‘অন্তত একটি পয়েন্ট’ না পাওয়ার আফসোস কাবরেরার কণ্ঠে

সিঙ্গাপুরের কাছে হারলেও হাভিয়ের কাবরেরার মতে, তুলনামূলক বিচারে তার শিষ্যরাই ভালো খেলেছে। এই ফলকে ভীষণ হতাশাজনক হিসেবেও মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ।
মঙ্গলবার কানায় কানায় পূর্ণ ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের পুড়তে হয়েছে আক্ষেপে। ভক্ত-সমর্থকদের তুমুল উন্মাদনা থাকলেও সিঙ্গাপুরের কাছে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ২-১ গোলে হেরেছে তারা। দুর্বল ফিনিশিংয়ে বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়ার পাশাপাশি ভাগ্যও সঙ্গ দেয়নি স্বাগতিকদের।
প্রথমার্ধের শেষদিকে সং উই ইয়ং জাল কাঁপালে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সিঙ্গাপুর। দ্বিতীয়ার্ধে সফরকারীদের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইখসান ফান্ডি। তারপর রাকিব হোসেন একটি গোল শোধ করলেও পয়েন্ট পাওয়া আর হয়নি কাবরেরার দলের। যোগ করা সময়ে নিশ্চিত পেনাল্টির আবেদন জানিয়ে রেফারির কাছ থেকে মেলেনি সাড়া। আর খেলা শেষের ঠিক আগে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার।
গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে বাছাইয়ের আগের ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশ দলকে নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। তাই সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের অনলাইন টিকিট বিক্রি হয়ে যায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। ভক্ত-সমর্থকরা এদিন ম্যাচ শুরুর দুই-তিন ঘণ্টা আগে থেকেই স্টেডিয়ামে ভিড় করতে থাকেন। তবে অনেক উল্লাস ও উচ্ছ্বাস সত্ত্বেও শেষ বাঁশির পর তাদের ফিরতে হয় হতাশ হয়ে।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল। গ্যালারি থেকে মাঠে বোতল ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে কাবরেরা ব্যাখ্যা দেন, এই ক্ষোভ ছিল রেফারির প্রতি, ফুটবলারদের প্রতি নয়, 'নিশ্চয়ই কিছুটা হতাশা আছে এবং কিছু সমর্থকের ক্ষোভও আছে, যা স্বাভাবিক।'
ড্র হলে ন্যায্য ফল হতো বলে মনে করেন তিনি, 'কয়েকটি দিক বিবেচনা করে একটু ঘুরে তাকিয়ে দেখলে— আমরা ভালো খেলেছি, প্রতিপক্ষের চেয়ে পিছিয়ে ছিলাম না। কিছু কিছু সময় বরং আমরাই বেশি প্রভাব বিস্তার করেছি। ২-২ গোলে ড্র হলে সেটা ন্যায্য ফল হতো। আমি বুঝতে পারছি যে, আমাদেরকে ঘিরে প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল এবং এই ফল ভীষণ হতাশাজনক।'
বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ স্বীকার করেন, প্রথমার্ধে চাপে পড়ায় ভুল করেছে তার দল, যদিও দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ছিল লক্ষণীয়, 'ম্যাচটা যেভাবে শুরু করেছিলাম তা আমাদের পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রেখেই— আগ্রাসী ছিলাম, প্রেসিং করেছি। কিন্তু প্রথম ১৫-২০ মিনিটে কিছু ভুল হয়েছে আমাদের। এরপর আমাদের শক্তি ও আগ্রাসন কমে যায়। উল্টোদিকে, সিঙ্গাপুর আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় এবং তারা স্বাচ্ছন্দ্যে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে থাকে।'
'আমাদের দ্বিতীয়ার্ধের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্ব করা উচিত। খেলোয়াড়রা সাহসিকতার সঙ্গে খেলেছে এবং সর্বোচ্চটা চেষ্টা করেছে। আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি এবং অন্তত একটি পয়েন্ট পাওয়ার যোগ্যও ছিলাম। তবে অবশ্যই, ওদেরও কিছু মুহূর্ত ছিল। আর অনেক সময় ম্যাচের ভাগ্য শেষদিকে দুলতে থাকে— এটা আমাদের মেনে নিতেই হবে,' যোগ করেন তিনি।
Comments