এসএসসি পরীক্ষা: শ্রুতিলেখক না থাকায় চট্টগ্রামে সাদা খাতা জমা দিলেন ৭ শিক্ষার্থী

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার প্রথম দিন শ্রুতিলেখক না থাকায় সাদা খাতা জমা দিয়েছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাত শিক্ষার্থী।

অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শ্রুতিলেখক অনুমোদন করা সম্ভব হয়নি।

তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় শ্রুতিলেখক অনুমোদন করা হয়নি।

সাত শিক্ষার্থী হলেন—হাবিবুল হক রাতুল, মিনহাজ উদ্দিন, মারুফুর রহমান, রূপসা খানম, অপু দত্ত, লাকী আক্তার ও খায়রুল ইসলাম। তারা সবাই নগরীর হামজারবাগ এলাকার রহমানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

তাদের পরীক্ষার কেন্দ্র ওয়াসা মোড় এলাকার বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রে কিছু সময় বসে থাকার পর তারা বেরিয়ে আসেন। পরে অভিভাবকরা তাদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান।

শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তা জানান, শ্রুতিলেখক নিয়োগের নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে, এসএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে শ্রুতিলেখককে সর্বোচ্চ অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া হতে হবে এবং বয়স হতে হবে ১৮ বছরের নিচে।

কিন্তু ওই সাতজন যাদের শ্রুতিলেখক হিসেবে ঠিক করেছিলেন, তারা উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। যে কারণে তাদের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যমজ ভাই-বোন রূপসা খানম ও মো. মারুফের অভিভাবক মো. জসিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শ্রুতিলেখক অষ্টম শ্রেণি কিংবা এর নিচের ক্লাসের শিক্ষার্থী হতে হবে, এটা আমাদের জানা ছিল না। আমার স্ত্রী এবং বড় ছেলে স্কুলে নিয়মিত যায়। এ ব্যাপারে তাদের আগে কিছুই বলা হয়নি। শেষ মুহূর্তে এসে নিয়মের কথা বলে আমাদের বিপদে ফেলে দেওয়া হয়েছে।'

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জেবুন নিছা খানম বলেন, 'তারা (পরীক্ষার্থী) এক সপ্তাহ ধরে আমাদের জানিয়েছে যে, শ্রুতিলেখক হিসেবে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ঠিক করেছে। কিন্তু আমাদের সামনে আনেনি। আমরা বারবার বলার পরেও তারা আনেনি। শেষে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে কলেজপড়ুয়া ছাত্র নিয়ে আসছে।'

'আমি যাচাই-বাছাই করে দেখি, শ্রুতিলেখকরা কলেজের ছাত্র। তাই অনুমোদন দেইনি। কাল রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি, তারা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আনতে পারেনি। আমরা বোর্ডে যোগাযোগ করেছি। বোর্ড থেকে বলা হয়েছে, নিয়মের বাহিরে কিছু করা যাবে না,' যোগ করেন তিনি।

জেবুন নিছা আরও বলেন, 'এই সাতজন আমাদের বিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। কিন্তু আমরা তো নিয়মের বাহিরে কিছু করতে পারি না।'

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, 'শ্রুতিলেখক হিসেবে যাদের নেওয়া হয়েছিল, তাদের কেউ কেউ ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র ছিল। নীতিমালার বাইরে তো আমরা বিষয়টি অনুমোদন করতে পারি না। এছাড়া অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নের ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা ছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Air purifiers for Dhaka: hope or hype?

DNCC to set up 25-30 such industrial devices in public places to curb pollution; experts skeptical

18h ago