মন্ত্রীর সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টা

আগেই সবকিছু ঠিক করা ছিল। যথারীতি সকাল ৭টায় ঢাকা থেকে প্লেন ছাড়ল সৈয়দপুরের উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছে দেখলাম যথারীতি বিশাল লোকসমাগম। নীলফামারীর একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সংস্কৃতিকর্মী দীপক, যিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খুবই সোচ্চার ছিলেন। সেদিন সকালেই তিনি মারা গেছেন।

আগেই সবকিছু ঠিক করা ছিল। যথারীতি সকাল ৭টায় ঢাকা থেকে প্লেন ছাড়ল সৈয়দপুরের উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছে দেখলাম যথারীতি বিশাল লোকসমাগম। নীলফামারীর একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সংস্কৃতিকর্মী দীপক, যিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খুবই সোচ্চার ছিলেন। সেদিন সকালেই তিনি মারা গেছেন। তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী। এয়ারপোর্ট থেকে সেখানে যাত্রা। এরপর একের পর এক কর্মকা-Ñ বৃক্ষমেলা উদ্বোধন, হাসপাতাল সংস্কারের মিটিং, কলেজের অনুষ্ঠান সবকিছু চলতে থাকে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৩টাতেও দর্শনার্থী, অনুষ্ঠান শেষ হয় না। এই ছিল নীলফামারীতে একটা দিনে বর্তমান সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের কর্মব্যস্ততা।
আমরা যখন ঠিক করলাম নূর ভাইকে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা করব। আগেই ভেবে রেখেছিলাম তার নির্বাচনী এলাকায় আমরা যাব। সত্যি সত্যি দেখতে চাই কী রকম করে তিনি সেখানে সময় কাটান। কীভাবে তিনি কর্মব্যস্ত থাকেন। বয়সে নূর ভাইয়ের আমি অর্ধেক। কিন্তু তার কর্মচাঞ্চল্য, ধৈর্য আর ক্লান্তিহীন তার কর্মব্যস্ততা। আমি এই বয়সে তার কাছে হার মেনেছি। রাত ১০টার মধ্যে ঘুমাতে চলে গেছি। দিনেরবেলা বিশ্রাম নিয়েছি। কিন্তু শুনেছি বিরামহীন নূর ভাইয়ের অনুষ্ঠান রাত ৩টাতেও শেষ হয় না।
 আবার ঠিক ভোরে ঘুম থেকে উঠে গেছেন। দর্শনার্থীদের সঙ্গে দেখা করা। ভোর ৫টা থেকে তারা আসতে শুরু করেন। কারো মেয়ের বিয়ে, শারীরিক অসুস্থতা, শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য, কারো থাকার জায়গা নেইÑ এমন কোনো আর্জি নেই যে সেটা নিয়ে তারা আসেন না।
এগুলো সব নূর ভাই মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সাধ্যমতো সাহায্য করার চেষ্টা করেন। আমাদের সবার যেমন ধারণা হয়েছে, মন্ত্রীরা যখন ক্ষমতায় চলে যান তখন তারা সেভাবে সাধারণ মানুষের কাছে আসেন না। তাদের কথা শোনেন না। এই কথাটা নূর ভাইয়ের ক্ষেত্রে সত্য নয়। সেটা আমরা চাক্ষুষ দেখেছি এটা বলতে পারি। এটা আমি হলফ করে বলতে পারি, খুব কমসংখ্যক লোকই নূর ভাইয়ের মতো এমনটি করে থাকেন। পুরোটা সময় তিনি জনগণের জন্য ব্যয় করেন। হয়তো সেই কারণেই তিনি এতটা জনপ্রিয় হয়েছেন এবং রাজনীতিতে খুব অল্প সময়ে শক্ত অবস্থানে চলে গেছেন। তাকে যে সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে পেয়েছি, যার সত্যিকারের দায়িত্ব পাওয়া উচিত তিনিই পেয়েছেন এবং তিনি সেই দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করছেন। সরকার এমন একজন মানুষকেই দায়িত্ব দিয়েছে।
নূর ভাইয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এর আগেও একটা লেখায় লিখেছি। যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি তখন প্রথম তার সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নাটক করার সুযোগ ঘটে। তখনো দেখেছি বড় ভাইয়ের মতো দায়িত্ব নিয়ে সবকিছু করতেন। তখন অনেক দিন ধরে রিহার্সেল হতো একটা নাটকের। একটা পরিবারের মতো ছিল সবাই। সবাই সবার প্রতি খেয়াল রাখত। নূর ভাই প্রতিদিন আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যেতেন এবং পৌঁছে দিতেন। এতটুকু দায়িত্ব কয়জনইবা নেয়? আমার মনে হয় জীবনে যারা ছোট ছোট দায়িত্ব নিতে পারেন, তারা শুধু বাইরের লোকের নয়, তার নিজের সংসার, কাজের ক্ষেত্রে, অভিনয় জীবনে, ব্যবসায় সবক্ষেত্রে কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব নিতে পারেন নূর ভায়ের মতো। সংস্কৃতিকর্মীদের নূর ভাইয়ের প্রতি অনেক আশা, অনেক ভরসা। আমরা জানি অনেক প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে তাকে যেতে হয়। যতটুকু তাকে জানি, তাতে এতটুকু বুঝি তার সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। তিনি আমাদের সংস্কৃতিকে অনেক দূর নিয়ে যাবেন সারাবিশ্বেÑ এটা আমাদের বিশ্বাস।

রাফি হোসেন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক

 

Comments

The Daily Star  | English
World Press Freedom Day 2024

Has Bangladesh gained anything by a restrictive press?

The latest Bangladesh Bank restriction on journalists is anti-democratic, anti-free press and anti-public interest.

7h ago