জাকেরের ফিফটিতে বাংলাদেশের ১৩৩ রানের পুঁজি

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সিরিজ জয়ের হাতছানি নিয়ে নামা ম্যাচে শুরুতে খেই হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ। টপাটপ উইকেট পড়ার পর প্রতিরোধ গড়লেন জাকের আলী অনিক ও শেখ মেহেদী হাসান। শেখ মেহেদী ফিরলেও জাকের শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে করলেন ফিফটি। তার ব্যাটে চড়ে বোলিংবন্ধব পিচে লড়াইয়ের পুঁজি পেল টাইগাররা।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা অলআউট হয়েছে ১৩৩ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে স্বাগতিকরা।

ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়া জাকের পাঁচে নেমে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন। ৪৮ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন একটি চার ও পাঁচটি ছক্কা। এই সংস্করণে এটি তার চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি। ছয়ে নামা শেখ মেহেদী দুটি করে চার ও ছক্কায় খেলেন ২৫ বলে ৩৩ রানের ইনিংস। এছাড়া, দুই অঙ্কে যান কেবল ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। তিনি ১৩ বলে একটি করে চার ও ছয়ে করেন ১৪ রান।

টসের পর শোকের আবহে মাঠে গড়ায় খেলা। ম্যাচ শুরুর আগে পুরো স্টেডিয়ামে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। গতকাল উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণ করা হয় সেসময়।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ৪ উইকেট খুইয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সাজঘরে ফিরে যান ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম চারজন। তখন স্কোরবোর্ডে দলটির সংগ্রহ স্রেফ ২৮ রান।

দ্বিতীয় ওভার থেকেই শুরু হয় উইকেটের পতন। তানজিদ হাসান তামিমের জায়গায় ওপেনিংয়ে সুযোগ পাওয়া নাঈম শেখ হন ব্যর্থ। অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্কুপ করে উইকেটরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে পাঠাতে চেয়েছিলেন। তবে টাইমিংয়ে গড়বড় করে মোহাম্মদ হারিসের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। ৭ বলে ৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ৫ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।

পঞ্চম ওভারে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে আন্তর্জাতিক অভিষেকের স্বাদ পাওয়া পেসার সালমান মির্জা নেন মেডেন, পড়ে দুটি উইকেট। প্রথম বলে ছক্কার চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন। ৯ বলে একটি চারে তিনি করেন ৮ রান।

টিকতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়ও। রানের খাতা খুলতে না পেরে ৩ বল পর রানআউট হয়ে যান তিনি। মিড অফ থেকে সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প এলোমেলো করে দেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলী আগা।

পাকিস্তানের অভিষিক্ত পেসার আহমেদ দানিয়াল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ওভারেই পান উইকেটের স্বাদ। টাইমিংয়ে গড়বড় করে মিড অনে ফাহিমের তালুবন্দি হন আরেক ওপেনার পারভেজ।

এরপর চাপ সামলে নেওয়ার লড়াইয়ে নামেন জাকের ও শেখ মেহেদী। পঞ্চম উইকেটে তারা আনেন ৪৯ বলে ৫৩ রান। টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই জুটিতে যা বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ড ছিল মিরপুরেই, ২০১৪ সালে সাকিব আল হাসান ও নাসির হোসেনের ৪৪ রানের।

শেখ মেহেদী ছিলেন ছন্দে। কিন্তু চতুর্দশ ওভারে স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজের বলে ছক্কা মেরে জুটির পঞ্চাশ রান পূর্ণের পরই আউট হয়ে যান। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। সীমানার অনেক ভেতর থেকে ক্যাচ নেন হাসান নওয়াজ।

৮১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর বাংলাদেশ দল ১৩৩ পর্যন্ত যায় জাকেরের কল্যাণে। অন্যপ্রান্তে চলছিল সতীর্থদের আসা-যাওয়া। শামীম হোসেন ৪ বলে করেন ১ রান। তানজিম হাসান সাকিব থামেন একটি চারে ৪ বলে ৭ রানে। রিশাদ হোসেন ৪ বলে একটি ছক্কায় ৮ করে ফেরেন।

আব্বাস আফ্রিদির করা শেষ ওভারে দুটি ছক্কায় ১৩ রান আনেন জাকের। ৪৬ বলে তিনি পূর্ণ করেন ফিফটি। মাঝে শরিফুল ইসলাম রানআউট হওয়ার পর শেষ বলে ছক্কার চেষ্টায় মোহাম্মদ নওয়াজের হাতে ক্যাচ দেন জাকের। মোস্তাফিজুর রহমান থেকে যান অপরাজিত। পাকিস্তানের পক্ষে দুটি করে শিকার ধরেন সালমান, দানিয়াল ও আব্বাস।

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser muhammad yunus speech

Signs of conspiracies by defeated forces becoming evident: CA

Political parties must make their unity against fascism more visible, says Yunus

2h ago