ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতার অভাবের মূল কারণ লুকিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে

shadman islam

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব ফরম্যাটে বাংলাদেশি ব্যাটারদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে গেলে ধারাবাহিকতার অভাবকে উপরের দিকেই রাখতে হবে।

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুর দিন থেকেই একজন ব্যাটারের একটি ভালো ইনিংস তাকে পরবর্তী কিছু ম্যাচের জন্য দলে জায়গা নিশ্চিত করে দিতো। এই প্রবণতা আজও বিদ্যমান। আর এজন্য খেলোয়াড়দের ধারাবাহিকতার জন্য খুব বেশি চেষ্টা করতে হয়নি।

বাংলাদেশ টাইগার্স প্রোগ্রামের কোচ সোহেল ইসলামের মতে, ধারাবাহিকভাবে রান করা একটি 'অভ্যাস', যা খেলোয়াড়দের ঘরোয়া পর্যায়েই গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে তা খুব কমই করা হয়, কারণ খেলোয়াড়রা সামান্য কিছু অর্জন করেই প্রচুর প্রশংসা পেয়ে যান।

গতকাল গণমাধ্যমকে সোহেল বলেন, 'আমি মনে করি খেলোয়াড়দের আমরা কীভাবে মূল্যায়ন করি, সে বিষয়ে সংস্কৃতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ভারতের দিকে তাকান, যেখানে ঘরোয়া ক্রিকেট খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, সেখানে এক বা দুটি সেঞ্চুরি কোনো বড় ব্যাপার নয়। এখানে একটি বড় স্কোর খেলোয়াড়, কোচ এবং মিডিয়াকে সন্তুষ্ট করে।'

তিনি আরও বলেন, 'একটানা বড় রান করা অভ্যাসের ব্যাপার। এমন হতে পারে না যে আপনি একটি ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি করলেন, কিন্তু পরের ইনিংসে রান করলেন না।'

গত জুনে নাজমুল হোসেন শান্ত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে গলে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন, কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে তার স্কোর ছিল আট এবং ১৯, যা প্রতিষ্ঠিত ব্যাটারদের ধারাবাহিকতার অভাবকে তুলে ধরে।

সোহেল মনে করেন, ব্যাটারদের বড় রান করার ক্ষুধা তৈরি করা প্রয়োজন, 'আমরা শান্তর সঙ্গে কথা বলেছি যে টানা দুটি সেঞ্চুরির পর তার পরের টেস্টে আরও বেশি রান করা উচিত ছিল... আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার এবং তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। আপনি গতকাল যে রান করেছেন তা অতীত, প্রথম দিনে আপনার যে দৃঢ় সংকল্প ছিল এবং যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে আপনি রান করেছিলেন তা চালিয়ে যেতে হবে।'

তিনি আরও যোগ করেন, 'আমরা কেবল সংখ্যা দিয়ে খেলোয়াড়দের পরিমাপ করার চেষ্টা করছি না। কোন পরিস্থিতিতে এবং কী প্রভাব ফেলে সে পারফর্ম করছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত।'

প্রায়শই ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ গড় থাকা ব্যাটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বা 'এ' দলের ম্যাচে ভালো পারফর্ম করতে পারে না। যেমনটা এনামুল হক বিজয়ের বেলায় হলো। যিনি গত জাতীয় ক্রিকেট লিগে পঞ্চাশের বেশি গড়ে ৭০০ রান করেছিলেন। কিন্তু 'এ' দলের হয়েও রান পাননি, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা তিন টেস্ট খেলে হন চরম ব্যর্থ।

গত জাতীয় লিগে খালেদ আহমেদই একমাত্র শীর্ষ পেসার ছিলেন যিনি প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতায় পাঁচটি ম্যাচ খেলেছিলেন। এর মানে হলো বেশিরভাগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাটারদের পুরো ইনিংসে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়নি।

সোহেল এই বিশেষ দিকটি তুলে ধরে বলেন, 'যদি প্রতিপক্ষের দুজন মানসম্পন্ন বোলার থাকে, আপনি জানেন যে তাদের সামলাতে পারলে আপনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন। মানসম্পন্ন ঘরোয়া ক্রিকেট আছে এমন দেশগুলোতে আপনি দেখতে পাবেন যে পাঁচজন বোলারের মধ্যে চারজনই ভালো এবং তারা দীর্ঘ সময় ধরে হুমকি তৈরি করতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English

Sadarghat launch terminal: Once a thriving riverport now barely afloat

With the rise of modern highways and faster road travel, the once-bustling river port is witnessing a sharp drop in passenger traffic

10h ago