আন্দোলনের মুখে ৪৬ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্দোলনরত সরকারি চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে আলোচনার পর রোববার রাতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
পিএসসি সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বিক্ষোভকারীদের সামনে ঘোষণা দিয়ে বলেন, ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে চাকরিপ্রত্যাশীদের কয়েকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। এই ঘোষণার পর তারা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে আন্দোলনরত চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া ও পিএসসির কয়েকজন সদস্য বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে আসিফ মাহমুদ ও পিএসসি সদস্যরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে যান।
সেখানে অনশনরতদের উদ্দেশে আসিফ মাহমুদ বলেন, পিএসসির সংস্কারের জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানসহ সরকারের একটা উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জ্বালানি উপদেষ্টা ও পিএসসির সদস্যরা বৈঠক করে আলোচনা করবেন, যাতে কমিশনের টেকসই সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়।
তবে বিক্ষোভরত চাকরিপ্রত্যাশীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি নিয়ে লিখিত প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়েছেন।
তারা জানান, তাদের আট দাবির সবগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
আজ সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গণবিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনরত চাকুরিপ্রত্যাশীরা।
তাদের আট দাবি হলো—
- ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার আগে প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের বহিষ্কার ও শাস্তির ব্যবস্থা এবং ভবিষ্যতে ৪৬ বিসিএস বাতিলের কোনো সম্ভাবনা হবে না, তার নিশ্চয়তা দেওয়া।
- ৪৫তম বিসিএস থেকে ভাইভার নম্বর ১০০ করা এবং প্রিলি, লিখিত ও ভাইভার প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ করা ও লিখিত পরীক্ষার ন্যূনতম দুই মাস আগে রুটিন প্রকাশ করা।
- সব বিসিএসের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করা। জুলাইয়ের ভেতর ৪৪তম বিসিএসের রেজাল্ট দিয়ে ভাইভা শেষ করে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করা।
- দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করে কমিশনের সদস্য সংখ্যার সীমা ২৫-৩০ জনে উন্নীত করা।
- লিখিত খাতার মূল্যায়নে গতি বাড়ানো, নিরাপত্তা ও নিরপেক্ষতা আনতে কমিশনে বসে খাতা দেখার ব্যবস্থা করা।
- পদের অপচয় রোধে ৪৪তম বিসিএসের ক্ষেত্রে ভাইভা শেষ হওয়ার পর ও রেজাল্টের আগে ক্যাডার চয়েজ প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়া। ৪৫ থেকে ৪৭তম বিসিএসের ক্ষেত্রে ভাইভার আগে আবার ক্যাডার চয়েজ পূরণের সুযোগ দেওয়া এবং পরবর্তী বিসিএসগুলো থেকে প্রিলিমিনারির আগে ক্যাডার পছন্দ না নিয়ে শুধু ভাইভার আগেই ক্যাডার পছন্দের সুযোগ দেওয়া।
- সুপারিশ প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ও যথাসম্ভব স্বচ্ছ করা, ভেরিফিকেশনের হয়রানি কমাতে ব্যবস্থা নেওয়া এবং গেজেট প্রণয়ন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করা।
- ৪৪তম বিসিএসের ক্যাডারের পদ বাড়ানো এবং নন ক্যাডার বিধি সংস্কার করে ভাইভা উত্তীর্ণ সবার ৯ম, ১০ম গ্রেডের চাকরি নিশ্চিত করা।
Comments