৩ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ী, আহত অর্ধশতাধিক

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

তারা কলেজ ভবন ভাঙচুর ও প্রতিষ্ঠান থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

এ হামলা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ায় ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ জন এবং যাত্রাবাড়ী ও মাতুয়াইলের স্থানীয় ক্লিনিকে অন্তত ৩৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

ছবি: এমরান হোসেন/ স্টার

ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেওয়া এক শিক্ষার্থী ইজাজ মাহমুদ সাজিদ বলেন, 'গতকাল মাহবুবুর রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় আমরা দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা মাহবুবুর রহমান ডিগ্রি কলেজে যাই। তখন সেখানকার শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর হামলা করে।' 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক ডেইলি স্টারকে জানান, যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে বিভিন্ন কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসেছে। তাদের বেশীরভাগই মাথায় আঘাত পেয়েছেন। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে।'

ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, 'সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।'

ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ এক ডজনের বেশি কলেজের হাজারো শিক্ষার্থী পুরান ঢাকার কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলার একদিন পর এই হামলার ঘটনা ঘটল।

আজ কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে লাঠি ও লোহার রড নিয়ে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের দিকে মিছিল নিয়ে যায়।

সংঘর্ষ চলাকালে শিক্ষার্থীরা হামলা ও একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটের টুকরো নিক্ষেপ করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়।

ড. মাহবুবুর রহমান কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর ডেইলি স্টারকে বলেন, শিক্ষার্থীর নাম ধরে লোকজন ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় আমাদের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়। তারা প্রতিটি রুমে ভাঙচুর করে এবং লুটতরাজ চালায়। হামলায় শতাধিক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী আহত হয়ে আশেপাশের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গত ১৮ নভেম্বর ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ছাত্র অভিজিত। মৃত্যুর জন্য চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।

২১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বিক্ষোভরত মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

হামলার পর অভিজিতের মৃত্যু ও পরবর্তীতে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল মোল্লা কলেজ, ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও নটরডেম কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়।

শিক্ষার্থীদের জমায়েত কবি নজরুল কলেজ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কলেজে প্রবেশের চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়।

দুপুর ১টার দিকে কবি নজরুল কলেজ থেকে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দেওয়ার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা চালায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলমান থাকায় সোহরাওয়ার্দী কলেজে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

গতকাল সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল, একটি গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস ও একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা।

Comments

The Daily Star  | English

Election Roadmap: BNP unhappy as Yunus gives no specific timeline

The election must be held by December, as any delay could cause the situation to spiral out of control, the BNP said after a meeting with the chief adviser yesterday.

7h ago