‘দুবাই গেলেন’ ইংলাক সিনাওয়াত্রা
“দয়া করে তাকে একা ফেলে রেখো না” – কাছের লোকদের প্রতি সম্ভবত এমনই আর্জি ছিলো থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার। গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার রায় হওয়ায় আগে দেশ পালানোর সময় তাঁর আদরের ছেলে সুপাসেক আমরনচাতকে সঙ্গে নিতে পারেননি তিনি।
এই ১৫ বছরের সুপাসেককে নিয়ে ইংলাক অনেক জনসভায় যোগ দিতেন। সমর্থকদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হতেন তাঁরা। এই একমাত্র সন্তানকে তিনি রেখে গেলেন থাইল্যান্ডে বসবাসরত ব্যবসায়ী স্বামীর কাছে।
থাই সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইংলাক দেশ ছেড়েছেন। গত বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় তিনি প্রথমে স্থলপথে প্রতিবেশি কম্বোডিয়ায় যান। সেখান থেকে সম্ভবত একটি ব্যক্তিগত বিমানে চড়ে তিনি সিঙ্গাপুর এবং শেষে দুবাই পৌঁছান। দুবাইয়ে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে রয়েছেন ইংলাকের ধনকুবের ভাই ও থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এ শহরে আপাতত ভাইয়ের বাড়িতে উঠছেন তিনি। এছাড়াও, বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ইংলাক হয়ত ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
ইংলাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর শাসনামলে থাইল্যান্ডের কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া নামে বহু কোটি ডলারের দুর্নীতি করা হয়েছে। এ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় দেওয়ার আগ মুহূর্তে দেশ ছাড়েন তিনি। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর ১০ বছরের জেল এবং রাজনীতিতে চিরতরে নিষিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো।
বিরোধীরা ইংলাককে দুর্নীতিগ্রস্ত বললেও, পুয়া থাই পার্টির এ নেত্রীর সমর্থকরা এ মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মনে করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নেত্রীর প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে বার্তার বন্যা বইয়ে দিয়েছেন সমর্থকরা। একজন লিখেছেন, “আপনি যেখানেই থাকুন না কেনো, আপনি এবং আপনার প্রিয়জনেরা নিরাপদে থাকুন।” অপর সমর্থক লিখেছেন, “এখন আপনি যেখানেই থাকুন, আশীর্বাদ করি, আপনি সুস্থ এবং সুখে থাকুন।”
উল্লেখ্য, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ইংলাক উপস্থিত হতে পারেননি রায় ঘোষণার দিনে এমন তথ্যই আদালতে দিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। তবে, দেশ পালানোর খবর প্রকাশিত হওয়ার পর অবাক হয়ে যান আদালতে উপস্থিত সবাই।
আদালতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হওয়ায় ইংলাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করা হয় এবং তাঁর জামিন বাতিল করে দেওয়া হয়। এদিকে, ইংলাকের মামলার রায় আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।
গত ২০১৪ সালে থাইল্যান্ডের সামরিক জান্তা ইংলাক সিনাওয়াত্রার সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: দেশ ছেড়ে ‘পালালেন’ সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা
Comments