আজ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা

নোবেল পুরষ্কারের প্রতিকী ছবিঃ সংগৃহীত
নোবেল পুরষ্কারের প্রতিকী ছবিঃ সংগৃহীত

আজ ১১ অক্টোবর নোবেল পুরস্কার আসরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় 'শান্তি পুরস্কার' বিজয়ীর নাম জানা যাবে। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে।

পুরস্কারের ঘোষণা নেবেলপ্রাইজ ডট ওআরজি এবং ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবে নোবেল পুরস্কারের অফিসিয়াল ডিজিটাল চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

এ বছর পুরস্কারটির জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে), জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) ও জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসকে এগিয়ে রাখা হচ্ছে।

বিশ্বশান্তির জন্য একটি অন্ধকারাচ্ছান্ন বছর পার করার প্রেক্ষাপটে এবারের পুরস্কারটিকে বিবেচনা করা হচ্ছে আলোকবর্তিকা হিসেবে।

চলতি বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ, সুদানে দুর্ভিক্ষ, জলবায়ু পরিবর্তন সংকটসহ অনেক বিষয় সামনে এসেছে। এ কারণে নোবেল পর্যবেক্ষকেরা শেষ মুহূর্তে এসে এবারের বিজয়ী সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করতে হিমশিম খাচ্ছেন।

নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট এই বছরের শান্তি পুরস্কারের জন্য মোট ২৮৬ জন প্রার্থীর নাম নিবন্ধন করেছে, যার মধ্যে ১৯৭ জন ব্যক্তি এবং ৮৯টি সংস্থা রয়েছে।

২০০৬ সালের ১০ ডিসেম্বর নোবেল কমিটির প্রধান ওলে দানবোল্টের কাছ থেকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের পদক ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করছেন ড. ইউনূস। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
২০০৬ সালের ১০ ডিসেম্বর নোবেল কমিটির প্রধান ওলে দানবোল্টের কাছ থেকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের পদক ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করছেন ড. ইউনূস। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

১৯০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১১৪ বার নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ১১১ ব্যক্তি ও ৩০ সংস্থা মিলে পুরস্কার বিজয়ীর সংখ্যা ১৪১। রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি ১৯১৭, ১৯৪৪ ১৯৬৩ সালে তিনবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। 

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তর ১৯৫৪ ও ১৯৮১ সালে দুইবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়া ২৭ স্বতন্ত্র সংস্থা নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।

প্রথা অনুযায়ী অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার হিসেবে ৭ অক্টোবর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

সোমবার যৌথভাবে দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুনকে চিকিৎসাশাস্ত্র বা ওষুধশাস্ত্রে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি জানায়, 'মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য' তাদের এ পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্স জন জে. হপফিল্ড ও জিওফ্রে ই. হিন্টনকে যৌথভাবে ২০২৪ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।

একাডেমি জানায়, 'কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের সাথে মেশিন লার্নিং সক্ষম করে তোলার কাঠামো আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য' তাদেরকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

বুধবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড বেকারকে কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইনের জন্য' এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডেমিস হাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে 'প্রোটিন গঠন পূর্বাভাসের জন্য' যৌথভাবে ২০২৪ সালের রসায়নে নোবেল পুরস্কারজয়ী ঘোষণা করে।

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার ম্যান বুকার বিজয়ী কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক, ছোট গল্পকার ও ঔপন্যাসিক হান কাংকে ২০২৪ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতিবছর ৩০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর যাচাই বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে। সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর ৫ বছর পর থেকে তার নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পরে ১৯৬৯ সালে এতে যুক্ত হয় অর্থনীতি।

প্রতিবছর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর দিবস ডিসেম্বরের ১০ তারিখ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেওয়া হয়। প্রত্যেক ক্ষেত্রে পুরস্কার বিজয়ীরা একটি স্বর্গপদক, শংসাপত্রসহ একটি ডিপ্লোমা এবং বর্তমানে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার পান।

উল্লেখ্য, সমাজের 'নীচ থেকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন' করার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।

আগামী ১৪ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট ও  বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে ছয় নম্বর ও সর্বশেষ অর্থনীতি ক্যাটাগরির পুরস্কার ঘোষণা করা হবে।  এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর  নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শেষ হবে।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

1h ago