'ইউক্রেন যুদ্ধে লাখো মানুষের মৃত্যুর জন্য ৩ ব্যক্তি দায়ী'

হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ শুরুর জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আবারও দায় দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আজ মঙ্গলবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

এর একদিন আগেই সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় রুশ হামলায় ইউক্রেনে ৩৫ জন নিহত ও ১১৭ জন আহত হয়েছেন।

পুতিন একা নন, জেলেনস্কি-বাইডেনও দায়ী

জো বাইডেন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি। ফাইল ছবি: রয়টার্স
জো বাইডেন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি। ফাইল ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, ইউক্রেন যুদ্ধে 'কয়েক মিলিয়ন মানুষের প্রাণহানির' জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাশাপাশি জেলেনস্কিও দায় এড়াতে পারবেন না।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প মন্তব্য করেন, 'আপনার চেয়ে ২০ গুণেরও বেশি ক্ষমতাধর একটি শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করে আপনি আশা করতে পারেন না যে অন্যেরা আপনাকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সহায়তা করতেই থাকবে।'

তিনি এই সংঘাতের জন্য তার পূর্বসূরি জো বাইডেনকেও দায়ী করেছেন।

রুশ হামলা নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য

গত রোববার ইউক্রেনের সুমি শহরে রুশ হামলার পর বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে। এটাই চলতি বছরে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় হামলা।

এই হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প জানান, এটা 'মর্মান্তিক' এবং এ ক্ষেত্রে রাশিয়া 'ভুল করেছে'। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

তিন ব্যক্তির কারণে লাখো মানুষ নিহত

ট্রাম্প মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য এই তিনজনই দায়ী। ছবি: কোলাজ
ট্রাম্প মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য এই তিনজনই দায়ী। ছবি: কোলাজ

গতকাল সোমবার ট্রাম্প বলেন, 'মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের মৃত্যুর জন্য তিন ব্যক্তি দায়ী।'

'ধরুন পুতিন তালিকার এক নম্বরে। বাইডেন, যার কোনো ধারণাই ছিল না সে কী করছে, তিনি আছেন দুই নম্বরে। এবং পরের নামটাই জেলেনস্কির,' যোগ করেন তিনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে 'মিলিয়ন' (দশ লাখ) নয়, বরং উভয় পক্ষ মিলিয়ে কয়েক লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে।

আহত-নিহতের সংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে। প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য নেই।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের নেতা 'সবসময় ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য মুখিয়ে থাকেন।'

তিনি আরও বলেন, 'যখন আপনি যুদ্ধ শুরু করবেন, তখন আপনাকে জানতে হবে যে আপনি এতে জয়ী হতে পারবেন কী না।'

জেলেনস্কি-ট্রাম্প সম্পর্ক

হোয়াইট হাউসের সেই বৈঠকে ট্রাম্প-জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউসের সেই বৈঠকে ট্রাম্প-জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি

এ বছর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জেলেনস্কির সঙ্গে রেষারেষি চলছে ট্রাম্পের। এর আগেও তিনি ইউক্রেনকে এই যুদ্ধ শুরুর দায় দিয়েছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে দুই প্রেসিডেন্টের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। সে সময় দুই পক্ষের মধ্যে প্রস্তাবিত খনিজ সম্পদ চুক্তিও ভেস্তে যায়।

ওই বৈঠকে ট্রাম্প জেলেনস্কির বিরুদ্ধে 'তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলার' অভিযোগ আনেন এবং এরও আগে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি-আলোচনা শুরু না করার জন্য তাকে ভর্ৎসনা করেন।

মস্কো-ওয়াশিংটন সম্পর্ক

অপরদিকে, ট্রাম্প তার মেয়াদের শুরু থেকেই মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

গত শুক্রবার মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ সেইন্ট পিটার্সবার্গে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা ওই বৈঠকে 'ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'

ট্রাম্পকে ইউক্রেনে আসার আমন্ত্রণ

ইউক্রেনের সুমি শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরের দৃশ্য। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের সুমি শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরের দৃশ্য। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার সর্বশেষ হামলার আগে জেলেনস্কি ট্রাম্পকে ইউক্রেন সফরের আমন্ত্রণ জানান। পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি চূড়ান্ত করার আগেই যেন তিনি আসেন, এ বিষয়টির ওপর জোর দেন জেলেনস্কি।

সিবিএস'র সিক্সটি মিনিটস অনুষ্ঠানে জেলেনস্কি বলেন, 'দয়া করে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া বা দরকষাকষির আগে আমাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া হাসপাতাল ও গির্জা এবং হতাহত মানুষ, যোদ্ধা ও শিশুদের দেখে যান।'

ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি 'হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে চান' এবং খুব শিগগির কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আনার আভাস দেন। তবে বিস্তারিত জানাননি তিনি।

২০১৪ সাল থেকে প্রতিবেশী ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

সে সময় ইউক্রেনের রুশপন্থি প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় এবং পূর্ব ইউক্রেনে বিদ্রোহীদের সমর্থন দিতে শুরু করে।

Comments

The Daily Star  | English

Disrupting office work: Govt employees can be punished within 8 days

The interim government has moved to amend the Government Service Act-2018 to allow swift disciplinary action against its employees who will be found guilty of disrupting official activities.

7h ago