যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সেন্টমার্টিনে খাদ্য-জ্বালানি সংকট

ছবি: সংগৃহীত

নিম্নচাপ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায় ছয়দিন ধরে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে নৌ যোগাযোগ বন্ধ থাকায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিনে খাদ্য ও জ্বালানি ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জ্বালানি না থাকায় তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ। ফলে তীব্র ভোগান্তিতে পোহাচ্ছেন এই দ্বীপের বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, তীব্র জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও গলাচিপা এলাকায় মিঠা পানির পুকুরে লবণ পানি ঢুকে পড়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার অন্তত ৫০টি বাড়ি তিন দিন ধরে পানির নিচে ছিল। আজ শনিবার সকালে বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে নালা কেটে পানি অপসারণের ব্যবস্থা করেন।

দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ মানুষের ফোন বন্ধ হয়ে গেছে। বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। সূর্যের আলো না থাকায় সোলার কোম্পানিগুলোও বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। দুর্যোগকালে তারা জ্বালানিচালিত জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু জ্বালানি না থাকায় সেটিও বন্ধ রয়েছে।

'জোয়ারের পানি জমে থাকার কারণে বাসিন্দারা নিজেরাই খাল কেটে পানি সরিয়েছেন। তীব্র জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও গলাচিপায় মিঠা পানির পুকুর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে', যোগ করেন জয়নাল।

বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থানরত দ্বীপের আরেক বাসিন্দা তৈয়বুল্লাহ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় দ্বীপের বেশিরভাগ বাসিন্দার মোবাইল বন্ধ হয়ে গেছে। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেছে, তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে, গত ছয়দিন নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে তীব্র খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি প্রকল্পের আওতায় কিছু পরিবার সহায়তা পেলেও অধিকাংশ মানুষ খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকটে ভুগছে।

স্থানীয়রা নালা কেটে পানি অপসারণ করছেন। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে গতকাল কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ সালাউদ্দিন জানিয়েছিলেন, দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই তারা সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৭৬ হাজার কেজি চাল পাঠিয়েছিলেন। ফলে সেখানে খাদ্য সংকট হওয়ার সম্ভাবনা কম। এছাড়া সমুদ্র শান্ত হলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য বিশেষ বরাদ্দ সরবরাহ করা হবে।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ ডেইলি স্টারকে জানান, গত ছয়দিন ধরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ট্রলার চলাচল বন্ধ।

তবে আগামীকাল থেকে তা স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জানতে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়জুল ইসলামের নম্বরে ফোন করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন ডেইলি স্টারকে বলেন, সংকট মোকাবিলায় আগেই সেন্টমার্টিনে চাল পাঠানো হয়েছে। ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে রোববার থেকে নৌ যোগাযোগ পুনরায় চালু হবে।

তিনি আরও জানান, দ্বীপে আরও ১০ মেট্রিক টন চালসহ একটি ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে এলেই সেটি পাঠানো হবে।

'কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হলেও স্থানীয় উদ্যোগে পানি অপসারণ করা হয়েছে। যোগাযোগবিচ্ছিন্ন থাকায় বাসিন্দারা কিছুটা কষ্টে রয়েছেন। তবে পরিস্থিতি দ্রুতই স্বাভাবিক হবে', যোগ করেন ইউএনও।

Comments

The Daily Star  | English
August 5 declared as July Mass Uprising Day

Govt declares 3 new days for nat’l observance

The interim government yesterday declared August 5 as “July Mass Uprising Day” to commemorate the student-led protests that toppled the Sheikh Hasina regime that day last year.

1h ago