সেদিন দু’জনে

ছবি: সংগ্রহ

মানুষ জন্ম থেকেই একা থাকতে পছন্দ করে না। জড়িয়ে থাকে কোনো না কোনো বাঁধনে কিংবা সম্পর্কে। একটি সম্পর্ক নতুন হোক কিংবা পুরনো সেটাকে টিকিয়ে রাখতে ও নিজেদের মধ্যে ভালোবাসাকে গভীর করে তোলার জন্য মানুষ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে দূরে বা কাছে কোথাও ঘুরে বেড়ানো। খুব নিরিবিলি কোনো সবুজ সমারোহে একান্তে কিছু সময় দেয়া-নেয়া আর নিজের সঙ্গী বা প্রিয়জনের সঙ্গে পাশাপাশি হেঁটে চলা, কিছু সুন্দর স্মৃতি ধরে রাখার চেষ্টা করে। ঢাকার ভেতরে রয়েছে বেশ কিছু জায়গা, যেখানে একটু সময় নিয়েই ঘুরে আসতে পারেন প্রিয়জনকে নিয়ে, কাটাতে পারেন কিছুটা সময় বিশেষ কোনো দিনে

 

ধানমণ্ডি লেক (রবীন্দ্র সরোবর)

প্রিয়জনের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানোর জন্য ধানমণ্ডি লেক একটি চমৎকার জায়গা। ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে নেমে একটু ভেতরে হাঁটলেই ধানমণ্ডি লেক। তিনটি ছোট ছোট দ্বীপসহ পাঁচটি ব্র্রিজ রয়েছে, যেখানে ঘুরতে আসা জুটি কিংবা তরুণ-তরুণীরা সময় কাটান। লেকের তীর ঘেঁষা রবীন্দ্র সরোবর অসংখ্য প্রেমের সাক্ষী হয়ে থাকছে প্রতিদিন।

চন্দ্রিমা উদ্যান

বিশাল জায়গা নিয়ে বিস্তৃত চন্দ্রিমা উদ্যান। মনোমুগ্ধকর উদ্যানে প্রিয়জনকে নিয়ে কিছুটা সময় কাটানো, পাশাপাশি হেঁটে অব্যক্ত কথা বলার জন্য চমৎকার এর আবহ। ঠিক জাতীয় সংসদের পেছনে শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এই উদ্যান, যার অন্য পাশে রয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, ভাসানী নভো থিয়েটার ও জাতীয় সামরিক জাদুঘর। সবুজ সমারোহে সুশীতল বাতাসে পাখির কিচিরমিচির শব্দে নিজেকে কাছের মানুষটির কাছে মেলে ধরার জন্য সময় করে একদিন ঘুরে বেড়িয়ে যেতে পারেন।

হাতিরঝিল

কোলাহলপূর্ণ যানজটের এই শহরে হাতিরঝিল যেন এক প্রশান্তির স্থাপত্য। ঝিলের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন অসংখ্য তরুণ-তরুণীর মেলা বসে এই ঝিলে। হাতিরঝিল ইতোমধ্যেই যোগ হয়েছে চক্রাকার বাস সেবা ও ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস। চক্রাকার কিংবা ওয়াটার ট্যাক্সিতে চড়ে কথায় কথায় হালকা করে নিতে পারেন সম্পর্কের পুরনো টানাপড়েন। হাতিরঝিলের দিন ও রাতের শোভা আপনার সম্পর্কে এনে দিতে পারে নতুন মাত্রা।

আফতাবনগর

রামপুরা ব্রিজ থেকে নেমে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে দিয়ে হেঁটে বা রিকশায় আপনি ঢুকে যেতে পারেন আফতাবনগরে। শরতে এর সৌন্দর্য ব্যাখ্যাতীত। তখন কাশফুলের মেলা বসে। চুলের খোঁপায় কাশফুল গুঁজে দিয়ে আপনি প্রকাশ করতে পারেন মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা অনুভূতি। বিশাল সাদা মেঘের ভেলা ভাসা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে কাশবনের গভীরতাকে সাক্ষী রেখে আপনার ভালোবাসাটাকে আরো অমর করে তুলতে পারেন।

রমনা

পহেলা বৈশাখ মানে রমনার বটমূলে শাড়ি, পাঞ্জাবিতে সুসজ্জিত হয়ে তরুণ-তরুণীরা ইলিশ-পান্তার স্বাদ নেন। কিন্তু সারা বছরই আপনার খুব কাছের কাউকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সেখানে। কাটাতে পারেন এই সবুজের সান্নিধ্যে। বিশাল বিশাল গাছের নিচে বসে নিজেদের মধ্যে একান্তে কিছু সময় স্মৃতিতে অমলীন করে রাখতে পারেন।

লালবাগ কেল্লা

লালবাগ কেল্লা হতে পারে সম্পর্ককে ঐতিহাসিক করে রাখার জন্য অন্যতম সেরা স্থাপত্য। যুগে যুগে নানা বয়সের মানুষের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে এই দুর্গ। এছাড়াও বাংলাদেশের অতীত ইতিহাস ও ঐহিত্য নিয়ে সন্ধ্যা বেলার লাইট শো উপভোগ হতে পারে প্রিয়জনের সঙ্গে অনেক ভালো সময় কাটানোর চমৎকার উপলক্ষ।

আহসান মঞ্জিল

পুরান ঢাকায় অবস্থিত আহসান মঞ্জিলে ঘুরে আসা যেতেই পারে। চারপাশের উঁচু বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা এই মঞ্জিলের সামনে রয়েছে নানা প্রজাতির ফুলের বাগান, যা এই প্রজন্মের তরুণ-তরুণীকে মোহিত করে তুলবে। সন্ধ্যা বেলার লাইট শো, ভেতরের নান্দনিক আসবাবপত্র দেখে ভালো একটা সময় পার করতে পারেন।

জাতীয় চিড়িয়াখানা

জীব-বৈচিত্র্যের রূপ খুব কাছ থেকে দেখতে চাইলে দু’জনে মিলে ঘুরে আসতে পারেন মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানায়। মিরপুর ১ নম্বর থেকে একটু ভেতরে অবস্থিত এই চিড়িয়াখানা নানা বয়সের মানুষের দারুণ একটা অভিজ্ঞতার জায়গা। চিড়িয়াখানার জীববৈচিত্র্য আর প্রকৃতির বিশালতায় কাটবে সুন্দর সময়। কে বলতে পারে সম্পর্কও হয়তো পরিণতির লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারে।

বোটানিক্যাল গার্ডেন

গাছগাছালির বৈচিত্র্যে বোটানিক্যাল গার্ডেন এক আকর্ষণীয় জায়গা। জাতীয় চিড়িয়াখানার পাশেই অবস্থিত এই গার্ডেনে দেশ-বিদেশের রয়েছে নানা প্রজাতির গাছগাছালি। প্রিয়জনকে নিয়ে গাছেদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। আর সেই একান্ত অবকাশে নিজেদের একে অন্যকে জেনে নিতে পারেন আরো গভীরে। একটু সময় নিয়েই ঘুরে আসতে পারেন গাছেদের এই জগতে।

ডিয়াবাড়ি

নামের সঙ্গে পরিবেশটাও খুব সাজানো ডিয়াবাড়িতে। বিকেলের রোদ পোহানোর মাঝেই খুঁজে পেতে পারেন সম্পর্কের নতুন স্বপ্ন। কাটাতে পারেন অনেকটা সময়। এখন বেশ কিছু রেস্তোরাঁ হয়েছে। সেখানে সেরে নিতে পারেন লাঞ্চ।

৩০০ ফিট

কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে পূর্বাচল সিটির দিকে যাওয়া এই ৩০০ ফিটের রাস্তার দু’পাশের সৌন্দর্য নজর কাড়ে। তবে ইদানীং রাস্তার পাশে জমজমাট রেস্তোরাঁ। বিকেল থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত থাকে আসর গুলজার এই এলাকা। পেটপুজোয় আগ্রহ যাদের বেশি, খেতে এবং খাওয়াতে যারা পছন্দ করেন তারা অবশ্যই এখানে আসতে পারেন। আর বিশেষ দিনে বিশেষ মানুষের সঙ্গে খেতে খেতে হৃদয়ের ব্যাকুল কথা বলতে পারেন অনায়াসে।

সতর্কতা : প্রত্যেক বিনোদনের জায়গায় অযাচিত বা অপ্রীতিকর অবস্থার মুখে পড়লে ঘাবড়ে না গিয়ে পুলিশ কিংবা স্থানীয় গার্ডের সহায়তা নিন।

Comments

The Daily Star  | English

No clear roadmap for investment

The budget for FY26 has drawn strong criticism from business leaders who say it lacks a clear roadmap for improving the investment climate, bolstering industrial competitiveness, and implementing overdue reforms in the banking sector.

15h ago