মঙ্গলবার আগস্ট ২৭, ২০২৪ ১২:২৭ অপরাহ্ন সর্বশেষ আপডেট: মঙ্গলবার আগস্ট ২৭, ২০২৪ ১২:৪০ অপরাহ্ন
রাশিয়ার ইলন মাস্ক পাভেল দুরভ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত
সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন রুশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পাভেল দুরভ। গ্রেপ্তারের পর থেকেই এই প্রচারবিমুখ প্রযুক্তি উদ্যোক্তাকে নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা।
গতকাল মঙ্গলবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে 'রাশিয়ার ইলন মাস্ক' নামে পরিচিত পাভেলের জীবনের নানা জানা-অজানা তথ্য উঠে এসেছে।
পাভেল সম্পর্কে নানা গুজব প্রচলিত আছে। এগুলোর মধ্যে আছে তিনি ক্রেমলিনের আজ্ঞাবহ, বাকস্বাধীনতার ধারক-বাহক ও শতাধিক সন্তানের পিতা।
তার সঙ্গে বিশ্লেষকরা মার্ক জাকারবার্গের কারিগরি জ্ঞান ও প্রাচুর্য, জ্যাক ডরসে'র উদ্ভট জীবনযাপন ও ইলন মাস্কের স্বাধীনতাকামী কার্যকলাপের মিল খুঁজে পান। সঙ্গে মাস্কের মতো তিনিও অসংখ্য সন্তান জন্মদানের ধারণায় বিশ্বাসী।
জুলাইতে পাভেল বলেন, তিনি গত ১৫ বছরে স্পার্ম ডোনেট করে শতাধিক সন্তানের পিতা হয়েছেন।
টেলিগ্রামকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন, তার সন্তানরা ১২টি দেশে ছড়িয়ে আছে।
ব্লুমবার্গের দেওয়া তথ্য মতে, তার রয়েছে ৯১৫ কোটি ডলারের সম্পদ। ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও রাশিয়া সহ অন্তত ৬-৭টি দেশের পাসপোর্ট রয়েছে তার। বেশ কয়েকটি দেশে নিজের বাড়িও আছে পাভেলের। প্রায় এক দশক তিনি নির্দিষ্ট কোনো দেশ বসবাস না করেই কাটিয়েছেন। সরকারি নজরদারি এড়িয়ে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা উপভোগ করেছেন।
পাভেল নতুন করে আইনি সমস্যায় পড়ার পর টেলিগ্রাম নিয়ে পুরনো বিতর্ক আবারও সবার সামনে এসেছে। যা হল 'এন্ড টু এন্ড' এনক্রিপশন। যার ফলে, দুইজন ইউজারের পাঠানো মেসেজ, কল বা অন্য কোনো ধরনের যোগাযোগে তৃতীয় কোনো পক্ষ কোনোভাবেই আড়ি পাতার সুযোগ নেই। এমন কী, পাভেল নিজে বা টেলিগ্রামের অন্য কোনো কর্মীও তা পারেন না। এ বিষয়টি ইউজারদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করলেও তা এই অ্যাপকে বেশ কয়েকটি দেশের সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের চক্ষুশূলে পরিণত করেছে।
ছোটবেলা থেকেই প্রতিভাবান ছিলেন পাভেল
রাশিয়ার ইলন মাস্ক পাভেল দুরভ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত
১৯৮৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে জন্ম নেন পাভেল (৩৯)। চার বছর বয়সে তার পরিবার ইতালিতে চলে যায়। পরবর্তীতে সোভিয়েত আমলের সমাপ্তির পর রাশিয়ায় ফিরে আসেন তিনি ও তার পরিবার।
শিশুকালে 'গণিত প্রতিভা' হিসেবে পরিচিত ছিলেন পাভেল ও তার বড় ভাই নিকোলাই। তার উভয়ই গণিত বিষয়ে বেশ কিছু পুরষ্কার জেতেন।
পাভেল বলেন, 'আমরা দুইজনই কোডিং ও ডিজাইনিং নিয়ে ব্যাপক উৎসাহী ছিলাম।'
রাশিয়ায় ফেরার পথে ইতালি থেকে তারা একটি আইবিএম পিসি এক্সটি কম্পিউটার নিয়ে আসেন। এই কম্পিউটারেই কোডিং শেখেন দুই ভাই।
জাকারবার্গের সঙ্গেও তুলনা
রাশিয়ার ইলন মাস্ক পাভেল দুরভ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত
২০০৬ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে রুশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিকনটাক্ট (ভিকে) তৈরি করেন পাভেল। অল্প সময়ের মাঝেই তিনি এই মাধ্যমকে রাশিয়ার ফেসবুক বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন।
২০১৩ সালে ভিকে'র মাধ্যমে কিয়েভে ইউক্রেনের রুশপন্থি প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকভিচের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হলে ক্রেমলিন পাভেলকে ইউক্রেনীয় ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
'আমি এই তথ্য দিতে অস্বীকার করি। এতে ক্রেমলিন, তথা রুশ সরকারের সঙ্গে আমার সম্পর্কের অবনতি হয়', এক সাক্ষাৎকারে বলেন পাভেল।
এক পর্যায়ে পাভেল ভিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং প্রতিষ্ঠানে তার মালিকানার অংশটুকু লাখো ডলারে বিক্রি করে রাশিয়া ছেড়ে যান। এ মুহূর্তে ক্রেমলিনের নিয়ন্ত্রণেই পরিচালিত হয় ভিকের সব কার্যক্রম।
২০১৮ সালে রাশিয়ায় টেলিগ্রাম নিষিদ্ধ করা হলেও দুই বছর এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারের কারণ
নারী ভক্তদের সঙ্গে পাভেল। ছবি: সংগৃহীত
পাভেলের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, টেলিগ্রামের মাধ্যমে অপরাধমূলক কার্যক্রম ঠেকাতে যথেষ্ঠ উদ্যোগ নিচ্ছেন না তিনি। এ ছাড়া, এই অ্যাপের কার্যক্রমে নজর রাখার জন্য যথেষ্ঠ মডারেটর নিয়োগ দেননি, এমন অভিযোগও রয়েছে।
টেলিগ্রাম এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় জানিয়েছে, দুবাই ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব আইন মেনে চলে এবং এর মডারেশন 'এই খাতের মানদণ্ড রক্ষা করে চলে এবং নিরন্তর এই প্রক্রিয়ার উন্নয়ন করা হচ্ছে।'
'কোনো (সামাজিক যোগাযোগ) প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অপকর্ম করা হলে বা এর অপব্যবহার হলে সেটার জন্য সত্ত্বাধিকারী দায়ী, এ ধরনের দাবি একেবারেই অবাস্তব', বিবৃতিতে আরও জানায় টেলিগ্রাম।
পাভেলের গ্রেপ্তারের পর তার নাগরিক অধিকার রক্ষা ও দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে রাশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.
Comments