বাংলাদেশসহ সেভেন সিস্টারের রোগীদের সেবা নিশ্চিত করুন: মমতা
বাংলাদেশসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোর রোগীরা কলকাতায় এলে বেসরকারি হাসপাতালকে আরও সতর্কভাবে চিকিৎসা করার নির্দেশ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
কলকাতাকে শুধু সার্কভুক্ত দেশগুলোর নয়, ভারতের সেভেন সিস্টারের গেটওয়ে বলে দাবি করে মমতা ব্যানার্জি বলেন, কেনো গরিব মানুষকে ভিটে-মাটি বিক্রি করে চিকিৎসা করাতে হবে, চিকিৎসা ব্যবসা নয়। নিশ্চয় হাসপাতাল ব্যবসাও করবে, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যবসা করতেই হবে কিন্তু ব্যবসার নামে রোগীদের জবাই করা চলবে না।
মমতার ভাষায়, হাসপাতাল কসাইখানা নয়, সেবার জায়গা। তাও আবার হাসি মুখেই সেবা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও অবস্থাতেই রোগীর স্বজনদের কান্না সহ্য করা হবে না।
সম্প্রতি কলকাতার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতি এবং অতিরিক্ত বিল আদায়ের অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান মমতা ব্যানার্জি। ইতোমধ্যে, অ্যাপোলোসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালকে কড়া ভাষায় তিরস্কার করেছে তাঁর প্রশাসন।
এরই মধ্যে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মমতা নতুন করে আরো কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়াও মমতা ব্যানার্জি রাজ্যটির স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী।
এদিন সন্ধ্যায় কলকাতার অদূরে শঙ্কর নেত্রালয় নামের এক চোখের হাসপাতাল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মমতা ব্যানার্জি। সেখানে রাজ্য সরকারের র্শীষস্থানীয় কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
মমতার ভাষায়, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় নেপাল, ভূটান বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর রোগী আসেন কলকাতায় চিকিৎসার জন্য। তাই লাগাম ছাড়া কোনও বিষয় চলতে দেওয়া হবেনা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এতোগুলো টেস্ট ধরিয়ে দিয়ে কমিশন নেওয়া হচ্ছে অথচ যে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে সেটা কতটুকু ঠিক তা দেখতে হবে। নিজের এমআরআই মেশিন, এক্স-রে মেশিন ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে। অভিযোগ সবার বিরুদ্ধে নয় কয়েকটা হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠছে। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
তিনি বলেন, কিডনি এবং শিশু পাচারের মতো বড় ঘটনা ঘটছে কলকাতার বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে। বাংলা সব কিছুতেই উপরে, পথ দেখিয়েছে; তাই এইসব অপকর্ম চলবে না।
সম্প্রতি কলকাতার অদূরে হাওড়ায় এক যুবক মটর-সাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে। সঞ্জয় রায় নামে ওই আহত যুবক অবশ্য সাত দিন পর মারা যান। সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি রায় গতকাল সোমবার নারকেলডাঙা থানায় অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
সঞ্জয়ের স্ত্রী লিখিত অভিযোগে বলেন, রোগীকে সাত দিন রেখে তাদের কাছ থেকে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা বিল চাওয়া হয়, সেটা না দিতে পারায় তার বাড়ির দলিল ও ফিক্সড ডিপোজিটের কার্ড পর্যন্ত জমা রাখতে হয়েছে। কিন্তু এরপরও সঞ্জয়কে ছাড়া হয়নি, যে কারণে তার মৃত্যু হয়।
Comments