কলকাতায় বিরল অস্ত্রোপচার

পেট থেকে বের হলো দেড় কেজি পেরেক!

nails
২৮ অক্টোবর ২০১৭, কলকাতার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসকরা প্রদীপ কুমার ঢালি নামের এক ব্যক্তির পাকস্থলী থেকে দেড় কেজি ওজনের ৬৩৯ টি পেরেক বের করেন। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসকরা প্রদীপ কুমার ঢালি নামের এক ব্যক্তির পাকস্থলী থেকে দেড় কেজি ওজনের ৬৩৯ টি পেরেক বের করেছেন। ৪৮ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার গোবরডাঙার বাসিন্দা। তিনি মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত।

এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণেই নিজের অজান্তেই তিনি মাটি খাবলে এটা-সেটা খেতেন। তিনি একা থাকতে ভালবাসতেন। এমনকি, সুযোগ পেলে ঘরে রাখা পেরেক পর্যন্ত গিলে ফেলতেন।

গত ২৭ অক্টোবর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে বমি ও অসহ্য পেট ব্যথা নিয়ে ভর্তি হন ওই ব্যক্তি। এর পরের দিন তাঁকে জরুরি অস্ত্রোপচার করেন শল্যচিকিৎসক সিদ্ধার্থ বিশ্বাসের নেতৃত্বে ওই হাসপাতালেরই তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

চিকিৎসক সিদ্ধার্থ বিশ্বাস দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, “আমরা আসলেই বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলাম, ওই ব্যক্তি এতোগুলো পেরেক কি করে খেলেন? ভাগ্যিস কোন একটি পেরেক তাঁর শ্বাসনালীতে প্রবেশ করেননি।”

শুধু তাই নয়, এটি এক ধরণের আশ্চর্যেরও বিষয় যে এতোগুলো পেরেক, এতো ওজনের পেরেক পাকস্থলীতে ছিল দীর্ঘদিন, তাতে পাকস্থলীর কোনও ক্ষতিও হয়নি - যোগ করেন ওই চিকিৎসক।

তিনি আরও বলেন, “অস্ত্রোপচারের সময় পেরেক গুলো বের করতে আমরা চুম্বক ব্যবহার করি। কেননা, লোহার কোনও অংশ যদি পাকস্থলীতে থেকে থাকে সেটি সুই হলেও চুম্বকের শক্তিতে বের হয়ে আসবে।

প্রদীপ কুমার ঢালির জেঠাতো ভাই বিশ্বনাথ ঢালি জানিয়েছেন, “খুব বেশি কথা বলেন না প্রদীপ। সব সময় মাটিতেই শুয়ে থাকতেন। গত দুর্গাপূজার পর থেকে তাঁর বমি এবং পেট যন্ত্রণা শুরু হয়। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকরা পেট খারাপ ভেবে ওষুধ দেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। এরপরেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক সিদ্ধার্থ বিশ্বাসের দ্বারস্থ হই আমরা। তিনি এক্স-রে করেন এবং তখনই বুঝতে পারেন পেটের মধ্যে কিছু ধাতব বস্তু জমে রয়েছে।”

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ঠিক কত বছর বয়স থেকে প্রদীপ ঢালি এভাবে গোপনে পেরেক গিলতে শুরু করেন, সেটি জানা নেই। তবে বছর সাতেক আগে থেকে একাকীত্বে ভুগতে শুরু করেন প্রদীপ।

গোবর্ধন বাজারে মুদি দোকান ছিল প্রদীপের। কিন্তু সেই ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে বাড়িতে শুয়ে-বসে সময় কাটাতেন, আর মনের আনন্দে পেরেক গিলতেন।

হাসপাতালে এই বিরল অস্ত্রোপচারের খবর শুনে প্রতিবেশী অনেকে রহস্য করে বলছেন, “বাবা এতো পেট নয় যেন একটা গোটা হার্ডওয়্যারের দোকান।”

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

11h ago