কুয়েটে সংঘর্ষ: দোষীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আগামী ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে ছাত্র সংগঠনটি এই আল্টিমেটাম দেয়।
ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নিয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এদিন বিকেলে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৪০-৪৫ শিক্ষার্থী আহত হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আরিফ সোহেল বলেন, 'আমরা যে নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম তা ফিরে এসেছে। এই নিষ্ঠুরতা আমাদের সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন এ দেশের মানুষকে নানা অজুহাতে নির্যাতন করা হতো।'
অন্যদিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে কিছুটা দূরে বিক্ষোভ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও কুয়েটে আজকের হামলার ভিডিওগুলো আগামীকাল সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রদর্শন করার ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকেল ৩টায় ভিডিও প্রদর্শনী শুরু হবে এবং সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে একই সময়ে প্রচার করা হবে।'
হামলাকারীদের বিচার দাবি করে সংগঠনটির নির্বাহী সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, 'আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।'

এদিকে কুয়েটে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিক্ষার্থীরা।
রাত পৌনে ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে দিতে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন।
সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, 'ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করে এমন ছাত্র রাজনীতি আমরা চাই না। আজ কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলা, ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের মতোই। আমরা এটা সহ্য করব না। এজন্য আমরা প্রতিবাদ করছি।'
রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ হয়।

কুয়েটে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে শাঁখারীবাজার মোড় ও ভিক্টোরিয়া পার্ক হয়ে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।
একজন বিক্ষোভকারী বলেন, 'সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আমরা ছাত্র রাজনীতির সংস্কার আশা করেছিলাম, কিন্তু তা দেখছি না। ছাত্রদের ওপর হামলা হলে আমরা চুপ থাকব না।'
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, 'আমরা কখনই চাইনি ছাত্র রাজনীতিতে বয়স্ক নেতাদের আধিপত্য থাকুক, যারা ছাত্রদের চাহিদা বোঝেন না। ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হওয়া উচিত না।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা ছাত্র রাজনীতিতে অবিলম্বে সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'সরকার অনেকগুলো কমিশন গঠন করেছে—এখন সময় এসেছে ছাত্র রাজনীতি সংস্কারে কমিশন গঠন করার।'
Comments