যে রেকর্ডে মুশফিককে ছাড়িয়ে গেলেন টেইলর

ব্রেন্ডন টেলরের যখন টেস্ট অভিষেক, তখন পাঁচ মাসের শিশু ব্রায়ান বেনেট। আজ সেই বেনেটের সঙ্গেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেন করতে নামেন ৩৯ পেরুনো টেইলর। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের দিন একটি রেকর্ডেও নাম লিখেছেন, যাতে ছাড়িয়ে গেছেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমকে।
নিষেধাজ্ঞার আগেই অবসরও নিয়েছিলেন টেইলর। আইসিসির কোড অব কন্ডাক্ট ভেঙে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে অবসরও ভেঙে ফিরে আসার ঘোষণা দেন তিনি। বৃহস্পতিবার বুলওয়েতে ব্যাট করতে ক্রিজে গিয়েই রেকর্ড গড়ে ফেলেন এই ব্যাটার।
২০০৪ সালে অভিষেকের পর তিনি এখন একুশ শতকে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সক্রিয় ক্যারিয়ারের অধিকারী। এর আগে এই রেকর্ড ছিল বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমের।
৩৯ বছর বয়সী টেলর ২০০৪ সালের মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক করেন। বুলাওয়েতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে তার চলতি টেস্টে খেলায় তার ক্যারিয়ার এখন ২১ বছর এবং ৮৪ দিন দীর্ঘ হয়েছে। এর আগে সক্রিয় ক্রিকেটারদের মধ্যে বাংলাদেশের মুশফিকুরের রেকর্ড ছিল ২০ বছর এবং ৩৩ দিনের।
আধুনিক যুগে কেবল শচীন টেন্ডুলকারেরই (২৪ বছর) এর চেয়ে দীর্ঘ টেস্ট ক্যারিয়ার ছিল, আর এখন টেলর এই শতকে অভিষেক হওয়া সক্রিয় ক্রিকেটারদের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন। এই তালিকায় তার পরেই আছেন ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসন।
২০২১ সালে এই অভিজ্ঞ তারকা অবসর নিয়েছিলেন। তখন তিনি জানান যে, ম্যাচ ফিক্সাররা তার কোকেন ব্যবহারের বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করছিল। পরে তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি মাদক ও অ্যালকোহল আসক্তিতে ভুগছিলেন। ২০২২ সালের শুরুর দিকে যখন তার ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয় তখন তিনি পুনর্বাসন কেন্দ্রে যান।
ম্যাচের আগে এক আবেগঘন সাক্ষাৎকারে টেলর বলেন, 'তিন বছর আগে আমি বিছানা থেকে উঠতে পারতাম না। এখন আমি সেই কাজ করছি যা আমি ভালোবাসি - জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধিত্ব করা। বহু দিন আমি মানসিক আঘাতের মধ্যে ছিলাম। আমি যেন এক গভীর খাদে পড়ে গিয়েছিলাম।'
সহখেলোয়াড়দের উষ্ণ অভ্যর্থনার মাধ্যমে টেলরকে তার পুরনো ৩৬তম টেস্ট পরিয়ে দেয়া হয়। ব্যাটিং লাইনের দুর্বলতা কাটিয়ে তোলার জন্য ওপেনার হিসেবে তাকে মাঠে নামানো হয়েছে। তিনি এই মুহূর্তটিকে 'অভিষেকের মতো অনুভূতি' বলে বর্ণনা করেন। এই প্রত্যাবর্তনের সময় তার ওজন প্রায় ২০ কেজি কম এবং তিনি তার ক্যারিয়ারের সেরা শারীরিক অবস্থায় আছেন।
টেইলর বলেন, 'পরিবারকে হতাশ করার অনুশোচনা সব সময়ই ছিল। কিন্তু তাদের এবং জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সমর্থন আমাকে দ্বিতীয় সুযোগ দিয়েছে।'
নিষেধাজ্ঞার সময় টেলর একটি ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টার খুলেছিলেন। তার আশা ছিল কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। কিন্তু ২০২৭ সালের বিশ্বকাপকে সামনে রেখে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তাদের উৎসাহে তিনি আবার খেলার জগতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রত্যাবর্তন টেস্ট ভালো শুরু পান টেইলর। ১০৭ বলে খেলেন ৪৪ রানের ইনিংস। তবে বাকিরা ব্যর্থ হলে জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে যায় ১২৫ রানে।
Comments