জাকির-রনির ফিফটিতে সিলেটের টানা দ্বিতীয় জয়

ছবি: সংগৃহীত

দ্রুত ২ উইকেটের পতনের পর বড় জুটি গড়লেন রনি তালুকদার ও জাকির হাসান। মন্থর রানের চাকায় দম দিয়ে দুজনই তুলে নিলেন হাফসেঞ্চুরি। বিশেষ করে, ছন্দে থাকা জাকির আরও একবার ব্যাট হাতে তুললেন ঝড়। এতে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেল সিলেট স্ট্রাইকার্স। এরপর খুলনা টাইগার্স রোমাঞ্চ তৈরি করলেও তাদের থামতে হলো লক্ষ্য থেকে দূরে।

রোববার বিপিএলে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ৮ রানে জিতেছে সিলেট। টানা তিন হার দিয়ে আসর শুরুর পর তারা পেল টানা দ্বিতীয় জয়। তাদের ৫ উইকেটে ১৮২ রানের জবাবে ৯ উইকেটে ১৭৪ রানে থামা খুলনার টানা দুই জয়ের পর মিলল টানা দ্বিতীয় হার।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৯ রান দরকার ছিল শেষদিকে লড়াইয়ে ফেরা খুলনার। ক্রিজে আশার আলো হয়ে ছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও আবু হায়দার রনি। রুয়েল মিয়ার প্রথম বলে অঙ্কন সিঙ্গেল নেওয়ার পর টানা দুটি চার মারেন আবু হায়দার। সমীকরণ নেমে আসে ৩ বলে ১০ রানে। তবে স্নায়ুচাপ সামলে ঝলক দেখান রুয়েল। চতুর্থ বলে আবু হায়দার ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানার কাছে তানজিম হাসান সাকিবের হাতে ধরা পড়লে উল্লাসে মেতে ওঠে সিলেট। তাদের জয় নিশ্চিত হয়ে যায় পরের বলে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা মাহিদুল রানআউট হলে। নাসুম আহমেদ শেষ বলে সিঙ্গেলের বেশি নিতে পারেননি।

এখন পর্যন্ত এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক জাকির জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। টানা দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে তৃতীয় ফিফটির দেখা পান তিনি। তিনে নেমে ৪৬ বল মোকাবিলায় তিনি করেন অপরাজিত ৭৫ রান। তার ব্যাট থেকে আসে তিনটি চার ও ছয়টি ছক্কা। ওপেনার রনি ৪৪ বলে পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কার সাহায্যে খেলেন ৫৬ রানের ইনিংস। তৃতীয় উইকেটে জাকিরের সঙ্গে তার আক্রমণাত্মক জুটিতে আসে ৬২ বলে ১০৬ রান।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেটের শুরুটা ছিল বাজে। পঞ্চম ওভারে দলীয় ১৫ রানের মধ্যে বিদায় নেন রাকিম কর্নওয়াল ও জর্জ মানজি। সেই ধাক্কা দ্রুত সামলে নেয় দলটি। ছক্কার ভেলায় চড়ে জাকির ফিফটিতে পৌঁছান ২৯ বলে। এরপর রনি হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ৩৯ বলে। দুজনের জুটির পঞ্চাশ আসে ৩৪ বলে। এরপর রান তোলার গতি আরও বাড়ে। ৫৯ বলে পূর্ণ হয় জুটির শতরান। রনি সাজঘরে ফিরে গেলেও জাকিরকে আউট করতে পারেনি খুলনা।

শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে শেষদিকে ঝড় তোলেন অ্যারন জোন্স ও সিলেটের অধিনায়ক আরিফুল হক। আমেরিকান জোন্স ৬ বলে ২০ রান করতে মারেন তিনটি ছক্কা। আরিফুল ১৩ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। খুলনার পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন আবু হায়দার রনি ও জিয়াউর রহমান। ভীষণ খরুচে ছিলেন তাদের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ৪ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন তিনি।

লক্ষ্য তাড়ায় পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তুলতে ৩ উইকেট খোয়ায় খুলনা। এরপর একপ্রান্ত আগলে থাকা উইলিয়াম বোসিস্টো ও মিরাজ ৩৪ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়লেও লেগে যায় ৩৩ বল। মিরাজ ফেরেন একটি চারে ১৪ বলে ১৫ রান করে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার বোসিস্টো পাঁচটি চারের সাহায্যে ৪০ বলে ৪৩ রানে আউট হন।

১৪ ওভার শেষে খুলনার সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ১০০ রান। তারা তখন বেকায়দায়। ম্যাচের ভাগ্য হেলে ছিল সিলেটের দিকে। এরপর ধীরে ধীরে তৈরি হয় রোমাঞ্চ। তবে শেষ ৬ ওভারে ৭৪ রান তুলেও ফল নিজেদের দিকে নিতে পারেনি খুলনা।

প্রথমে ঝড় তোলেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ নওয়াজ। ষষ্ঠ উইকেটে মাহিদুলের সঙ্গে ১৭ বলে ৩২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ১৮ বলে তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৩ রান করা নওয়াজকে বিদায় করে বুনো উল্লাস করেন তানজিম হাসান সাকিব। ওই আউটের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কিও হয়। তানজিমের ঠিক আগের ওভারেই ছক্কা-চার মেরেছিলেন নওয়াজ।

এরপর মাহিদুল ও আবু হায়দার চেষ্টা চালান। কিন্তু তাদেরকে শেষমেশ হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়। মাহিদুল ১৬ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ২৮ রান করেন। আবু হায়দার ৬ বলে তিনটি চারে করেন ১৪ রান। সিলেটের পক্ষে দুটি করে শিকার ধরেন রুয়েল, তানজিম ও রিস টপলি।

Comments

The Daily Star  | English

Chambers warn budget measures will hurt business, investment

Leading business chambers expressed significant concern

24m ago