গেম অব থ্রোনসের বিলুপ্ত ‘ডায়ার উলফ’ ফিরিয়ে আনলেন বিজ্ঞানীরা

কলোসালের তৈরি ৬ মাস বয়সী ডায়ার নেকড়ের ছানা। ছবি: সংগৃহীত

গেম অব থ্রোনস-এ স্টার্ক পরিবারের সন্তানদের প্রহরী হিসেবে পরিচিত প্রাগৈতিহাসিক ডায়ার উলফ বা ডায়ার নেকড়ে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল প্রায় ১২ হাজার বছর আগে। 

সর্বশেষ বরফ যুগ থেকে বিলুপ্ত এই প্রাণীকে ফিরিয়ে এনেছেন বিজ্ঞানীরা। 

ডি-এক্সটিংকশন বা বিলুপ্ত প্রাণীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার কাজ করা মার্কিন জৈবপ্রযুক্তি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি কলসাল এই অসাধ্য সাধন করেছে।  

সিএনএনসহ একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এটিই বিশ্বের প্রথম সফল ডি-এক্সটিংকশন বা বিলুপ্ত প্রাণী ফিরে আসার দৃষ্টান্ত।

রোমুলাস ও রেমাস নামের দুই ছেলে নেকড়ে ছানা। ছবি: সংগৃহীত

গতকাল সোমবার কলসাল জানায়, প্রাচীন ডিএনএ সংগ্রহ করে, ক্লোনিং এবং জিন-সম্পাদনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিনটি ডায়ার নেকড়ে ছানা তৈরি করেছে তারা। এতে ডায়ার নেকড়ের সবচেয়ে কাছাকাছি (বিবর্তিত) টিকে থাকা জাত ধূসর নেকড়ে বা গ্রে উলফের জিন পরিবর্তন করে ব্যবহার করা হয়েছে।

ফলাফল হিসেবে একটি সংকর প্রজাতির নেকড়ের জন্ম হয়েছে, যা দেখতে বিলুপ্ত ডায়ার নেকড়ের মতোই।

ডায়ার নেকড়ে ছিল উত্তর আমেরিকার এক সময়কার শীর্ষ শিকারী প্রাণী। তারা আকারে সাধারণ ধূসর নেকড়ের চেয়ে বড়, মাথা অপেক্ষাকৃত চওড়া, পাতলা ও ঘন লোমের অধিকারী ছিল। 

২০২১ সাল প্রতিষ্ঠিত কলসাল শুরু থেকেই প্রাগৈতিহাসিক ম্যামথ, উড়তে না জানা ডোডো পাখি ও ওশেনিয়া অঞ্চলের শিকারি প্রাণী তাসমানিয়ান বাঘকে পুনর্জীবিত করার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে।

ডায়ার নেকড়ে নিয়ে তাদের এই কাজ আগে প্রকাশ্যে আনেনি কোম্পানিটি।

কলসালের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বেন ল্যাম এক বিবৃতিতে বলেন, 'এটি একটি বিশাল অর্জন। প্রথমবারের মতো আমাদের "ডি-এক্সটিংশন" প্রযুক্তির কার্যকারিতা প্রমাণিত হলো। আমাদের গবেষক দল ১৩ হাজার বছরের পুরোনো একটি দাঁত ও ৭২ হাজার বছর আগের এক খুলি থেকে ডিএনএ নিয়ে সুস্থ ডায়ার নেকড়ে ছানা তৈরি করেছে।'

তিন ডায়ার নেকড়ে ছানার নাম রাখা হয়েছে রোমুলাস, রেমাস ও খালেসি। এদের মধ্যে রেমাস জায়গা করে নিয়েছে টাইম ম্যাগাজিনের সর্বশেষ কভারে। 

কলসাল এদের ডায়ার নেকড়ে বলে আসলেও অনেক প্রাণিবিজ্ঞানীই এ ব্যাপারে একমত না। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিংহভাগ বিশ্লেষকই বলছেন, এগুলো কেবল 'জিন বদলানো ধূসর নেকড়ে'।  

নিউজিল্যান্ডের ওতাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিওজেনেটিসিস্ট ড. নিক রলেন্সের মতে, 'কলসাল আসলে কয়েকটা ধূসর নেকড়ে তৈরি করেছে, তবে তাদের মধ্যে ডায়ার নেকড়ের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন, তাদের খুলি বড় এবং পশম সাদা। এরা আসলে হাইব্রিড।'

এই তিন নেকড়ে ছানা এখন দুই হাজার একরের একটি সুরক্ষিত এলাকায় বাস করছে, যার অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে। এলাকাটিকে 'চিড়িয়াখানা মানের' ১০ ফুট উঁচু বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। তাদের সুরক্ষার জন্য নিরাপত্তা রক্ষী, ড্রোন ও সরাসরি ক্যামেরা নজরদারির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

Comments

The Daily Star  | English

Tribute to July uprising: Drone show lights up Dhaka's sky

In 12 vivid motifs, the July uprising came alive, tracing the heroism of Abu Sayed and the stirring role of women in the movement

6h ago