সাজে ও সজ্জায়

ঘরের যে কোনো কর্নারে টবের গাছ সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পারেন। একটু নান্দনিক করতে চাইলে সুন্দর ডিজাইনের মাটির টব খুঁজে নিতে পারেন...

ঘরের যে কোনো কর্নারে টবের গাছ সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পারেন। একটু নান্দনিক করতে চাইলে সুন্দর ডিজাইনের মাটির টব খুঁজে নিতে পারেন...


যতই দিন যাচ্ছে ততই মানুষের চিন্তাধারা, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হচ্ছে। একসময় ঈদ মানেই ভাবা হতো নতুন কাপড় কেনার ধুম। নতুন জামা সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখে ঈদের দিন সকালে স্নান শেষে জামা পরে বের হওয়ার আনন্দটাই ছিল ঈদের মূল তখন। এখনো সেই আনন্দটা হারিয়ে না গেলেও তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরো নতুন কিছু। শুধু নতুন জামার সাজই নয়, বরং তার সঙ্গে জুড়েছে পার্লারে যাওয়া, মেহেদি রাঙানো, দিন-রাতের ভিন্নধর্মী সাজ, অন্দরসজ্জা আরো কত কী! তাই শুধু সাজ-পোশাক নয়, তার সঙ্গে অন্যান্য সবকিছু মিলিয়েই রইল এবারের ঈদ পরামর্শ। অন্দরসজ্জা ও টুকিটাকি
ঈদের দিন অতিথিরা যেন শুধু আপনার বাহারি সাজে মুগ্ধ না হয়ে বরং বাড়ির অন্দর ও বাইরেটা দেখে গৃহকর্ত্রীর রুচিশীলতার পরিচয় পান সেদিকটা খেয়াল রাখুন। এজন্য বিশেষ কিছু প্রস্তুতি মাথায় রাখা ভালো।

রেস্তোরাঁর পার্শ্ববর্তী একটি ভবন থেকে তোলা ছবি রেস্তোরাঁর পার্শ্ববর্তী একটি ভবন থেকে তোলা ছবিরেস্তোরাঁর পার্শ্ববর্তী একটি ভবন থেকে তোলা ছবি রেস্তোরাঁর পার্শ্ববর্তী একটি ভবন থেকে তোলা ছবি

১. ঈদের এক সপ্তাহ আগে ঘরের পর্দা, বেডকভার, কুশন কভার, ঘরের ম্যাট, কার্পেট ইত্যাদি ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখুন। চাইলে ঈদ উপলক্ষে নতুন এক সেট পর্দা ও সোফার কভারও বানিয়ে রাখতে পারেন, যা উৎসবের জন্যই তোলা থাকবে। ঘরের ঝুল, ফ্যান, লাইট, কিচেন ক্যাবিনেট, জানালা-বারান্দার গ্রিল, দরজার কারুকাজ, সিঁড়ি ইত্যাদি আগেই পরিষ্কার করে বাড়িকে একদম ঝকঝকে করে রাখুন।
২. ঈদের দু’দিন বা তিনদিন আগে বাড়ির প্রতিটি টয়লেট ভালো করে মেজেঘষে রাখুন। টয়লেটের আনুষঙ্গিক যেমন- টয়লেট পেপার, লিকুইড সোপ ইত্যাদি প্রয়োজনে নতুন করে কিনে টয়লেটে ঈদের আগের দিন গুছিয়ে রাখুন। কিছু তাজা ফুল কিংবা লতানো প্ল্যান্ট টয়লেটের বেসিন কিংবা শেলফে রেখে দিলে নজর কাড়বে।
৩. বারান্দায়, সিঁড়িতে কিংবা ঘরের দরজার পাশে কিংবা ঘরের যে কোনো কর্নারে টবের গাছ সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পারেন। একটু নান্দনিক করতে চাইলে সুন্দর ডিজাইনের মাটির টব খুঁজে নিতে পারেন আড়ং কিংবা যে কোনো মাটির তৈজসপত্রের দোকান থেকে। টবের পাশে দু-একটা মাটির শোপিস কিংবা মাটির ল্যাম্প রেখে দিলে কর্নারের চেহারাই বদলে যাবে। আজকাল দেয়ালে ঝোলানো ছোট ছোট টব কিনতে পাওয়া যায়। বারান্দায় ঝুলিয়ে কিছু লতানো গাছ রেখে দিলে বৈচিত্র্য আসবে।
৪. বিশেষ দিনে অতিথিদের জন্য আমরা অনেকেই বিশেষ ক্রোকারিজ ব্যবহার করে থাকি। ঈদের আগেই যদি গ্লাস প্লেটগুলো নামিয়ে ধুয়ে-মুছে রেখে দেয়া যায়, তাহলে আর ঈদের দিনে তাড়াহুড়ো হয় না।
৫. ঘর যতই গুছিয়ে রাখুন না কেন শিশুরা তা এলোমেলো করবেই। সম্ভব হলে একটি ঘর শিশুদের খেলার জন্য বিশেষভাবে খেলনা দিয়ে একটু গুছিয়ে রেখে দিলে শিশুরা সে ঘরেই খেলাধুলা করতে পছন্দ করবে। ফলে অন্যান্য ঘর অগোছালো হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
৬. অতিথিরা বাড়িতে এলে তাদের আমরা প্রথমেই বসার ঘরে বসাই। তাই এই ঘরটিকেই সাজানোর ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া উচিত। সোফার কভার, কুশন কভার, পর্দা ইত্যাদি ধুয়ে ইস্ত্রি করে আগেই গুছিয়ে নিতে হবে। বসার ঘরে উৎসবের ছোঁয়া আনতে উজ্জ্বল রঙের পর্দা, কভার ব্যবহার করে ঘরকে আকর্ষণীয় করা যায়। শোপিস, ওয়াল হ্যাঙ্গিং ইত্যাদি আগেই মুছে রাখতে হবে। ক্রিস্টাল কিংবা পিতলের শোপিসগুলোর একটু আলাদা যতেœর প্রয়োজন ঝকঝকে করে তুলতে। ঈদের দিন বসার ঘরে হালকা এয়ার ফ্রেশনারের সুবাস কিংবা ক্রিস্টালের সুন্দর ভাসে একগুচ্ছ তাজা ফুলের সুঘ্রাণ অতিথির মনকে ভরিয়ে তুলবে ভালোলাগায়।
৭. বসার ঘরের পরেই আসে খাবার ঘর। শুধু মুখরোচক খাবার রান্না করলেই হয় না, বরং তা পরিবেশনের দিকেও নজর দেয়া জরুরি। সেই সঙ্গে খাবার ঘরটিও হোক নান্দনিক। ঈদের দিন টেবিলে সুন্দর একটি কভার বিছিয়ে তার ওপর উজ্জ্বল রঙের ‘রানার’ বিছিয়ে দিন। সুন্দর ম্যাটের ওপর প্লেট-গ্লাসগুলো গুছিয়ে রেখে টেবিলের মাঝে বসিয়ে দিন একটি তাজা ফুলের ভাস কিংবা রাতের অতিথির জন্য কারুকার্যময় ক্যান্ডেল স্ট্যান্ড। যদি অতিথির সংখ্যা বেশি হয়, তাহলে অনায়াসে ‘বুফে’ লাঞ্চ কিংবা ডিনারের ব্যবস্থা করে বৈচিত্র্য আনতে পারেন। এতে করে সবাইকে প্লেটে তুলে দেয়া, সবার বসার ব্যবস্থা করার ঝামেলা খুব সহজেই এড়ানো যায় আবার যথেষ্ট আধুনিকও হয়।
৮. এরপর আসি শোবার ঘরে। উজ্জ্বল বেডকভারে ঘরে আসবে উৎসবের ছোঁয়া। সেইসঙ্গে বিছানায় রাখুন কিছু বাড়তি কুশন, বিভিন্ন রঙ এবং শেপের। ঘরের মেঝেতে উজ্জ্বল রঙের ম্যাট বিছাতে পারেন। শিশুদের ঘরের জন্য আজকাল নানারকম কার্টুন আঁকা পর্দা, বেডকভার পাওয়া যায়। এ রকম কিছু শিশুদের ঘরের জন্য নির্বাচিত করে তার ওপর বিছিয়ে রাখুন মজার কিছু কুশন কিংবা পুতুল। পড়াশোনার যাবতীয় কিছু শেলফে তুলে রাখাই ভালো। থাকুক না দু’দিন এভাবেই। এতে ঘর আরো পরিপাটি দেখাবে।
৯. টিস্যু বক্স, এয়ার ফ্রেশনার আর কিছু জরুরি ওষুধ, যেমন- জ্বর, পেটখারাপ ইত্যাদির জন্য ওষুধ আগেই মজুদ করে রাখুন। এতে করে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেও হাতের কাছেই পাবেন ওষুধ যে কোনো সময়।  

 

Comments

The Daily Star  | English

The invisible ones

Of the over 7 crore people employed in Bangladesh, 85 percent (nearly 6 crore) are vulnerable as they work in the informal sector, which lacks basic social and legal protection, and employment benefits.

6h ago