সিরিয়া ছেড়ে পালিয়েছেন বাশার-আল আসাদ

হোমস শহরে বাশারের ছবি ভাঙচুর করে ক্রদ্ধ জনতা। ছবি: এএফপি
হোমস শহরে বাশারের ছবি ভাঙচুর করে ক্রদ্ধ জনতা। ছবি: এএফপি

রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়েছে বিদ্রোহীরা। এই পরিস্থিতিতে আজ সকালে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে চেপে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশটির শাসক প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদ। 

সিরিয়ার দুই শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

বাশারের গন্তব্য এখনো জানা যায়নি। 

বিদ্রোহীরা জানিয়েছেন, তারা বিনা বাধায় রাজধানীতে প্রবেশ করেছেন। সরকারের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কোন ধরনের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি তাদেরকে।

বিদ্রোহীরা বলেন, 'আমরা সিরিয়ার মানুষদের একটি সুসংবাদ জানিয়ে উদযাপনে মেতে হঠতে চাই। বন্দিদের শৃঙ্খল খুলে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেদনায়া কারাগারে অন্যায়ভাবে মানুষকে বন্দী রাখার কালো যুগের অবসান ঘোষণা করছি।

সরকারী বাহিনীর ট্যাংকে আগুন ধরিয়ে দেয় বিদ্রোহীরা। ছবি: এএফপি
সরকারী বাহিনীর ট্যাংকে আগুন ধরিয়ে দেয় বিদ্রোহীরা। ছবি: এএফপি

দামেস্কের শহরতলীতে অবস্থিত সেদনায়া কারাগারে আসাদের সরকার হাজারো মানুষকে বন্দী রেখেছিল।

কয়েক ঘণ্টা আগেই বিদ্রোহীরা ঘোষণা দেয়, তারা গুরুত্বপূর্ণ শহর হোমসের দখল নিয়েছে। মাত্র এক দিনের যুদ্ধেই এই শহর দখল করে নেয় তারা।

সে সময়ই বাশারের ২৪ বছরের ইস্পাত কঠিন শাসনের ভাগ্য সুতোয় ঝুলতে শুরু করে।

ইতোমধ্যে সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে তিনি রাজি। 

আজ রোববার সকালে দামেস্কের কেন্দ্রে বিচ্ছিন্নভাবে গুলির শব্দ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তবে গোলাগুলির উৎস সম্পর্কে তাৎক্ষণিক ভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স।

হোমস শহরে সরকারি বাহিনীর পতন ও সেনা প্রত্যাহারের পর হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসে নেচে-গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করে। তারা বলতে থাকেন, 'আসাদ চলে গেছে, হোমস এখন মুক্ত' এবং 'সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক। বাশার আল-আসাদ নিপাত যাক।'

বিদ্রোহীরা আকাশে গুলি ছুঁড়ে উদযাপন করে। তরুণ-তরুণীরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের পোস্টার ছিঁড়তে থাকে।

হোমসের পতনেই আসাদের নিয়তি নির্ধারণ হয়। কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলের মধ্য দিয়েই আসাদের মূল শক্তির কেন্দ্র থেকে দামেস্কের যোগাযোগ ছিল। হোমস হাতছাড়া হওয়ায় রুশ মিত্রদের নৌ ও বিমানঘাঁটির সঙ্গে দামেস্ক কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতা আবু মোহাম্মদ আল–জাওলানি হোমস দখলের ঘটনাটি এক 'ঐতিহাসিক মুহূর্ত' হিসেবে আখ্যা দেন এবং তার গোষ্ঠীর যোদ্ধাদের অহেতুক রক্তপাতে না জড়ানোর এবং 'যারা অস্ত্রত্যাগ করেছে', তাদেরকে কোনো ধরনের আঘাত না দেওয়ার নির্দেশ দেন।

বিদ্রোহীরা কারাগার থেকে লাখো বন্দীকে মুক্তি দেয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত পালিয়ে যায়। যাওয়ার আগে সব নথি আগুনে পুড়িয়েছে তারা।

 

Comments

The Daily Star  | English

Rising tea prices bring new life to northern growers

Better rates, higher yields, and improved quality are revitalising tea cultivation

11h ago