সশস্ত্রবাহিনী প্রধানদের সঙ্গে মোদির বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছবি: ডয়চে ভেলে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছবি: ডয়চে ভেলে

মঙ্গলবার রাতে স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধান এবং চিফ অফ ডিফেন্স ফোর্সের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ৭ লোককল্যাণ মার্গের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাবাহিনীর প্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী, বিমানবাহিনীর প্রধান অমরপ্রীত সিং ও নৌবাহিনীর প্রধান দীনেশ কে ত্রিপাঠী।

বিশ্লেষকদের মতে, পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসবাদীদের নৃশংস আক্রমণ ও হত্যালীলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই বৈঠক শেষ হওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতও প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেখা করেন।

সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন সিং মঙ্গলবার তিন আধা সামরিক বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। অন্য দুইটি কেন্দ্রীয় বাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসাররাও বৈঠকে যোগ দেন।

বুধবার সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি(সিসিএস), অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি(সিসিইএ), রাজনৈতিক বিষয়ে মন্ত্রিসভা কমিটি(সিসিপিএ) এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক আছে। তার আগে মঙ্গলবারের বৈঠকগুলি খুবই গুরুত্ব পাচ্ছে।

কী আলোচনা হলো?

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেনা কর্তাদের বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে এক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো বলছে, পেহেলগাম নিয়ে পাল্টা আঘাত করার পূর্ণ স্বাধীনতা প্রধানমন্ত্রী মোদি ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে দিয়েছেন।

কবে, কোথায়, কীভাবে পাল্টা হামলা চালানো হবে, তা তারাই ঠিক করবেন।

এনডিটিভি'র প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রত্যাঘাতের জন্য যা করনীয় তার ফুল 'অপারেশনাল ফ্রিডম' সামরিক বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি সন্ত্রাসবাদের ওপর ভয়ংকর আঘাত করতে চান। ভারতের সামরিক বাহিনীর উপর তার পূর্ণ আস্থা আছে।

ইন্ডিয়া টুডের রিপোর্ট এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, যে কোনো ধরনের সামরিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা তিনি সেনাকে দিয়েছেন। তারাই লক্ষ্যবস্তু ঠিক করবে, দিনক্ষণ ঠিক করবে, কোথায় তারা আঘাত হানবে সেটাও ঠিক করবে। ভারতীয় সেনার ক্ষমতার উপর প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণ আস্থা আছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনেও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীকে প্রত্যাঘাতের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন।

সংবাদসংস্থা রয়টার্স এবং এএফপিও একই ধরনের সংবাদ প্রকাশ করেছে।

পাকিস্তানের মন্ত্রীর দাবি

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লা তারার। ছবি: ডন
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লা তারার। ছবি: ডন

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লা তারার বুধবার বলেছেন, তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য আছে যে, ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক আক্রমণ করতে পারে।

তিনি বলেছেন, পাকিস্তান যে কোনো ধরনের স্বচ্ছ, স্বাধীন ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে সহায়তা করতে রাজি। কিন্তু ভারত যদি কোনোরকম সামরিক অভিযান করে, তাহলে পাকিস্তানও তার যোগ্য জবাব দেবে।

পিটিআই, রয়টার্স, এনডিটিভি

Comments