কলকাতার ঈদ বাজারে বাংলাদেশিদের ভীড়

পবিত্র ঈদুল ফিতর যত এগিয়ে আসছে কলকাতার নিউমার্কেট এলাকাসহ এর আশপাশের বিপনীবিতানগুলোতে ততই বাড়ছে বাংলাদেশি ক্রেতাদের ভিড়।
Eid shopping
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

পবিত্র ঈদুল ফিতর যত এগিয়ে আসছে কলকাতার নিউমার্কেট এলাকাসহ এর আশপাশের বিপনীবিতানগুলোতে ততই বাড়ছে বাংলাদেশি ক্রেতাদের ভিড়।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় পঁচিশ হাজার বাংলাদেশি ক্রেতা আসছেন নিউ মার্কেট চত্বরে। এই সংখ্যাটা ঈদের আগ মুহূর্তে দেড় লাখ ছুঁয়ে যাবে বলে সমিতির আশা।

গত কয়েক দিন মধ্য-কলকাতার ব্যস্ততম বাণিজ্যিক কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বিপনীবিতানে পছন্দের পোশাক কিনতে ব্যস্ত বাংলাদেশি ক্রেতারা। তবে অনেকে এবার গত বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি নেওয়ার অভিযোগ তুলছেন। আর হাল-ফ্যাশনের তেমন পোশাক নেই বলেও জানান বাংলাদেশি তরুণ ক্রেতারা।

ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা সুচরিতা সূচি, মা ও বড় বোনকে নিয়ে মাত্র দুদিনের জন্যে কলকাতায় এসেছেন। লিন্ডসে স্ট্রিটের একটি নামি পোশাকের দোকানে দাঁড়িয়ে কিনছিলেন শিফনের সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি ও পালাজো।

দ্য ডেইলি স্টারকে ওই তরুণী বলেন, “নতুন কিছু পাইনি এবার। তবে ঢাকার চেয়ে দাম কম, আর স্টক বেশি থাকায় বেছে নেওয়ার সুযোগ নিতেই কলকাতায় এসেছি।”

সূচির ভাষায়, “গত ঈদে একই রকমের একটি পালাজো নিয়েছিলাম, কিন্তু সে বার দাম কম ছিল। এবার একই জিনিস, শুধু ডিজাইনটা একটু ভিন্ন তাই এর দাম দ্বিগুণ চাওয়া হচ্ছে।”

ভারতীয় রুপির সঙ্গে বাংলাদেশি টাকার বিনিময় মূল্য গত বছরের চেয়ে অনেক কম হওয়ায় এবার অনেকেই কড় গুণে হিসেব কষে কলকাতায় কেনাকাটা করছেন। যেমনটি বললেন, সূচির মা হাসিনা বেগম।

তাঁর কথায়, “আগে একশো টাকায় ভারতের ৮৫ রুপি পাওয়া যেতো। এখন পাওয়া যাচ্ছে ৮০ রুপি। তাই টাকাটা খরচ করতে কিছু হিসাব কষছি।”

এমন টাকার হিসেবের মতো না হলেও দোকানিরা তাঁদের ব্যবসা বাঁচিয়ে বাংলাদেশি ক্রেতাদের পকেটকে কিছুটা আরাম দিতে ঈদ কেনাকাটায় বিশেষ ছাড় দিচ্ছেন নিউমার্কেট এলাকায়।

লিন্ডসে স্ট্রিটের ডান দিকের রাস্তার ধারে একটি মেয়েদের নামী পোশাকের দোকানের মালিক চুণিলাল ওমরানিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “দেখুন সারা বছর আমরা কেনাকাটায় কিছু না কিছু ছাড় দিয়েই থাকি। তবে ঈদের সময় একটু বেশি ছাড় দেওয়া হয়। এক লক্ষ টাকার কেনাকাটায় বড় গিফট দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়াও, দশ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য ছাড়ও দেওয়া হচ্ছে ছোট অংকের কেনাকাটায়।”

নিউমার্কেট এলাকায় ছোটবড় মিলিয়ে শুধুমাত্র ছেলে-মেয়েদের পোশাকের দোকানের সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। প্রত্যেক দোকানে ইতোমধ্যেই ঈদের কেনাকাটা জমে উঠছে, জানালেন নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আব্দুর রউফ।

তাঁর ভাষায়, বাংলাদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে নিউমার্কেটের বিক্রেতার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। তাই কোনও বিজ্ঞাপন না দিয়ে প্রায় সব দোকান কম-বেশি এই মৌসুমে ব্যবসা করেন। বাংলাদেশি ক্রেতারাই দেশে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশে তাঁদের পরিচিতজনদের আমাদের দোকানগুলোর খোঁজ দেন।”

সমিতির হিসাব বলছে, প্রতিদিন গড়ে পনের থেকে বিশ হাজার বাংলাদেশি ক্রেতা আসছেন নিউমার্কেট এলাকার বিপনীবিতানগুলোতে। রমজান শুরুর এক সপ্তাহ আগে সংখ্যাটা প্রায় ৩০ হাজার হয়ে গিয়েছিল এবার। অনেকেই রমজানে আর দেশের বাইরে থাকেন না, তাই আগেই তাঁরা কেনাকাটা করে নিয়ে যান। তবে ঈদের আগের সপ্তাহে এই সংখ্যাটা এক থেকে দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা আশা প্রকাশ করেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh China bilateral trade

PM’s visit to China: Dhaka to seek $20b fresh loans from Beijing

Bangladesh will seek fresh loans amounting to $20 billion during Prime Minister Sheikh Hasina’s upcoming visit to China, which Beijing hopes would be a “game changer” in the bilateral relationship.

2h ago