খাবার নিয়ে আজব গুজব

সুস্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ আবশ্যক। কিন্তু প্রাচীনকাল থেকে খাবার সম্পর্কে নানারকম ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত হয়ে আসছে। এমনকি খাবার নিয়ে এমন অনেক মনগড়া কল্প-কাহিনী রয়েছে, যা অনেক সময় হাসির উদ্রেক করে থাকে।

গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খেতে না দেয়া

প্রাচীনকালে আমাদের দেশের মানুষের ধারণা ছিল, গর্ভাবস্থায় বেশি খাবার খেলে শিশু আকারে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হবে, ফলে শিশু জন্ম দেয়ার সময় মায়ের কষ্ট বেশি হবে। এ কারণে গর্ভবতী মাকে প্রয়োজন অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার খেতে দেয়া হতো না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এসব কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে মা ও শিশু নানারকম শারীরিক সমস্যায় ভোগে, এমনকি এর ফলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মা ও শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে। 

নবজাতকের মুখে মধু দেয়ার রীতি

নবজাতকের মুখে মধু দিলে কথা বলতে সক্ষম হওয়ার পর শিশুর মুখের ভাষা সুন্দর হয় বলে একটি মজার গুজব আজো প্রচলিত রয়েছে। অথচ শিশু জন্মের পর শারীরিকভাবে অত্যন্ত কোমল এবং সংবেদনশীল হওয়ার ফলে সামান্য অবহেলা বা ত্রুটিও শিশুর মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনো খাবার নবজাতক শিশুকে দেয়া একেবারেই অনুচিত।

জোড়া-কলা খেলে যমজ শিশুর জন্ম হওয়ার ধারণা

অনেকেই অজ্ঞতাবশত কিছু ভ্রান্ত ধারণা মনে পোষণ করে থাকেন। জোড়া-কলা খেলে যমজ শিশুর জন্ম হওয়ার ধারণাটি তারই একটি দৃষ্টান্ত।

গর্ভাবস্থায় বোয়াল মাছ খেতে বারণ

গ্রামাঞ্চলে প্রচলিত অত্যন্ত হাস্যকর একটি কুসস্কার হলো- গর্ভাবস্থায় বোয়াল মাছ খেলে শিশুর ঠোঁট বোয়াল মাছের মতো হওয়ার ধারণা। অথচ শিশুর গড়নের সঙ্গে মাছের আকার-আকৃতির কোনো সম্পর্ক নেই।

বাড়ির পুরুষের আগে নারীরা খেলে অমঙ্গল হয় বলে ধারণা

প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কার নারী-পুরুষের বৈষম্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাড়ির পুরুষদের আগে নারীরা খাবার খেলে বাড়ির অমঙ্গল হওয়ার ধারণাটি অনেকেরই জানা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও পরিবারের পুরুষদের জন্য অপেক্ষা করে নারীরা খাবার গ্রহণে বিলম্ব করে থাকে। এতে করে শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হতে পারে।

খাবার নিয়ে মনে ভ্রান্ত ধারণা পোষণের ফলে নিয়মমাফিক খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শরীরে নানাবিধ ক্ষতিসাধন হয়ে থাকে। তাই প্রচলিত বিভিন্ন কুপ্রথা ও রীতিকে প্রশ্রয় না দিয়ে সমাজে স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
rickshaws banned on Dhaka's main roads

Rickshaws no longer allowed on main roads: DNCC

More than 100 illegal battery-powered rickshaws were seized during the joint operation

1h ago