মুশফিকদের ভড়কে দেওয়া কে এই মহারাজ?
পেস-বাউন্সের জুজু মাথায় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় উড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পচেফস্ট্রমে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি উইকেট ফেলেছেন একজন স্পিনার। তাও আবার বাঁহাতি স্পিনার। শৈশব থেকেই বাঁহাতি স্পিন খেলে হাত পাকানো মুশফিকুর রহিমদের নাকাল করে ছেড়েছেন কেশব মহারাজ। কি এমন মুন্সিয়ানা তার? উঠে এলেনই বা কিভাবে?
পচেফস্ট্রমে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৯২ রানে তিন উইকেট পান মহারাজ। দ্বিতীয় ইনিংসে তো তিনি আরও বিষাক্ত। ১০ ওভার বল করে ২৫ রানেই তুলে নেন টাইগারদের চার উইকেট। প্রথম ইনিংসে তার বলে একাধিক ক্যাচ না ফসকালে ম্যাচে ১০ উইকেটও পেতে পারতেন তিনি। তবে সাত উইকেট নিয়ে মাত্র ১২ টেস্টেই তুলে ফেলেছেন ৫০ উইকেট। প্রোটিয়া স্পিনারদের মধ্যে যা চতুর্থ দ্রুততম। আর কেবল বাঁহাতি স্পিনারদের হিসাবে নিলে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকায় হয়ে ৫০ উইকেট তোলায় তিনিই সবচেয়ে দ্রুততম।
প্রোটিয়াদের হয়ে এত আলো কাড়লেও তার শেকড় কিন্তু স্পিন স্বর্গ উপমহাদেশেই। ১৯৯০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে জন্ম মহারাজের। তবে আরেকটু পেছনে গেলে পাওয়া যায় ভারতীয় সংশ্লেষ। তার বাবা আতমানান্দ মহারাজ ভারতের আহমেদাবাদ থেকে পাড়ি জমান দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেখানেই খেলতেন ক্রিকেট। নাটাল প্রভিন্সের হয়ে উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ নামডাকও কুড়িয়েছিলেন। তবে বর্ণবাদের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তখন দক্ষিণ আফ্রিকা নিষিদ্ধ থাকায় খেলা হয়নি সর্বোচ্চ পর্যায়ে। কেবল বাবা নয়, ক্রিকেট খেলতেন তার দাদাও।
মজার কথা হলো স্পিন ভেল্কি দেখিয়ে এত বাহবা কুড়ানো মহারাজের স্পিনারই হওয়ার কথা ছিল না। ছোটবেলায় জোরে বল করতে চাইতেন। স্কুল ক্রিকেটেও করতেন পেস। হুট করে একদিন হাত ঘুরিয়ে পেয়ে গেলেন স্পিনার হওয়ার কৌশল।
গেল নভেম্বরে পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয় মহারাজের। পেস বোলারদের জিভে জল আসা পার্থের গতিময় বাউন্সি পিচেও খারাপ করেননি তিনি। অভিষেকে দুই ইনিংস মিলিয়ে পেয়েছিলেন চার উইকেট। ১০ মাসে ঘুরে ঘুরে ১২ টেস্টে খেলে ফেলেছেন। উইকেট সংখ্যা ঠিক ৫০টি। এরমধ্যে পাঁচ উইকেট পেয়ে গেছেন দুবার। কেবল বোলিং নয়, ব্যাট হাতেও ভালোই কসরত জানা আছে তার। টেল এন্ডে নেমে মাঝেমধ্যেই ভোগান প্রতিপক্ষ বোলারদের।
ব্লুমফন্টেইনে দ্বিতীয় টেস্টে মহারাজের ভোগান্তি নিশ্চিতভাবেই এড়াতে চাইবে বাংলাদেশ।
সূত্র: ক্রিকইনফো, ক্রিকট্র্যাকার
Comments