রূপ রুটিন

সপ্তাহের প্রতিটি দিনই ব্যস্ততার। তবে তার মাঝেও রূপচর্চায় যদি কিছুটা সময় ব্যয় করি তাহলে নিজেরই লাভ। ৭ দিনে নিয়মিত রূপচর্চায় আপনি হয়ে উঠুন অপরূপা। সামনে ঈদ, তাই নিজের প্রতি খেয়াল রাখুন সপ্তাহের সাতটি দিনই।

সপ্তাহের প্রতিটি দিনই ব্যস্ততার। তবে তার মাঝেও রূপচর্চায় যদি কিছুটা সময় ব্যয় করি তাহলে নিজেরই লাভ। ৭ দিনে নিয়মিত রূপচর্চায় আপনি হয়ে উঠুন অপরূপা। সামনে ঈদ, তাই নিজের প্রতি খেয়াল রাখুন সপ্তাহের সাতটি দিনই।
আমাদের প্রত্যেকের ত্বকের ধরন কিন্তু আলাদা, শুল্ক, তৈলাক্ত, স্বাভাবিক বা মিশ্র। ত্বকের ধরন অনুযায়ী তাই পরিচর্যাও হবে ভিন্ন। সপ্তাহের প্রথম দিনটাতে শুরু করুন বেসিক স্কিন কেয়ার অর্থাৎ ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং দিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করুন। যাদের ত্বক শুষ্ক তারা মুখ পরিষ্কার করার জন্য ক্লিনজিং ক্রিম ব্যবহার করুন। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে ক্লিনজিং জেল ব্যবহার করতে পারেন। মুখ পরিষ্কার করার পর তুলোয় টোনার নিয়ে ভালোভাবে মুখ মুছে নিন। এবার কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে মুখে ও গলায় কোনো ভালো ময়েশ্চারাইজার বা নারিশিং ক্রিম লাগিয়ে হালকা হাতে আপওয়ার্ড ও আউটওয়ার্ড স্ট্রোকে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। ময়েশ্চারাইজার ত্বক হাইড্রেটেড রাখে। গোলাপজল, গ্লিসারিন ও অ্যালোভেরা জুস একসঙ্গে মিশিয়ে বাড়িতেও ময়েশ্চারাইজার তৈরি করে নিতে পারেন। দিনের বেলা বাইরে বেরোলে অবশ্যই ১৫-২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে নিন। দিনের শেষেও ঘুমাতে যাওয়ার আগে আরো একবার ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে নারিশিং নাইট ক্রিম লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন।


 বেসিক স্কিন কেয়ারের সঙ্গে সঙ্গে স্ক্র্যাবিং জরুরি। তাই সারাদিনে কাজের মাঝে একটু সময় বের করে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে কোনো ভালো কোম্পানির মাইল্ড স্ক্র্যাবার লাগিয়ে ভেজা হাতে সার্কুলার মুভমেন্টে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের মরা কোষ চলে যাবে। ফলে ত্বক আগের চেয়ে ফ্রেশ ও উজ্জ্বল হবে। চালের গুঁড়ো, দই ও সামান্য মধু মিশিয়ে ঘরে স্ক্র্যাবার তৈরি করে নিতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল নিয়ে অনামিকা দিয়ে চোখের চারপাশে লাগিয়ে এক মিনিট ম্যাসাজ করুন। চোখের চারপাশের চামড়া ভালো থাকবে। ডার্ক সার্কেলের সমস্যা থাকলেও কমে যাবে।
 তৃতীয় দিনে মুখ পরিষ্কার করার পর স্টিম নিন। একটা বড় কাচের পাত্র নিন। দু’কাপ গরম পানি এরপর একটা বড় তোয়ালে মাথায় চাপা দিয়ে স্টিম নিন। এভাবে পাঁচ মিনিট থাকুন। ত্বকের ভেতর থেকে সব দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে। এবার পরিষ্কার শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে হালকা হাতে ক্রিম লাগান। সন্ধ্যায় চন্দনবাটা ও গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগান। শসা স্লাইস করে চোখে রেখে ঘুমিয়ে থাকুন ১০-১৫ মিনিট। শুকালে ধুয়ে ফেলুন।
রূপচর্চার জন্য ২০ মিনিট সময় দিন। বেসিক স্কিন কেয়ারের পর ফেস প্যাক লাগান। পাকা কলা চটকে নিয়ে এর সঙ্গে ২ টেবিল চামচ মধু, ২ টেবিল চামচ গ্লিসারিন, একটা ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিন। রিল্যাক্স করুন এভাবে কিছুক্ষণ। ১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বক একেবারে চকচকে ও মসৃণ হয়ে উঠবে।


প্রতিদিনের মতো পঞ্চম দিনেও মুখ পরিষ্কার করে টোনার ও ময়েশ্চারাইজার তো লাগাবেনই, সঙ্গে একবার স্ক্র্যাবিং করুন। স্ক্র্যাবিংয়ের পর ফেস মাস্ক লাগাতে পারেন। আপেল সামান্য সেদ্ধ করে নিন। এর সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ, গ্লিসারিন, লেবুর রস মিশিয়ে মুখে, গলায় লাগিয়ে নিন। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা মুলতানি মাটির সঙ্গে সামান্য গোলাপজল ও টমেটোর রস মিশিয়ে মুখে, গলায় লাগাতে পারেন। ভেজানো তুলো চোখে দিয়ে শুয়ে রিল্যাক্স করুন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। শেষে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ছুটির দিন রাতে নিজেকে একটু সময় বেশি দিন। মুখের পাশাপাশি হাত-পায়ের ত্বকের একটু যতœ নিন। গোসলের আগে হারবাল অয়েল দিয়ে শরীর ভালো করে ম্যাসাজ করুন। যাদের সানট্যানের সমস্যা আছে তারা বেসনের সঙ্গে অল্প দই, মধু, হলুদবাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রাখুন। এবার গোসল করে নিন। হাত-পায়ের ত্বক নরম, মসৃণ ও উজ্জ্বল হবে। গোসলের পর মুখ, গলা, ঘাড়, হাত ও পায়ে ভালো করে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম লাগিয়ে নিন। রাতে শোবার আগে ১৫-২০ মিনিট হালকা গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখুন। তারপর লোশন মেখে ম্যাসাজ করুন।
সপ্তাহে একটি দিন পার্লারে ফেসিয়াল করাতে যেতে পারেন। যাওয়ার সময় না থাকলে বাড়িতেই ম্যাসাজ ক্রিম দিয়ে ফেসিয়াল করে নিন। ম্যাসাজের ফলে আপনার ত্বকের ওপর জমে থাকা মরা কোষ দূর হওয়ার পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে, ত্বকের জেল্লা বাড়বে। এভাবে সাত দিনের রূপ রুটিন মেনে চলে হয়ে উঠুন ঈর্ষণীয় ত্বকের অধিকারী।
 রাহনুমা শর্মী
মডেল : পূজা
মেকআপ অ্যান্ড স্টাইলিং : হারমনি স্পা ক্লিওপেট্রা বিউটি স্যালন
ছবি : শাহরিয়ার কবির হিমেল

 

Comments

The Daily Star  | English

Will there be any respite from inflation?

To many, especially salaried and fixed-income individuals, this means they will have no option but to find ways to cut expenditures to bear increased electricity bills.

6h ago