বেনফিকার মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরল ১০ জনের বার্সা

বেনফিকার মাঠে ম্যাচের প্রায় শুরুতেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় বার্সেলোনা। তবে এক জন কম নিয়ে দারুণ লড়াই করে দলটি। প্রতিপক্ষের ভুলে একটি গোলও পেয়ে যায় ব্লুগ্রানারা। রক্ষণ এরপর রক্ষণ জমাট রাখতে পারায় শেষ পর্যন্ত সেই গোলই গড়ে দেয় ম্যাচের পার্থক্য। দারুণ এক জয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলো কাতালান দলটি।

বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচে বেনফিকাকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনিয়া।

মাস দেড়েক আগের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের মতোই দা লুজ আবারও রণক্ষেত্রে পরিণত হয়, তবে এবারও শেষটা বার্সার জন্য সুখকর। বেনফিকার এই মাঠ থেকেই পাগলাটে এক ম্যাচে শেষ দিকে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ৫-৪ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছিল কাতালানরা। সেই ম্যাচের প্রেরণাতেই যেন উজ্জীবিত ছিল দলটি। 

তবে ম্যাচটি যেন শুরুতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল বার্সেলোনাকে। মোনাকোর বিপক্ষে একাদশ মিনিটেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছিলেন এরিক গার্সিয়া। যার জেরে ম্যাচটি তারা হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। আসরে যা দলটির একমাত্র হারও। এদিনও ২২তম মিনিটেই পাউ কুবারসি লাল কার্ড দেখেন। তবে রক্ষণ জমাট রাখতে পারায় কোনো বিপদ হয়নি।

তবে এর প্রায় সবই সম্ভব হয়েছে বার্সা গোলরক্ষক বয়েচেক শেজনির দক্ষতায়। নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন এই গোলরক্ষক। ম্যাচের ২০ সেকেন্ডের মাথায় নিশ্চিত একটি গোল বাঁচান। আক্তুরকোগলুর ক্রস শট দুর্দান্তভাবে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান। তখনই জানান দেন যে, দিনটি তার হতে চলেছে।

পরে কুবারসি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর, বারেইরোর আরেকটি শটও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন শেজনি, যদিও সেটি অফসাইড ছিল। কোকসুর নেওয়া ফ্রি কিক দারুণভাবে ঠেকান এবং বিরতির ঠিক আগে, অবিশ্বাস্য প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আক্তুরকোগলুর একেবারে কাছের দূরত্বের হেডও প্রতিহত করেন। আতশবাজির আলো, রকেটের শব্দ কিংবা ধোঁয়ার আস্তরণ— কোনো কিছুই বিভ্রান্ত করতে পারেনি তাকে।

বিরতির পরও, দক্ষতা দেখিয়ে যান। বিশেষ করে, ম্যাচ শেষের দিকে বক্সের সীমানা থেকে রেনাতোর নেওয়া জোরালো শট ঠেকানো ছিল এক অনন্য মুহূর্ত। বেনফিকার হতাশা তখন চরমে পৌঁছে যায়। মোট ৭টি দুর্দান্ত সেভ যা ম্যাচের চিত্র বদলে দেয়। ৭টি অসাধারণ সেভ!

হ্যান্সি ফ্লিক এদিন প্রত্যাশিত একাদশই নামান। মিডফিল্ডে ডি ইয়ং ও আক্রমণভাগে দানি ওলমো খেলেন, যদিও জ্বরের কারণে খেলেননি গাভি। বেনফিকার হয়ে দাহলের জায়গায় মিডফিল্ডে নামানো হয় লিয়ান্দ্রো বারেইরোকে। তবে ম্যাচের শুরুটা দারুণ করেছিল তারা। শেজনি অতিমানবীয় না হলে ২০ সেকেন্ডেই গোল পেতে পারতো বেনফিকা।

ধীরে ধীরে লম্বা পাসিংয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্সেলোনা। দানি ওলমোর দুর্দান্ত একটি শট অল্পের জন্য বাইরে যায়। এরপর অবিশ্বাস্য এক মুহূর্ত আসে, যখন ছোট ডি-বক্সের মধ্যে দানি ওলমো, রবার্ট লেভাননদোভস্কি ও লামিন ইয়ামালের তিনটি টানা শট গোললাইনে আটকে যায়।

বার্সার হাই লাইন রক্ষণের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে কাউন্টার অ্যাটাক শুরু করে বেনফিকা। একটি আক্রমণে ডি ইয়ংকে ঠেলে ফেলে এগিয়ে যান পাভলিদিস, তবে কুবারসি তাকে রুখতে গিয়ে ফাউল করলে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন। পরে রক্ষণ ধরে রাখতে ওলমোকে তুলে নিয়ে আরাহোকে নামান ফ্লিক।

১০ জনের দল নিয়েই ঘুরে দাঁড়ায় বার্সা। রাফিনহা আরেকটু নিখুঁত হতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো আগেই। তার কয়েকটি প্রচেষ্টা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও প্রতিপক্ষকে চাপে রাখে। দ্বিতীয়ার্ধে পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনায় লামিনের জায়গায় ফেরানকে নামান ফ্লিক এবং কৌশল সফল হয়। আন্তোনিও সিলভার ভুল পাস রাফিনিয়া ছিনিয়ে নিয়ে অসাধারণ শটে ৬১তম মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন, যা শেষ পর্যন্ত জয়সূচক গোলে পরিণত হয়।

Comments

The Daily Star  | English
US wants Bangladesh trade plan,

Reducing US trade GAP: Dhaka turns to Boeing, wheat imports

Bangladeshi officials are preparing for a third round of talks in Washington next week

11h ago