‘রাষ্ট্রের প্রধান ৩ অঙ্গে সমস্যা রেখে সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করে লাভ হবে না’

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মানবাধিকারকে একটি সংস্কৃতি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, এটা শুধু আইন দিয়ে হবে না। সবার উপলব্ধি ও আত্মশুদ্ধি লাগবে।

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে 'হিউম্যান রাইটস সার্পোট সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত ১১তম মানবাধিকার সম্মেলন-২০২৫' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, 'আমাদের প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছতা লাগবে। আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে, আত্মশুদ্ধি করতে হবে। এগুলোর সঙ্গে যখন আমরা আইনগত পরিবর্তন করব, প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন করব, তখন একটা সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন আসতে পারে।'

তিনি বলেন, সবচেয়ে আগে ফিক্স করা দরকার রাষ্ট্রের প্রধান তিনটা অঙ্গ—নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ। আগে এই তিনটা অঙ্গের সমস্যা সমাধান করতে হবে। এখানে প্রবলেম রেখে তথ্য কমিশন করে, হিউম্যান রাইটস কমিশন করে, সেমিনার সিম্পোজিয়াম করে আসলে কোন লাভ হবে না। আসল জায়গাতে হাত দিতে হবে।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা একটি বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপার উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, অনেকে মনে করে, মানবাধিকার বাস্তবায়ন ইউরোপে হয়েছে, আমেরিকায় হয়েছে। তারা নিজের দেশের ভেতরে করেছে। কিন্তু তারা সারা পৃথিবীতে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার কাজে নিয়োজিত আছে।

'আপনারা ভালো করেই জানেন। কীভাবে তারা বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ ছড়িয়ে দেয়, অস্ত্র বিক্রি করে। অত্যাচারী শাসকদেরকে সাপোর্ট করে, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। এখনো একটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মতো রয়ে গেছে,' যোগ করেন তিনি।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, 'ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার ভয়টা চলে গেলে তখন (সরকার) কী দানবে পরিণত হয় সেটা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট আমল থেকে আমরা বুঝতে পারি। যেটার কারণে আমাদের এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে চিরস্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যেতে হয়েছে।'

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ড. মুহম্মদ একরামুল হক বলেন, মানবাধিকার যদি লঙ্ঘন হয়, তাহলে বিচার হবে আদালতে। কিন্তু আদালতকে যদি আমি ফ্যাসিজমের (স্বৈরাচারের) একটা অংশ করে ফেলি, তাহলে আমি সংবিধানে যতই ভালো কথা লিখি, সেটি কোনোদিন হবে না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

তিনি বলেন, হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্টের (মানবাধিকার প্রয়োগ) জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা বিশাল রোল (ভূমিকা) আছে। তাদেরকে (আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) বলতে হবে যে, আমি কোনো দলের দাস হিসেবে কাজ করব না, আমি আইন অনুযায়ী চলবো।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে অথোরিটারিয়ান রেজিম (কর্তৃত্ববাদী শাসনে) পতনের পর দেশের সামনে বিরল এক মোমেন্টাম এসেছে। এখন সময় দেশের বাস্তবতা অনুযায়ী গভর্নেন্সে (সরকারে) জবাবদিহিতা ও সংস্কার আনার। এসবের মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের দিকে এগিয়ে যাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago