কেনিয়া থেকে ৯ লাখ টাকার পিঁপড়া পাচারকালে আটক ৪

পাচারের উদ্দেশ্যে সিরিঞ্জে রাখা পিঁপড়া। ছবি: রয়টার্স

ইউরোপ ও এশিয়ার পোষা প্রাণীর বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে হাজার হাজার জীবিত পিঁপড়াকে কেনিয়া থেকে পাচার করার সময় চার চোরাকারবারিকে আটক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এই ঘটনাকে বন্যপ্রাণী পাচারবিরোধী লড়াইয়ে এক 'মাইলফলক' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে কেনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস (কেএডব্লিউএস)।

কেএডব্লিউএস জানায়, অভিযুক্তরা টেস্টটিউব ও সিরিঞ্জের ভেতরে লুকিয়ে জীবিত রানী পিঁপড়া পাচারের চেষ্টা করছিল। এরমধ্যে ছিল মেসর সেফালোটেস প্রজাতির পিঁপড়া— যেগুলো 'জায়ান্ট আফ্রিকান হারভেস্টার অ্যান্ট' নামে পরিচিত।

কেএডব্লিউএস-এর বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্তে জানা গেছে, টেস্টটিউবগুলো এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যাতে বিমানবন্দরে ধরা পড়তে না হয় এবং যেন পিঁপড়াগুলো অন্তত দুই মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। 

যারা এসব পিঁপড়া কেনে, তারা সাধারণত এই পতঙ্গগুলোকে ফর্মিকারিয়াম নামের স্বচ্ছ বাক্সে রেখে তাদের উপনিবেশ গঠনের জটিল প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসে।

আদালতের নথি অনুযায়ী, জব্দ হওয়া দুই হাজার ২৪৪টি কনটেইনারে প্রায় পাঁচ হাজার রানী পিঁপড়া পেয়েছে কর্তৃপক্ষ। এসব পিঁপড়ার বাজারমূল্য আনুমানিক ১০ লাখ কেনিয়ান শিলিং (প্রায় সাত হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার, নয় লাখ ৪৮ হাজার টাকা)।

অভিযুক্ত দুই বেলজিয়ান, এক ভিয়েতনামি ও এক কেনিয়ান নাগরিক সোমবার আদালতের কাছে জীবিত বন্যপ্রাণী অবৈধভাবে রাখার ও পাচারের অভিযোগ স্বীকার করেন। 

বেলজিয়ান পাচারকারী ডেভিড লরনোই আদালতে বলেন, 'আমরা আইন ভাঙার পরিকল্পনা নিয়ে এখানে আসিনি। আমরা ভুল করে ফেলেছি।'

আদালত মামলাটির রায় ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি করেছেন। সেদিন কেএডব্লিউএস, কেনিয়া জাতীয় জাদুঘর ও প্রবেশন কর্মকর্তা প্রাক-রায় প্রতিবেদন জমা দেবে। অভিযুক্তরা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছেন।

পিঁপড়া পাচার জগতের সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, কেনিয়া থেকে মেসর সেফালোটেস প্রজাতির পিঁপড়া রপ্তানির জন্য কেএডব্লিউএসের লাইসেন্স ও স্বাস্থ্য সনদ নিতে হয়। এই প্রজাতির পিঁপড়া কেনিয়ায় স্বাভাবিকভাবে পাওয়া গেলেও এর চাহিদা অনেক বেশি এবং ধরা বেশ কঠিন।

কেএডব্লিউএস একে 'বায়োপাইরেসি' বা প্রাণী পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি যুগান্তকারী মামলা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। কারণ এটি কেনিয়ার জিনগত সম্পদকে রাষ্ট্রের সম্মতি ছাড়া রপ্তানির প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে— যা সরাসরি আইনের লঙ্ঘন।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

The interim government is set to bring the curtain down on the Awami League as a functioning political party.

4h ago