‘সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শরণার্থীদের ভাগাভাগি করে নেওয়া উচিত’

ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির উদ্যোগে কলকাতা প্রেসক্লাবে রবিবার সন্ধ্যায় ‘রোহিঙ্গা সংকট: দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক আলোচনায় শরণার্থীদের বিভিন্ন দেশে ভাগাভাগি করে নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন বক্তারা।
কলকাতা প্রেসক্লাবে ভারত-বাংলদেশ মৈত্রী সমিতি আয়োজিত রোহিঙ্গা সংকট
কলকাতা প্রেসক্লাবে ভারত বাংলদেশ মৈত্রী সমিতি আয়োজিত 'রোহিঙ্গা সংকট: দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা' শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা। ছবি: স্টার

ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির উদ্যোগে কলকাতা প্রেসক্লাবে রবিবার সন্ধ্যায় ‘রোহিঙ্গা সংকট: দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক আলোচনায় শরণার্থীদের বিভিন্ন দেশে ভাগাভাগি করে নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানে মুখ্য বক্তা হিসাবে অংশ নেন প্রখ্যাত লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অজয় কুমার দে, অধ্যাপক জয়ন্ত রায়, প্রাক্তন সাংসদ দেবপ্রসাদ রায়, অধ্যাপক বিমলশঙ্কর নন্দ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী ও ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির সভাপতি অধ্যাপক প্রবোধচন্দ্র সিনহা।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ১৯৭১ সালে যে ভারত এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে সে ভারত মাত্র ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে পারবে না সেটা হতে পারে না।

তিনি মনে করেন, “রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে ভারতকে ভূমিকা নিতে হবে। শরণার্থীরা যদি ফিরে না যায়, এটাকে কেন্দ্র করে যেভাবে সন্ত্রাস বিস্তার লাভ করবে সেটা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার নয় গোটা বিশ্বে প্রভাব ফেলবে। দ্রুত শরণার্থী ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে যা কিছু করার সেটা ভারতেই করতে হবে।”

শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, বার্মার সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক আদালতে তুলে এই গণহত্যার বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে যা করার তার উদ্যোগ আমরা নিচ্ছি। বাংলাদেশ সরকারকে আমরা এই উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেছি।

যতক্ষণ রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধান না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিভিন্ন দেশে ভাগ করে আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে তিনি মত দেন। এর যুক্তি হিসেবে জাতিসংঘের উদ্যোগে ভুটানের শরণার্থীদের আমেরিকা এবং ইউরোপ ভাগ করে নেওয়ার উদাহরণ দেন তিনি।

আলোচনাসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উপ-রাষ্ট্রদূত তৌফিক হাসান বলেন, রোহিঙ্গারা সমস্যা নতুন নয়, বাংলাদেশের ১৯৭৮ সাল থেকে রোহিঙ্গারা আসতে শুরু করে। ১৯৯১ সাল, ৯৩ সাল থেকে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে এই রোহিঙ্গারা এসেছে। ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডার গণহত্যার পর এই প্রথম বিশ্বের কোনো দেশ থেকে প্রাণ ভয়ে এত সংখ্যক উদ্বাস্তু পালিয়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছে।

উপ-রাষ্ট্রদূতের ভাষায়, “মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের উদ্বাস্তু থাকার কথা স্মরণ করেই বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিয়েছেন।”

Comments