'আধুনিক ক্রিকেটে অলরাউন্ডারদের চাহিদা অনেক'

২০১৭ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) দল ট্রিনবাগো নাইট রাইডার্সে জায়গা করে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যা ছিল তার বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে প্রথম সুযোগ পাওয়া। তবে সে বছর কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তার। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে, এখন মিরাজ বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এক ক্রিকেটার। আরেকটি বিদেশি লিগে ডাক পেতে তার লেগেছে আরও আট বছর। চলতি পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্স দলে জায়গা পেয়েছেন তিনি। আগেরদিন পাকিস্তান রওনা হওয়ার আগে দ্য ডেইলি স্টারের সামসুল আরেফীন খানকে জানালেন পিএসএল খেলতে যাওয়ার উচ্ছ্বাস, জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে নিয়মিত হতে না পারার কারণসহ আরও নানা বিষয়। সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ নিচে তুলে ধরা হলো—

দ্য ডেইলি স্টার: পিএসএল খেলতে যাচ্ছেন, কেমন লাগছে?

মেহেদী হাসান মিরাজ: দারুণ লাগছে। ২০১৭ সালে প্রথম বিদেশি লিগে সুযোগ পেয়েছিলাম, তবে ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। এটা আমার দ্বিতীয়বার কোনো বিদেশি লিগে সুযোগ পাওয়া। পিএসএল খুব বড় একটা টুর্নামেন্ট, তাই এক্সসাইটমেন্টটা অবশ্যই অনেক বেশি।

ডেইলি স্টার: লাহোর কালান্দার্সের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ হলো?

মিরাজ: আমার ম্যানেজার পলাশ সকাল বিষয়টা সম্ভব করেছেন। তিনি লাহোর ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তার চেষ্টাতেই পিএসএলে খেলার সুযোগ পেয়েছি।

ডেইলি স্টার: আপনার দীর্ঘদিনের জাতীয় দলের সতীর্থ সাকিব আল হাসানও তো একই দলে, নিশ্চয় ভালো লাগছে?

মিরাজ: অবশ্যই ভালো লাগছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলছি। তার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি, তাই তার কাছ থেকে শেখার অনেক কিছু থাকবে বলে মনে করি।

ডেইলি স্টার: গত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আপনি টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হয়েছেন, তবুও জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হয়নি। আপনি অবশ্যই হতাশ?

মিরাজ: হ্যাঁ, আমি টি-টোয়েন্টি দলে মাঝে মাঝে সুযোগ পেয়েছি, আবার বাদও পড়েছি। এটা মূলত নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনার ওপর নির্ভর করে। তবে আমি সবসময়ই টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য প্রস্তুত। সত্যি বলতে, বিপিএলে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়াটা আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। যদি আরও এক-দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে পারি, তাহলে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে।

ডেইলি স্টার: আট বছরের বেশি সময় ধরে টি-টোয়েন্টি খেলছেন, কিন্তু ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ২৯টি। এটা কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

মিরাজ: সত্যি বলতে, আগে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটাকে খুব একটা গুরুত্ব দিতাম না। আমি টেস্ট ও ওয়ানডেতেই বেশি মনোযোগী ছিলাম। তিন ফরম্যাটে একসঙ্গে খেলা এবং সমানভাবে পারফর্ম করা কঠিন। তবে এখন আমি টি-টোয়েন্টিতেও ভালো করতে চাই, অন্যান্য ফরম্যাটের মতোই।

ডেইলি স্টার: সামনের দিনগুলোতে জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি সূচি বেশ ব্যস্ত। আপনার দলে ফেরার জন্য এই পিএসএল কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

মিরাজ: বড় কোনো টুর্নামেন্টে ভালো খেললে আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়ে। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারতে ও শ্রীলঙ্কায়, এটা আমার জন্য বড় সুযোগ। যদি পিএসএলেও ব্যাট-বল হাতে বিপিএলের মতো পারফর্ম করতে পারি, তাহলে নির্বাচকেরা নিশ্চয়ই আমাকে বিবেচনায় নেবেন।

ডেইলি স্টার: আপনি যেভাবে একজন পূর্ণাঙ্গ অলরাউন্ডার হিসেবে গড়ে উঠেছেন, সেটাই কি আগের চেয়ে বেশি আকৃষ্ট করছে বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে?

মিরাজ: হ্যাঁ, আমার তাই মনে হয়। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে হলে ব্যাটিং-বোলিং দুটোতেই ভালো হতে হয়। টি-টোয়েন্টিতে খেলার সময় নানা রকম মুহূর্ত আসে, যেগুলো দ্রুত বুঝে নেওয়া ও মানিয়ে নেওয়াও জরুরি। আধুনিক ক্রিকেটে অলরাউন্ডারদের অনেক বেশি চাহিদা।

ডেইলি স্টার: আপনি যেহেতু নিয়মিত ভালো পারফর্ম করেছেন, তাই মানুষ আপনাকে নিয়ে অনেক প্রত্যাশা করে। সেই প্রত্যাশার ভারেই কি আপনি টি-টোয়েন্টিতে বেশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন?

মিরাজ: হ্যাঁ, আমি নিয়মিত পারফর্ম করার মাধ্যমেই মানুষের মধ্যে প্রত্যাশা তৈরি করেছি। যদি পারফর্ম করতে না পারতাম, তাহলে এত প্রত্যাশাও থাকতো না। আমি ব্যাট এবং বল হাতে অনেক ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স দিয়েছি, জাতীয় দলের জন্য অনেক ম্যাচ জিতিয়েছি। এতে করে শুধু মানুষ না, নিজের কাছেও প্রত্যাশা বেড়েছে। পারফর্ম করতে না পারলে খারাপ তো লাগেই, কিন্তু যখন জাতীয় দলের জন্য ম্যাচ জেতাতে পারি না, তখন সেটা আরও বেশি কষ্ট দেয়।

Comments

The Daily Star  | English

Protests continue as Ishraque vows to stay on streets until advisers resign

Protests rolled into this morning as BNP activists and leaders held their ground in front of the mosque, demanding that Ishraque be allowed to take the oath as mayor

2h ago