স্বজনের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন, তদন্তের মুখে হালদা প্রকল্প পরিচালক

হালদা নদী | ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

হালদা নদীর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে দুই ঘনিষ্ট আত্মীয় নিয়োগ পাওয়ার পর প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মৎস্য অধিদপ্তর একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান দাবি করেছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তার হাত ছিল।

প্রকল্পের নথি অনুসারে, গত বছরের ৯ জুন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পান প্রকল্প পরিচালক মো. মিজানুর রহমানের মামাতো কামরুল হাসান ও ফুফাতো ভাই নেসার উদ্দিন।

কামরুলকে হ্যাচারি অ্যাটেনডেন্ট ও নেসার উদ্দিনকে পুকুর পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত নয়জনকে ১৬ থেকে ১৯ হাজার টাকা মাসিক বেতনে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে কামরুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চাকরির বিজ্ঞপ্তির খবর পেয়ে আমরা আবেদন করি এবং আউটসোর্সিংয়ের প্রতিষ্ঠান আমাদের নিয়োগ দেয়।'

নিয়োগে প্রকল্প পরিচালক সহায়তা করেছেন কি না জানতে চাইলে কামরুল বলেন, 'আপনারা সাংবাদিক। আমি কিছু বললে সেটা প্রকাশ হতে পারে, এতে আর আমার ভাই (মিজানুর) বিপদে পড়বে।'

মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তারা আমার আত্মীয়। তবে তারা কীভাবে নিয়োগ পেয়েছে, আমি জানি না।'

এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ঢাকাভিত্তিক আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান বিএনডিবি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি হালদা প্রকল্পে জনবল সরবরাহের জন্য কার্যাদেশ পেয়েছিল।

প্রতিষ্ঠানটির মালিক মাহবুব মোল্লা বলেন, 'আমরা যখন কোনো অফিসে জনবল সরবরাহের কাজ পাই, তখন অভ্যন্তরীণ অনেক প্রার্থীর বিষয়ে অনুরোধ পেয়ে থাকি।'

কামরুল ও নেসারের ব্যাপারে জানতে চাইলে মাহবুব বলেন, 'তারা আমাকে ফোন করে প্রকল্প পরিচালকের আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিল। তবে প্রকল্প পরিচালক তাদের জন্য সরাসরি কোনো অনুরোধ করেনি।'

কামরুল গত বছরের অক্টোবরে ও নেসার চলতি বছরের জানুয়ারিতে চাকরি ছেড়ে দিলেও হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার চার বাসিন্দা গত ৫ মার্চ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

তারা অভিযোগ করেন, প্রকল্প পরিচালক তার আত্মীয়দের নিয়োগ দিয়েছেন এবং ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করছেন।

মৎস্য বিভাগের তদন্ত দল গত ৯ এপ্রিল চট্টগ্রামে এসে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছে।

তদন্ত দলের প্রধান ও খুলনার মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমি তদন্ত শেষ করে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।'

অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন কি না তা জানাতে রাজি হননি জাহাঙ্গীর।

যোগাযোগ করা হলে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুর রউফ বলেন, 'আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে হালদা নদীর প্রাকৃতিক মাছ প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। ২০২৭ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Air purifiers for Dhaka: hope or hype?

DNCC to set up 25-30 such industrial devices in public places to curb pollution; experts skeptical

18h ago