আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আবার অবসরের ঘোষণা তামিমের

Tamim Iqbal
তামিম ইকবাল। ছবি: স্টার

২০২৩ সালের ৬ জুলাইতে আচমকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন তামিম ইকবাল। পরদিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন তারকা বাঁহাতি ওপেনার। দেড় বছরের ব্যবধানে আবার বাংলাদেশ জাতীয় দল থেকে একেবারে সরে দাঁড়ালেন তিনি।

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের স্বীকৃত পেজে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তামিম।

নানা নাটকীয় কাণ্ডে অনেক দিন থেকেই জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন তামিম। ফেরার গুঞ্জন থাকলেও তা আর হয়ে ওঠেনি। তবে গত কিছুদিন ফের সেই আলোচনা চলছিল। আসন্ন আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের স্কোয়াডে ৩৫ বছর বয়সী ক্রিকেটারের থাকার জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়। ফরচুন বরিশালের হয়ে চলমান বিপিএলে খেলতে থাকা তামিমের সঙ্গে গত বুধবার আলোচনা করেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। সেই আলোচনাতেও চূড়ান্ত কিছু উঠে আসেনি। লিপু জানান, পরিবার, শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রিয় কোচের সঙ্গে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নিবেন তামিম। এরপর দুই দিনের মধ্যে বিদায়ের ডাক দিয়েছেন বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ওপেনার।

বাংলাদেশের জার্সিতে তামিমকে শেষবার দেখা গেছে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে, মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে। এরপর চরম নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ভারতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের দলে সুযোগ মেলেনি তার। সেই থেকে বিভিন্ন কারণে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আর খেলেননি তিনি। টি-টোয়েন্টি থেকে তামিম অবসর নিয়েছিলেন অবশ্য আগেই, ২০২২ সালের জুলাইতে। এবার টেস্ট আর ওয়ানডে থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

তামিমের বিদায়ী স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য: 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি অনেক দিন ধরেই। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ।

অনেক দিন ধরেই এটা নিয়ে ভাবছিলাম। এখন যেহেতু সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় একটি আসর সামনে, আমি চাই না আমাকে ঘিরে আবার অলোচনা হোক এবং দলের মনোযোগ ব্যাহত হোক।

এটা অবশ্য আগেও চাইনি। চাইনি বলেই অনেক আগে নিজেকে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছি। যদিও অনেকেই বলেছেন, অনেক সময় মিডিয়ায় এসেছে, আমিই নাকি ব্যাপারটি ঝুলিয়ে রেখেছি। কিন্তু বিসিবির কোনো ধরনের চুক্তিতে যে নেই, এক বছরের বেশি সময় আগে যে নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে, তাকে পরিকল্পনায় রাখা বা তাকে নিয়ে আলোচনারও তো কিছু নেই। তারপরও অযথা আলোচনা হয়েছে। অবসর নেওয়া বা খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত একজন ক্রিকেটার বা যে কোনো পেশাদার ক্রীড়াবিদের নিজের অধিকার। আমি নিজেকে সময় দিয়েছি। এখন মনে হয়েছে, সময়টা এসে গেছে।

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আন্তরিকভাবেই আমাকে ফেরার জন্য বলেছে। নির্বাচক কমিটির সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। আমাকে এখনও উপযুক্ত মনে করার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তবে আমি নিজের মনের কথা শুনেছি।

২০২৩ বিশ্বকাপের আগে যা হয়েছে, আমার জন্য তা বড় ধাক্কা ছিল, যেহেতু ক্রিকেটীয় কারণে আমি দলের বাইরে যাইনি। তারপরও আমি যেখানেই গিয়েছি, ক্রিকেট ভক্তদের অনেকে বলেছেন, আমাকে আবার জাতীয় দলে দেখতে চান। তাদের ভালোবাসার কথা ভেবেছি আমি। আমার ঘরেও একজন অনুরাগী আছে। আমার ছেলে কখনও আমাকে সরাসরি বলেনি, কিন্তু তার মাকে বারবার বলেছে, বাবাকে আবার দেশের জার্সিতে খেলতে দেখতে চায়।

ভক্তদের হতাশ করার জন্য আমি দুঃখিত। ছেলেকে বলছি, "তুমি যেদিন বড় হবে, সেদিন বাবাকে বুঝতে পারবে।"'

Comments

The Daily Star  | English

Thousands of crores of taka of citizens wasted on unnecessary projects: Commerce Adviser

The adviser, however, added that liabilities of foreign-funded projects should still be repaid

26m ago