অস্ট্রেলিয়ায় আটকে পড়া ৯০ তিমিকে হত্যার সিদ্ধান্ত

তাসমানিয়ার সমুদ্রতটে আটকে পড়া ফলস কিলার হোয়েল। ছবি: সংগৃহীত
তাসমানিয়ার সমুদ্রতটে আটকে পড়া ফলস কিলার হোয়েল। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার ওয়াইল্ডলাইফ কর্মকর্তারা এক কঠিন ও নির্মম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাসমানিয়ার উপকূলের এক দুর্গম সাগর তীরে আটকে পড়া ৯০ তিমিকে মেরে ফেলার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছেন তারা।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।

মূলত উত্তাল সমুদ্র, ঝড়ো হাওয়া ও সার্বিকভাবে বৈরি পরিবেশের কারণে ওই তিমিগুলোকে উদ্ধার করে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে, প্রাণিকল্যাণ কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত নেন।

তাসমানিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ বিভাগের তথ্য বলছে—এই দ্বীপের পশ্চিম তীরের আর্থার নদীর কাছে গত মঙ্গলবার নাগাদ ১৫০টিরও বেশি তিমিকে আটকে থাকতে দেখা যায়।

তাসমানিয়ার সমুদ্রতটে আটকে পড়া ফলস কিলার হোয়েল। ছবি: সংগৃহীত
তাসমানিয়ার সমুদ্রতটে আটকে পড়া ফলস কিলার হোয়েল। ছবি: সংগৃহীত

পরদিন সকালে ৯০ তিমিকে জীবিত খুঁজে পাওয়া যায়। দুই তিমিকে উদ্ধারকারীরা কোনোমতে সাগরে ফেরত পাঠালেও হঠাৎ সাগর উত্তাল হয়ে উঠে। প্রবল বাতাসে সেগুলো উপকূলে ফিরে এসে আবারও আটকা পড়ে।

তাসমানিয়া পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের কর্মকর্তা শেলি গ্রাহাম বলেন, 'ব্যাপারটা খুবই ঝামেলার। তিমিগুলো সাগরে ফিরতে পারছে না। বারবার সাগর তীরে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছে।'

আকাশ থেকে তোলা ছবিতে দেখা যায়, তিমিগুলো সাগর তীরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। কয়েকটি তিমির অর্ধেক শরীর বালুতে ঢাকা পড়েছে। বাকিগুলোকে উপকূলের পাথুরে অংশের অগভীর পানিতে আটকে থাকতে দেখা যায়।

এই তিমিগুলো কিলার হোয়েল গোত্রের।

ফলস কিলার হোয়েলের (মিথ্যা ঘাতক তিমি) নামের সঙ্গে হোয়েল বা তিমি শব্দটি থাকলেও এরা ডলফিন প্রজাতির। সর্বশেষ তাসমানিয়ায় ৫০ বছর আগে ১৬০ থেকে ১৭০ তিমিকে ব্ল্যাক রিভার উপকূলে আটকে থাকতে দেখা যায়। তবে কিলার হোয়েল বা অর্কার মতো এই প্রাণীগুলো তিমি হিসেবেই বিবেচিত।

কষ্ট কমাতেই হত্যা

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রাণীগুলোর কষ্ট কমাতেই তাদেরকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েক ঘণ্টা সাগর তীরে আটকে থেকে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে আগে যন্ত্র ব্যবহার করে আটকে পড়া তিমিদের নির্জন এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এরপর তাদেরকে স্থিতিশীল করে আবারো পানিতে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ক্ষেত্রে ওই দুর্গম এলাকায় সময়মতো যন্ত্র পাঠানো সম্ভব হবে না বলে জানান তাসমানিয়া পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা ব্রেনডন ক্লার্ক।

তাসমানিয়ার সমুদ্রতটে আটকে পড়া ফলস কিলার হোয়েল। ছবি: সংগৃহীত
তাসমানিয়ার সমুদ্রতটে আটকে পড়া ফলস কিলার হোয়েল। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, 'নিরাপত্তার জন্য এলাকাবাসীদের ওই উপকূল এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। একেকটি তিমির ওজন ৫০০ কেজি থেকে শুরু করে তিন টন পর্যন্ত।

তাসমানিয়ায় তিমি শিকার ও হত্যা নিষিদ্ধ। এমনকি, কোনো তিমি প্রাকৃতিক কারণে মারা গেলেও এর দেহ ছোঁয়ার নিয়ম নেই। এ ধরনের আচরণ ঠেকাতে কঠোর আইন করা হয়েছে।

প্রাণী বিশারদ ও সমুদ্র বিজ্ঞানীরা জানান, উপকূলে আটকে পড়া তিমিদের বেঁচে থাকার হার খুবই কম।

আটকে পড়া তিমিরা সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টা সুস্থ থাকতে পারে বলেও জানান তারা।

Comments

The Daily Star  | English
Rethinking policing in Bangladesh

From force to service: Rethinking policing in Bangladesh

Reform requires transforming the very meaning of policing in a democratic republic from an authoritarian order.

5h ago