কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ ঘাঁটি কেন গুরুত্বপূর্ণ, কী আছে সেখানে

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার আগে কাতারের রাজধানী দোহার অদূরে আল উদেইদ বিমানঘাঁটির রানওয়ে ফাঁকা করে ফেলা হয়। স্যাটেলাইট ছবি সৌজন্য: এএফপি

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এবার মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইরান। সোমবার সন্ধ্যায় কাতারের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এই অঞ্চলে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। কাতার জানিয়েছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে হামলা প্রতিহত করেছে।

সোমবার সকালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি আকবর ভেলায়েতি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, প্রতিশোধ হিসেবে এই অঞ্চলে বা অন্য কোথাও থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে হামলা হতে পারে।

এর কয়েক ঘণ্টা পরই কাতারের রাজধানী দোহার আকাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরে কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, আল উদেইদ ঘাঁটি লক্ষ্য করে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র তারা প্রতিহত করেছে।

ইরান থেকে মাত্র ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত গ্যাস-সমৃদ্ধ দেশ কাতার। মধ্যপ্রাচ্যে এখানেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদ।

দোহার বাইরে মরুভূমিতে অবস্থিত এই ঘাঁটিতে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সৈন্য অবস্থান করে। কাতার এই ঘাঁটির অবকাঠামো উন্নয়নে এ পর্যন্ত ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করেছে।

এটি ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) সম্মুখভাগের সদর দপ্তর। এখান থেকেই মিসর থেকে কাজাখস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল এক অঞ্চলের মার্কিন সামরিক অভিযান পরিচালিত হয়। এখানে কাতার ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের বিমানবাহিনীর উপস্থিতি আছে।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার আগেই যুক্তরাষ্ট্র আল উদেইদ ঘাঁটির সুরক্ষায় সতর্কমূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছিল।

স্যাটেলাইট চিত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, হামলার আগে আল উদেইদ ঘাঁটির রানওয়ে থেকে কয়েক ডজন মার্কিন সামরিক বিমান সরিয়ে নেওয়া হয়। জুনের শুরুতে যেখানে প্রায় ৪০টি পরিবহন ও গোয়েন্দা বিমান দেখা গিয়েছিল, ১৯ জুনের ছবিতে সেখানে মাত্র তিনটি বিমান দেখা যায়।

একজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, যেসব বিমান সুরক্ষিত হ্যাঙ্গারের বাইরে ছিল, সেগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পাশাপাশি, বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের জাহাজগুলোকেও বন্দর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

তবে ইরানে হামলার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের কোনো ঘাঁটি ব্যবহার করেনি যুক্তরাষ্ট্র। পেন্টাগন জানিয়েছে, হামলার জন্য বি-২ বোমারু বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের হোয়াইটম্যান এয়ার ফোর্স বেস থেকে সরাসরি আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে ইরানে উড়ে যায়।

ইরানের এই হামলাকে নিজেদের 'সার্বভৌমত্বের চরম লঙ্ঘন' বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে বলেন, 'কাতার এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করে।'

তবে কাতার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলারও নিন্দা জানিয়েছিল। ইরান ও কাতার ঐতিহ্যগতভাবে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখে। ফলে এই পাল্টাপাল্টি হামলায় কাতার কূটনৈতিকভাবে এক জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Early US intel assessment suggests strikes on Iran did not destroy nuclear sites: CNN

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu said Israel had agreed to Trump's ceasefire proposal

2d ago