বাগেরহাটে পোনা সংকট-বৃষ্টিজনিত রোগে ক্ষতির মুখে চিংড়ি চাষি

বাগেরহাটের একটি চিংড়ি ঘের। ছবি: পার্থ চাক্রবর্তী

দেশের শীর্ষ চিংড়ি উৎপাদনকারী জেলা বাগেরহাটে চলতি মৌসুমে চিংড়ি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। জেলায় মৌসুমের শুরুতে মানসম্মত পোনার সংকট ও টানা বৃষ্টিতে রোগ ছড়িয়ে পড়ায় চিংড়ি মারা যাচ্ছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা।

চাষিরা জানান, এ বছর উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক কম। ফলে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে আছেন।

কচুয়া উপজেলার কলমিবুনিয়া গ্রামের রসুল শেখ বলেন, আগে একেকবারে ১০ থেকে ১২ কেজি বা ২০ কেজি পর্যন্ত চিংড়ি উঠলেও এখন মাত্র সর্বোচ্চ এক কেজির মতো চিংড়ি মিলছে।

'প্রথম দফায় সব চিংড়ি মরে গেছে, দ্বিতীয় দফায় যে পোনা ছেড়েছি তা বড়ই হচ্ছে না,' বলেন তিনি।

সাংদিয়া গ্রামের জাফর শেখ ও গোপাল দাস জানান, এ বছর চিংড়ির পোনা ঘেরে ছাড়ার পরপরই মারা যাচ্ছে।

তাদের ভাষ্য, 'আমরা পুরো বিনিয়োগ হারিয়েছি, এখন টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।'

জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির তৌহিদুর রহমান সুমন জানান, চিংড়ি মরার কারণ জানতে চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

তিনি দাবি করেন, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাব আছে কি না, তা তদন্ত করা প্রয়োজন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'পানির স্বল্পতা, অস্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং টানা বৃষ্টিপাতের কারণে লবণ পানির চিংড়ি মারা যাচ্ছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে পানির লবণাক্ততা কমে গেছে, যা বাগদা চাষে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।'

চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, 'রোগ শনাক্তে আক্রান্ত ঘের থেকে পানি ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।'

'পোনার মান খারাপ হলে যতই ব্যবস্থাপনা নেওয়া হোক, ভালো ফল পাওয়া সম্ভব নয়,' বলেন তিনি।

সরকারি হিসাবে, বাগেরহাটে ৫১ হাজার ১৫৯ হেক্টর জমিতে ৪৬ হাজার ৩১৩টি বাগদা চিংড়ি ঘের রয়েছে। গত অর্থবছরে জেলায় ২০ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন বাগদা চিংড়ি উৎপাদিত হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Milestone survivors trauma healing

A path to trauma healing for Milestone survivors

Instead of conventional class activities, children should spend more time engaging in age-appropriate games and creative art.

4h ago