নারী শিক্ষার বিষয়ে তালেবানের অবস্থানের নিন্দা রশিদ-নবির

আফগান নারীদের 'নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইভস' ট্রেনিং ইন্সটিটিউট বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান শাসকগোষ্ঠী। সিদ্ধান্তকে 'গভীর দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক' হিসেবে উল্লেখ করে হতাশা প্রকাশ করেছেন দেশটির দুই তারকা ক্রিকেটার রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবি।

 আগেই দেশটিতে মেয়েদের মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা আফগানিস্তানে নিষিদ্ধ করে তালেবান। তবে চিকিৎসা খাতে অনুমতি ছিল। এবার সেই সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এলো তারা। তাতে দেশটির নারী অধিকার পরিস্থিতির আরও অবনতি হলো। তবে তালেবানদের তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করে আফগান মেয়েদের শিক্ষার অধিকার পুনরুদ্ধার করার আহ্বান জানান রশিদ ও নবি।

সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রশিদ ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতে লিখেছেন, 'ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব অনেক ওপরে। নারী ও পুরুষের জ্ঞান অন্বেষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনেও শিক্ষার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং দুটি লিঙ্গেরই সমান গুরুত্ব স্বীকার করা হয়েছে। খুব দুঃখ ও হতাশার সঙ্গে দেখছি, সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানে মা-বোনদের জন্য শিক্ষা ও চিকিৎসার ইন্সটিটিউটগুলো বন্ধ করা হয়েছে।

'এই সিদ্ধান্ত শুধু তাদের ভবিষ্যৎই নয়, সমাজের বুনিয়াদকেও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এ নিয়ে যে দুঃখ ও ব্যথার প্রকাশ করছেন, এর মাধ্যমে মর্মন্তুদ ভোগান্তিটা বোঝা যায়।'

'আফগানিস্তান, আমাদের ভালোবাসার মাতৃভূমি সংকটময় সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। দেশের প্রতিটি খাতে পেশাদার মানুষ খুব দরকার। বিশেষ করে চিকিৎসা খাতে। নারী চিকিৎসক ও নার্সদের তীব্র সংকট খুব দুশ্চিন্তার, যা সরাসরি নারীদের স্বাস্থ্যসেবা ও সম্মানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। চিকিৎসায় পেশাদারেরা, যারা সত্যিকার অর্থে তাদের প্রয়োজনটা বোঝেন, আমাদের মা-বোনদের তাদের সংস্পর্শে আসা প্রয়োজন।'

'আমি তাই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করছি। তাতে আফগান নারীরা শিক্ষার অধিকার ফিরে পাবে এবং জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। সবার শিক্ষার অধিকার শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয় বরং এটা নৈতিক বাধ্যবাধকতা যা আমাদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত,' যোগ করেন রশিদ।

তীব্র প্রতিবাদ করেছেন নবিও, 'চিকিৎসা খাতে নারীদের লেখাপড়া নিষিদ্ধ করা শুধু হৃদয়বিদারক নয়, ভীষণ অবিচারও। ইসলাম সব সময়ই সবার শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়েছে এবং ইতিহাসেও এমন প্রেরণাদায়ক প্রচুর উদাহরণ আছে, যেখানে নারীরা জ্ঞানের মাধ্যমে অনেক প্রজন্মে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।'

'তালেবানকে আমি এসব মূল্যবোধে গুরুত্ব দেওয়ার অনুরোধ করছি। নারীদের শিক্ষা এবং নিজের জনগণকে তাদের সেবা করার সুযোগকে অস্বীকার করার অর্থ হলো তাদের স্বপ্ন এবং আমাদের জাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা। আমাদের মেয়েদের পড়তে দিন, বেড়ে উঠতে দিন এবং সবার জন্য আরও ভালো আফগানিস্তান তৈরি করুন। এটা তাদের অধিকার এবং তা রক্ষার দায়িত্বটা আমাদের,' যোগ করেন নবি।

নারী শিক্ষার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন আফগানিস্তানের আরেক তারকা ব্যাটার রহমানউল্লাহ গুরবাজও।

Comments

The Daily Star  | English

Rohingya influx: 8 years on, repatriation still elusive

Since the repatriation deal was signed with Myanmar in November 2017, Bangladesh tried but failed to send Rohingyas back.

9h ago