অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণী হত্যায় স্বামীর ২১ বছরের দণ্ড

আর্নিমা হায়াত ও মেরাজ জাফর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১৯ বছর বয়সী আর্নিমা হায়াতকে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী মেরাজ জাফরকে ২১ বছর ৬ মাসের সাজা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সুপ্রিম কোর্ট। মেরাজ পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান।

গত বৃহস্পতিবার এই সাজার রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি ডেবোরা সুইনি। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আর্নিমার মা-বাবাসহ কমিউনিটির বেশ কয়েকজন সামাজিক সংগঠক।

হত্যাকারী ২৩ বছর বয়সী মেরাজ জাফর ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আদালতে হাজির হন।

রায় শোনার পর আদালতের চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আর্নিমার বাবা-মা। বাবা আবু হায়াত বলেছেন, আমি যে মুখের সঙ্গে কথা বলতাম এবং প্রতি রাতে চুম্বন করতাম সেটি জাফর পুড়িয়ে ফেলেছিল। আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে, কেউ আপনার সন্তানকে পোড়াচ্ছে? আমি তাকে আর কখনো দেখতে পাবো না।'

আর্নিমার মা মাহফুজা আক্তার সাজা ঘোষণার সময় আদালতের মেঝেতে কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আর কোনদিন তার মেয়ের চুল স্পর্শ করতে পারবেন না বলে মেয়ের কবরের ঘাস স্পর্শ করেন তিনি।

পুলিশের তদন্ত ও আদালতের রায় থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাতে সিডনির  উত্তর প্যারামাট্টার একটি ইউনিটের মধ্যে যখন আর্নিমা হায়াতকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় তখন তিনি গর্ভবতী ছিলেন। আর্নিমা স্বামী মেরাজ জাফরকে ছেড়ে যেতে চেয়েছিলেন।

পুলিশের উদ্ধার করা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হত্যার পরদিন জাফর একটি ট্রাক নিয়ে বানিংস নর্থমিডে গিয়ে দুটি ট্রিপে ২০ লিটার অ্যাসিডের টব কেনেন, যা তিনি আর্নিমার দেহাবশেষ নিশ্চিহ্ন করার জন্য বাথটবে ঢেলেছিলেন। হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ভর্তি বাথটাবে আর্নিমার দেহ গলে যাওয়ার কারণে তার পরিবার আর্নিমাকে শনাক্ত করতে পারেননি। পরে ডিএনএ নমুনা ব্যবহার করে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনা করা আর্নিমা পরিবারের অনুমতি ছাড়া ২০২১ সালের অক্টোবরে বিয়ে করেন জাফরকে। বিয়ের পর থেকেই জাফর আর্নিমার সঙ্গে সহিংস আচরণ শুরু করেন।

বিচারপতি ডেবোরা সুইনি বিচারের রায়ে বলেছেন, যে বাসায় আর্নিমা হায়াতের সব থেকে নিরাপদে থাকার অধিকার ছিল সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়।'

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

7h ago