নভেম্বরে ওষুধ রপ্তানিতে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, ওষুধ রপ্তানি, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস,
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ রপ্তানিতে রেকর্ড পরিমাণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন বাজার ও বড় রপ্তানি আদেশ পাওয়ায় রপ্তানিতে এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে দেশে ওষুধ রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫২ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে ৯২ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এর মধ্যে শুধু নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ২২ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই মাসে যা ছিল ১৩ দশমিক ১৪ মিলিয়ন ডলার।

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকন মেডিকেয়ার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম বলেন, 'সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে সাধারণত প্রতিবছরের এ সময়ে রপ্তানি আদেশ বাড়ে। যার প্রভাব পড়ে রপ্তানি আয়ে।'

রপ্তানি আদেশ উল্লেখযোগ্য বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'দেশে মার্কিন ডলারের সংকট ধীরে ধীরে কমেছে। ফলে কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার বিধিতে শিথিলতা আনায় এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে।'

'এছাড়া সেপ্টেম্বরে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দেশের ওষুধ শিল্প কিছুটা সমস্যায় পড়লেও অক্টোবর থেকে পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে,' বলেন তিনি।

স্থানীয় রপ্তানিকারকদের আন্তর্জাতিক বিপণন দলগুলো রপ্তানি বাড়াতে কাজ করছে উল্লেখ করে মঞ্জুরুল আলম বলেন, 'ওষুধ কোম্পানিগুলো এখন রপ্তানি বাড়াতে ও নতুন গন্তব্য খুঁজতে আগ্রহী।'

এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের নির্বাহী পরিচালক (বিপণন ও বিক্রয়) মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, 'শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মিয়ানমারের মতো বড় আমদানিকারকরা পুনরায় অর্ডার দেওয়া শুরু করেছে।'

এই প্রেক্ষাপটে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট থেকে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ফলে আগামী দিনগুলোতে রপ্তানি আরও বাড়বে।

এছাড়া আমদানিকারকরা বড় অর্ডার দেওয়া শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি স্থানীয় শিল্পের সবার সমানভাবে বাড়েনি।

রেনাটা লিমিটেডের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ম্যানেজার অনন্ত সাহা বলেন, কাঁচামালের আমদানি মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও এ বছর তারা কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছেন।

তিনি আরও বলেন, 'যদিও আমরা গত পাঁচ মাসে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারিনি, তবে বর্তমান প্রবৃদ্ধির হার টেকসই।'

অনন্ত সাহা আরও বলেন, প্রায় সব শীর্ষস্থানীয় ওষুধ রপ্তানিকারক বিশ্ববাজারে রপ্তানি বাড়াতে বিদেশি ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার জন্য কাজ করছে।

তবে রপ্তানি বাড়লেও মার্কিন ডলারের উচ্চমূল্য ও কাঁচামাল আমদানি ব্যয় বাড়ায় দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোর মুনাফার মার্জিন কমেছে বলে জানান তিনি।

তার ভাষ্য, 'ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নে উৎপাদন খরচ বাড়লেও উৎপাদনকারীরা তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে পারেনি।'

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় চাহিদার ৯৮ শতাংশ মেটানোর পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকাসহ অন্তত ১৫১টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English

Can't afford another lost decade for education

Whenever the issue of education surfaces in Bangladesh, policymakers across the political spectrum tend to strike a familiar chord. "Education is our top priority," they harp

2h ago