ব্রাজিল যাত্রা ভেস্তে যাচ্ছে আনচেলত্তির!

গত কয়েকদিনই আন্তর্জাতিক প্রায় সব গণমাধ্যমের সংবাদ ছিল, ব্রাজিলের জাতীয় দলের কোচ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে ইতালিয়ান কোচ কার্লো আনচেলত্তি —কেবল স্বাক্ষরের অপেক্ষা। সব চুক্তিপত্র প্রস্তুত ছিল, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালেই লন্ডনে স্বাক্ষর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাতেই বদলে যায় সব। হঠাৎ করেই খবর, 'ব্রাজিল যাত্রা ভেস্তে যাচ্ছে আনচেলত্তির।'
কিন্তু আসলে ঘটল কী? স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম রেলেভো তাদের খুব ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, দুপুরে আনচেলত্তি ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনকে (সিবিএফ) অবাক করে জানিয়ে দেন যে, রিয়াল মাদ্রিদ তাকে জুনে ছাড়তে দেবে না—যদিও এর আগে ব্রাজিলের সঙ্গে সে বিষয়ে একমত হয়েছিলেন তিনি।
মূলত ক্লাব বিশ্বকাপের আগে আনচেলত্তিকে ছাড়ার কোনো চিন্তাই করছে না রিয়াল মাদ্রিদ। তবে নিজ ইচ্ছায় চলে যেতে চাইলে তাকে বাধাও দেবে না ক্লাবটি। তবে সেক্ষেত্রে তাকে তার ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তির বাকি অর্থ দেওয়া হবে না। উল্লেখ্য, তিনি বছরে ১ কোটি ১০ লাখ ইউরো বেতন পান।
অথচ ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে আনচেলত্তির যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল, জুনের ৬ তারিখ ইকুয়েডরের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ দিয়েই। এমনকি, ২৬ মে রিও ডি জেনেইরোতে তার সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথাও ছিল। এখন সিবিএফ প্রায় নিশ্চিত যে তাকে আর পাওয়া যাবে না, এবং তারা এখন বিকল্প হিসেবে হোর্হে জেসুসের দিকে ঝুঁকছে।
আনচেলত্তি আশা করেছিলেন তার চুক্তির শেষ বছরের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবেন। এই আর্থিক দিকটিই আলোচনার ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া, সৌদি আরব থেকে আনচেলত্তির কাছে একটি বড় প্রস্তাব আসায় সেটিও বড় ভূমিকা রেখেছে।
বর্তমানে আনচেলত্তির ওপর সিবিএফ এবং রিয়াল মাদ্রিদ উভয়ই ক্ষুব্ধ। মঙ্গলবারই ভিন্ন এক ঘটনার সূত্র ধরে রিয়াল বোর্ডের অসন্তোষ আরও বেড়ে যায়। লন্ডন থেকে ফেরা আনচেলত্তি সিবিএফের প্রতিনিধি দিয়েগো ফার্নান্দেজকে সঙ্গে নিয়ে বারাহাস বিমানবন্দরে পৌঁছান দুপুরের পর, যার ফলে নির্ধারিত সময়ে অনুশীলন সভায় আসতে পারেননি। যদিও সেভিয়াতে এই সফরের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ক্লাব থেকে, তবে ক্লাবের দায়িত্ব পালনে তার এই গাফিলতি বোর্ডকে অসন্তুষ্ট করে।
সূত্রমতে, তখনও ব্রাজিলের দল নিয়ে দাপ্তরিক কাজের মধ্যে ব্যস্ত ছিলেন আনচেলত্তি। সাম্প্রতিক সময়ে ক্লাবে তার ও কোচিং স্টাফের মনোযোগ যেন ভবিষ্যতের দিকেই বেশি, যা ক্লাবের বর্তমান অবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ক্লাব পরিচালকদের অনুমতি নিয়ে ব্রাজিলের সঙ্গে আলোচনায় গেলেও সিবিএফ দূতের বারবার স্পেনে আগমন—প্রথমে আর্সেনালের বিপক্ষে ইউরোপীয় ম্যাচের সময়, তারপর তার বাসায় ভোজ, আবার লা কার্তুজায় দেখা করা—এসব বিষয় ভালোভাবে নেয়নি রিয়াল।
Comments