গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ-প্রাণহানি: বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি হিউম্যান রাইটস ফোরামের

গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর জোট হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)। এই ঘটনাকে নাগরিক নিরাপত্তা ও সংবিধানপ্রদত্ত মৌলিক অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত উল্লেখ করে অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে জোটটি।

বিবৃতিতে সই করেন ড. হামিদা হোসেন, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, রাজা দেবাশীষ রায়, অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, শাহীন আনামসহ অনেকেই।

আজ শনিবার এক বিবৃতি দিয়ে এইচআরএফবি এই দাবি জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ শেষে স্থানীয় একটি রাজনৈতিক দলের একাংশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনতার ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। এতে ঘটনাস্থলে চারজন এবং পরে হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

এইচআরএফবি মনে করে, জনসমক্ষে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা অমানবিক এবং এটি সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। বিবৃতিতে বলা হয়, 'এই ধরনের অতিমাত্রায় বলপ্রয়োগ কোনো অজুহাতেই গ্রহণযোগ্য নয়, বরং এটি রাষ্ট্রের জবাবদিহিতার অভাবের বহিঃপ্রকাশ।'

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের বিষয়টিও তুলে ধরে ফোরাম। বিবৃতিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাহিনীর সদস্যদের গুলি ছোড়ার ভিডিও দেখা গেলেও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) গণমাধ্যমে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) 'আত্মরক্ষার্থে' বলপ্রয়োগের কথা স্বীকার করলেও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

নিহত এক ব্যক্তির পরিবারের গুরুতর অভিযোগের কথা উল্লেখ করে এইচআরএফবি জানায়, ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে একটি পরিবার অভিযোগ করেছে। ফোরাম এটিকে 'কর্তব্যে গাফিলতি ও আইন লঙ্ঘনের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ওপর গভীর আঘাত। এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Industrial output soars, but where are the jobs?

Over the past decade, more and more industries have sprung up across the country, steadily increasing production. But while output rose, factories did not open their doors to more workers.

10h ago