আশা জাগাচ্ছে উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের ধান

BRRI Paddy 81
ফাইল ছবি

উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের ধান পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের কৃষকরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন দেশে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উচ্চ ফলনশীল জাতের যে ধান চাষ করা হয় সেই ‘ব্রি ধান ২৮’ এর চেয়েও হেক্টর প্রতি আধা টন বেশি ফলন দিবে নতুন ‘ব্রি ধান ৮১’।

অধিকাংশ জমিতেই এখন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হচ্ছে। কিন্তু উৎপাদন বেশি হয় ধানের এমন নতুন জাত তৈরির যে ধারাবাহিকতা ছিল গত কয়েক বছরে কিছুটা থমকে গিয়েছিল। ‘ব্রি ধান ৮১’ দিয়ে বিজ্ঞানীরা এবার সেই বাধাটিকে কাটিয়ে উঠলেন।

১৯৯৪ সালে দেশে ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯ অবমুক্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘ দিন ধরে উৎপাদন চলায় এই জাত দুটির ফলন কমে আসছিল। নতুন জাতের ধান আসায় সেই সমস্যা থেকেও মুক্তি মিলবে এমনটাই আশা কৃষি গবেষণা সংশ্লিষ্টদের।

দেশে এখন উচ্চ ফলনশীল জাতের ৮৬টি জাতের ধান থাকলেও সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় ব্রি ধান ২৮। বোরো মৌসুমে দেশের যে পরিমাণ জমিতে ধান চাষ হয় তার মধ্যে ৪৫ শতাংশ জমিতেই এই জাতটি চাষ করেন কৃষকরা। অধিক ফলন ও ব্যাপক চাষাবাদের কারণে বিজ্ঞানীরা এই জাতটিকে ‘মেগা ভ্যারাইটি’ বলেন।

গতকাল বুধবার জাতীয় বীজ বোর্ড ‘ব্রি ধান ৮১’ জাতটির অনুমোদন দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন ব্রি ধান ৮১ জনপ্রিয়তায় ব্রি ধান ২৮ এর জায়গা দখল করবে। এবং যার ফলে দেশের ধান উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে।

প্রতি হেক্টরে ব্রি ধান ২৮ এখন উৎপাদন হয় ৬ টন। একই জমিতে ব্রি ধান ৮১ হবে ৬.৫ টন। তবে শুধু উৎপাদনই বেশি হবে তা নয়। নতুন জাতটি পুষ্টিমানের দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে। ব্রি ধান ২৮-এ আমিষের পরিমাণ ১০.৩ পিপিএম যেখানে ব্রি ধান ২৮-এ এর পরিমাণ ৮.৬ পিপিএম। বাংলাদেশের মানুষের ক্যালরি ও আমিষের চাহিদার অর্ধেকেরও বেশি পূরণ হয় ভাত থেকে। ফলে আমিষের ঘাটতি পূরণেও সহায়ক হবে নতুন জাতের এই ধান।

১৫ বছর আগে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ইরান থেকে আমোল-৩ জাতের ধান বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তখন থেকেই বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এই ধান থেকে বাংলাদেশের আবহাওয়ার উপযোগী উচ্চ ফলনশীল ধান তৈরির কাজ করছিলেন। অবশেষে গতকাল নতুন জাতটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হল।

নতুন জাত তৈরির গবেষণা সম্পর্কে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো শাহজাহান কবির গত রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “ইরানের আমোল-৩ ও আমাদের মেগা ভ্যারাইটি ব্রি ধান ২৮ শঙ্কর করে ব্রি ধান ৮১ তৈরি করা হয়েছে। গত প্রায় ১৫ বছর ধরে সঙ্করায়ন, ল্যাব ও ফিল্ড টেস্টের কাজ চলেছে। শেষ পর্যন্ত বীজ বোর্ড আজ [বুধবার] এই নতুন জাতকে ছাড়পত্র দিয়েছে।”

আরও কিছু বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে অনন্য ব্রি ধান ৮১। এর যে ভাত হয় তা চালের তুলনায় ১.৬ গুণ লম্বা। অন্যান্য উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে এটি ১.২ থেকে ১.৩ এর মধ্যে থাকে। আর চাল লম্বা ও চিকন হওয়ায় রপ্তানিরও প্রচুর সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago