জ্যোতিষীর কারণে প্রেমিকা ছেড়ে অন্যজনকে বিয়ে করলেন শাকিব

Dhumketu

ধূমকেতু

পরিচালক: শফিক হাসান

অভিনয়: শাকিব খান, পরীমণি, অমিত হাসান, আলী রাজ ও দিতি

দুর্বলতা: গল্প

দৈর্ঘ্য; ২ ঘণ্টা ৮ মিনিট

 

একই গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির ছেলে শাকিব খান। তিনি ছোটবেলায় শহর থেকে গ্রামে আসা চৌধুরী পরিবারের একটা উপকার করেন। তারপর পেরিয়ে যায় অনেক বছর। উপকার করা ছেলেটা বড় হয়ে হোন শাকিব খান। আর যাদের উপকার করেন সেই চৌধুরী সাহেবের  (আলীরাজ ) মেয়ে বড় হয়ে পরীমণি।

একদিন কলেজের সামনে গুণ্ডারা ধরে নিয়ে যেতে চায় তাকে। সেখান থেকে বাঁচান শাকিব খান। তাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিতে বলেন পরীমণি। বাড়িতে এসে চৌধুরীকে দেখে চিনতে পারেন, ছোটবেলার উপকারের কথাটা মনে করিয়ে দেন।

চৌধুরী সাহেব তাকে অন্য কোথাও না থেকে নিজের বাড়িতে থাকতে বলেন। ধীরে ধীরে  চৌধুরীর মেয়ে পরীমণির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টা জানাজানি হলে পরীমণির মা দিতি শাকিবকে অন্য জায়গায় বাসা নিতে বলে।

এদিকে  চৌধুরী সাহেবের পরিচিত আরেক ব্যবসায়ী অমিত হাসান পছন্দ করে পরীমণিকে। বিভিন্নভাবে খারাপ মানুষ হিসেবে পরিচিত করাতে চান শাকিব খানকে।

একদিন জ্যোতিষীর কাছে হাত দেখাতে যান শাকিব খান ও পরীমণি। হাত দেখে জ্যোতিষী বলেন তার বৌ ভাগ্য ভালো যাবে না। প্রথম বউ বেশিদিন বাঁচবে না। পরের বউয়ের সঙ্গে সম্পর্কটা স্থায়ী হবে।

ভয় পেয়ে অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে কারার পরিকল্পনা করেন শাকিব খান। তাকে খুঁজেও পান তিনি।

শাকিব খান চান প্রথম বউ অল্পদিনে  মারা যাবার পর পরীমণিকে চির জীবনের জন্য পাবেন। এখানেই এলোমেলো হয়ে যায় সবকিছু। এদিকে চৌধুরী সাহেব পরীমণির বিয়ে ঠিক করেন অমিত হাসানের সঙ্গে। অবশেষে সবকিছুর সমাধান হয়।

এমন একটা সামাজিক প্রেমের গল্প নিয়ে যে সিনেমা এর নাম কেন ধূমকেতু রাখা হলো সেটা ঠিক বোধগম্য নয়। নামকরণের কোন সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি সিনেমার শেষ পর্যন্ত। অ্যাকশন সিনেমা হলে হয়তো একটা জায়গা থাকতো নামটা রাখার।

‘ধূমকেতু’ সিনেমার গল্পটা প্রথমদিকে ঠিকমতো এগিয়ে যাচ্ছিলো। বিরতির পর হঠাৎ করে কেমন  জানি অগোছালো হয়ে উঠলো। গল্পের  খেই হারিয়ে ফেললেন পরিচালক। এই গল্পটা ঠিকমতো সাজাতে পারলে একটা কিছু হতে পারতো। বাংলা সিনেমার যে মানসম্পন্ন কাহিনীকারের অভাব সেটা টের পাওয়া গেলো আরেকবার। সংলাপগুলো খুব সাদামাটা। চিত্রায়ণে তেমন মুনশিয়ানা খুঁজে পাওয়া যায়নি। লোকেশন নির্বাচনে মনোযোগ ছিলো।

সিনেমার প্রতিটা গান শ্রুতিমধুর ছিলো। গান নির্বাচনের জন্য একটা ধন্যবাদ পেতেই পারেন পরিচালক।

প্রয়াত অভিনেত্রী দিতির শেষ সিনেমা ‘ধূমকেতু’। তিনি বরাবরই যেমন প্রাণবন্ত অভিনয় করতেন ঠিক তেমনটিই করেছেন। মমতাময়ী মায়ের চরিত্রে মন ছুঁয়ে গেছেন সবার। শাকিব খান খুব একটা মন্দ ছিলেন না। তবে দীর্ঘ সময় নিয়ে শুটিং করেছেন সেটা স্পষ্ট বোঝা গেছে।

কোন ধারাবাহিকতা ছিলো না কস্টিউম ও হেয়ারকাটে। এক দৃশ্যে বড় চুল দেখা গেলে পরের দৃশ্যে ছোট চুলে হাজির হয়েছেন যা ভীষণ বিরক্তির জন্ম দিয়েছে। বিরতির পর শাকিব খানের ডাবিং অন্যজন করেছেন এবং খুব অদক্ষ কেউ করেছেন, যা হাস্যকর লেগেছে।

পরীমণি প্রথম থেকেই সাবলীল থাকার চেষ্টা করেছেন। অভিনয় করেছেন সুন্দর। কয়েকটি অভিনয় দৃশ্য ও গানগুলো নজর কেড়েছে দর্শকদের। তবে শেষ পর্যন্ত গল্পটায় ডুবিয়ে দিয়েছে।

Comments