ও বিদেশি এয়ারলাইনসের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে।

ট্রাভেল এজেন্টরা প্রতি ১৫ দিনে আইএটিএর মাধ্যমে এয়ারলাইনসকে অর্থ প্রদান করে।

এটিএবি সভাপতি জানান, পরবর্তী অর্থপ্রদানের তারিখ ৩০ জুলাই।

তিনি বলেন, 'আমরা যদি ক্রেতা ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে টিকেট বিক্রির অর্থ আদায় করতে না পারি, তাহলে এয়ারলাইনসগুলোর বকেয়া টাকাও পরিশোধ করতে পারব না।'

বিশ্বব্যাপী টিকিট বুকিং, বিতরণ ব্যবস্থা—সবকিছুই সম্পূর্ণভাবে অনলাইন যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আমরা গত পাঁচ দিনে কোনো এয়ারলাইনসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।'

চলমান সংকটে বিদেশগামী যাত্রীরাও দিশেহারা হয়ে পরেছেন।

এটিএবি নেতারা বলছেন, যে যাত্রীরা ইতোমধ্যে টিকিট কিনেছেন এবং ইস্যু করেছেন তারা তাদের গন্তব্যে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে যেসব যাত্রীদের দেশের বাইরে যেতে হবে তাদেরকে বিমানবন্দরে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স থেকে সরাসরি টিকিট কেনার পরামর্শ দিয়েছেন এটিএবি নেতারা।

এ ছাড়া, ইন্টারনেট বন্ধের কারণে সৃষ্ট সংকটের কারণে দেশেও ফিরতে পারছেন না যাত্রীরা।

আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, 'পর্যটন শিল্পে এখন চলছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।'

ইন্টারনেট না থাকায় টিকিট বিক্রি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এয়ারলাইনসগুলো বলছে, বিদেশি এয়ারলাইনগুলো টিকিট বিক্রির জন্য এজেন্সির ওপর নির্ভর করে।

এ ছাড়া, যাত্রী সংকটের কারণে গত শুক্রবার থেকে প্রায় ২৬টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।

কয়েকশ যাত্রী—যাদের অধিকাংশ সৌদি আরবগামী বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক—শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের পরে সৌদি আরবের জাতীয় পতাকাবাহী সৌদিয়া অন্তত ১০টি ফ্লাইট বাতিল করায় দেশটিতে শ্রমিকদের সময়মতো ফিরে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের বিমানবন্দরগুলোতে সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh to clear rooppur dues

Govt moves to clear Rooppur dues to Russia after US waiver

Central bank seeks nod from Washington after Russia's reply

12h ago