ডিসি নিয়োগে ঘুষের অভিযোগ: উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি করবে সরকার

জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে ঘুষের অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করার পরিকল্পনা করছে সরকার।

বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।

একটি জাতীয় দৈনিকে ডিসি নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ করে সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে তারই অধীনস্থ এক যুগ্মসচিবের হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার স্ক্রিনশটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সেই প্রতিবেদনের উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, 'আমরা জনপ্রশাসন সচিব সংক্রান্ত প্রতিবেদন নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখছি। এ সমস্যা সমাধানে আমরা সিনিয়র সাংবাদিকদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের পরিকল্পনা করছি। কমিটি প্রতিবেদনটির সত্যতা এবং সংবাদপত্রের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেই, একইসঙ্গে আমরা গণমাধ্যমকে অনুরোধ করি তাদের প্রতিবেদন যেন বস্তুনিষ্ঠ হয়। কোনো ভুল তথ্য যেন না থাকে।'

একই পত্রিকায় প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, 'যেখানে ডিসি নিয়োগে চেকের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তোলা হয়েছিল, ইতোমধ্যে তদন্ত করা হয়েছে এবং অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।'

জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগকে কেন্দ্র করে ঘুষ লেনদের যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, সেটা 'ভুয়া' এবং এই অভিযোগ অমূল্যক বলে দাবি করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, 'আমার মোবাইলটা স্যামসাং, তারা যেটা শো করেছেন, সেটা হলো আইফোন। আইফোন কি আমি ব্যবহার করি? আমি ব্যবহার করি স্যামসাং। কে কী দেখাল, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন। হোয়াট ওয়াজ দ্য ডায়লগ, আমি এটার কিছুই জানি না। আমি এটার সম্পর্কে...ইফ আই সে লেস, ইট ইজ বেটার।'

যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। সরকার যে টেলিফোন (মোবাইল ফোন) দিয়েছে, সেটাও আমি ব্যবহার করি না। আপনারা যারা জানেন, আমার আগের যে নম্বর সেটাই আমি ব্যবহার করছি সরকারিভাবে।'

এই নিউজের সত্যতা আছে কি না, আপনি পদত্যাগ করবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জ্যেষ্ঠ এই সচিব বলেন, 'আপনারা যদি নিউজ করতে চান, স্টান্টবাজি নিউজ করতে চান, তাহলে এ প্রশ্ন করতে পারেন। এতদিন আমার সঙ্গে কাজ করেছেন, বিন্দু-বিসর্গ যেখানে সত্যতা নেই, এই প্রশ্ন করার আগে আপনারা নিজেকে প্রশ্ন করেন, কতটুকু যৌক্তিক হচ্ছে আমাকে এই প্রশ্ন করা।'

একই দৈনিকে এর আগে প্রকাশিত নিউজের পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া তিনটি পদক্ষেপ তুলে ধরে মোখলেস উর রহমান বলেন, 'ইতোমধ্যে তিনটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনটি চিঠি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে নামিয়ে নেবেন। তথ্য সচিবকে চিঠি লিখেছি, সেখানে এই পত্রিকাটির নাম আছে। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরাসরি সরকারি চিঠি দেওয়া হয়েছে।‌ এ ছাড়া অন্যান্য যা নিয়ম-কানুন আছে, আপনারা আমার থেকে ভালো জানেন। তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে।'

'যাকে কেন্দ্র করে অর্থাৎ ওই ভুয়া লোকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি লেখা হয়েছে।‌ এক-দুই দিনের মধ্যে তিনি গ্রেপ্তার হবেন। যে ব্যাংকারের অনভিজ্ঞতা বা ভুলের কারণে ব্যাংক অ্যাকাউন্টটা খোলা হয়েছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে। শুধু তার ব্যবস্থাই হবে না, অন্যান্য ব্যাংকেও যাতে এ রকম সমস্যা না হয়, সেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।'

আপনি মানহানির মামলা করবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি প্রথমত বলব, যারা এটা করেছে তাদের আমরা কতটুকু গুরুত্ব দেই। একটা রাস্তার লোক আমাকে অনেক কথা বলতে পারে, আমি কি রাস্তার লোকের পেছনে দৌড়াব? নেভার।'

'আমরা সরকারের পজিশনে থেকে জনগণের স্বার্থে কাজ করি। যেভাবে আছি সেভাবেই কাজ করব যতদিন আল্লাহ হায়াতে রেখেছেন নিয়ম-কানুন মোতাবেক।'

আপনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরকারের কাছে আপনি আহ্বান জানাবেন কি না, প্রশ্নের জবাবে মোখলেস উর রহমান বলেন, 'অভিযোগটা যিনি করেছেন এই অভিযোগকারী আমার কাছে কোনো বিবেচনায় নেই। এই অভিযোগটি আমি মূল্যহীন মনে করি। এটা ভুয়া নিউজ।'

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

8h ago