‘টাইটানিক’-এর এ তথ্যগুলো আপনি জানেন কি?

বিশ পেরিয়ে ২১ বছরে পা দিয়েছে পরিচালক জেমস ক্যামেরনের ঐতিহাসিক মহাকাব্য ‘টাইটানিক’। আজ থেকে ২০ বছর আগে যারা সিনেমাটি দেখেছেন তাঁদের কাছে তা একটি সুখ-স্মৃতি বটে। ১৯৯৭ সালের ১ নভেম্বর জাপানে মুক্তি পাওয়ার পর ‘টাইটানিক’ সৃষ্টি করতে থাকে একের পর এক ইতিহাস ও ‘মিথ’।
Titanic
‘টাইটানিক’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

বিশ পেরিয়ে ২১ বছরে পা দিয়েছে পরিচালক জেমস ক্যামেরনের ঐতিহাসিক মহাকাব্য ‘টাইটানিক’। আজ থেকে ২০ বছর আগে যারা সিনেমাটি দেখেছেন তাঁদের কাছে তা একটি সুখ-স্মৃতি বটে। ১৯৯৭ সালের ১ নভেম্বর জাপানে মুক্তি পাওয়ার পর ‘টাইটানিক’ সৃষ্টি করতে থাকে একের পর এক ইতিহাস ও ‘মিথ’।

বিশ্ব চলচ্চিত্র ইতিহাসে অনবদ্য এই সৃষ্টির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এর সম্পর্কে কিছু তথ্য পাঠকদের কাছে তুলে ধরা হলো।

শিশুকাল থেকে ভাঙ্গা জাহাজের প্রতি দুর্বলতা ক্যামেরনের। সেই দুর্বলতা থেকেই তিনি ‘টাইটানিক’ তৈরির প্রেরণা পান। ‘দ্য অ্যাবিস’ ছবিটি তৈরির সময় ক্যামেরনের হঠাৎ পরিচয় হয় ন্যাশনাল জিওগ্রাফির গবেষক রবার্ট ব্যালার্ডের এর সঙ্গে। এক দল অনুসন্ধানীকে নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার খ্যাতি রয়েছে এই গবেষকের। এরপর, ক্যামেরন টাইটানিক নিয়ে চলচ্চিত্র বানানোর প্রস্তুতি নেন।

আপনি জানেন কি, ১৯৯৫ সালে আটলান্টিক সাগরের তলায় গিয়ে আসল টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের ভিডিও করেছিলেন ক্যামেরন। পরে সেই ভিডিও সিনেমায় ব্যবহার করা হয়। এ কাজে পরিচালককে ১২ বার সাগরের তলায় যেতে হয়েছিলো। কখনো কখনো সেখানে এক টানা ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা থেকেছেন। ক্যামেরনের ভাষায়, “বিষয়টি এমন যেন আগে আমি মক্কায় গেলাম, তারপর ধর্মটিকে খুঁজে পেলাম।”

বিশ্বখ্যাত এই পরিচালকের কাছে ‘টাইটানিক’ শুধুমাত্র একটি গল্প বা সিনেমা নয়, তাঁর কাছে “এটি হচ্ছে এমন একটি ঘটনা যেখানে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো।” তাই সিনেমাটির শুধু পরিচালনা নয়, এর চিত্রনাট্য, সম্পাদনা, প্রযোজনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। এমনকি, কেট উইন্সলেটের নুড ছবিটিও এঁকে দিয়েছিলেন ক্যামেরন।

‘টাইটানিক’-এর ভেতরে বড় সিঁড়িটির শেষ দৃশ্য এক চান্সেই নিতে হয়েছিলো। কেননা, পানির তোড়ে সিঁড়িটি একবার ডুবে গেলে তা আর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না। তাই পরিচালক সবাইকে বলেছিলেন, “সুযোগ একবারই।” মজার ব্যাপার হলো, দৃশ্যটি দ্বিতীয়বার নেওয়ার সুযোগ যেমন ছিলো না তেমনি এর প্রয়োজনও হয়নি।

আপনি জানেন কি, এ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে প্রায় ডুবতে বসেছিলেন কেট উইন্সলেট। ধেয়ে আসা ঢেউয়ের মধ্যে সহ-অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর সঙ্গে দৌড়াতে গিয়ে কেটের গায়ের কোটটি আটকে যায়। আর অমনি ডুবতে বসেন তিনি। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা স্মরণ করতে গিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে কেট বলেন, “অভিনয় জীবনে সেদিনই প্রথমবার ভেবেছিলাম এই হতচ্ছাড়া জায়গাটি থেকে আমি মুক্তি চাই।”

‘টাইটানিক’ হলিউডের ছবি হলেও কানাডার সঙ্গে এটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ছবিটির পরিচালক ক্যামেরন এবং সিনেমার থিম সং ‘মাই হার্ট উইল গো অন’ এর গায়িকা সেলিন ডিওন জন্মসূত্রে কানাডীয়। এছাড়াও, ছবিটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যের শুটিং হয়েছিলো কানাডায়।

আপনি জানেন কি, চলচ্চিত্র বোদ্ধারা ভেবেছিলেন ‘টাইটানিক’ ছবিটি ব্যর্থ হবে। ছবিটির নির্মাণ খরচ, শুটিং কাজে দেরি, শুটিং চলাকালে বিভিন্ন রকমের দুর্ঘটনা– সব মিলিয়ে অনেকের ধারণা ছিলো ‘টাইটানিক’-এর ব্যর্থতা ‘টার্মিনেটর’-খ্যাত ক্যামেরনের অহংকার ভেঙ্গে দিবে। ছবিটির সাফল্য নিয়ে পরিচালকের মনেও কিন্তু সন্দেহ ঢুকেছিলো।

‘টাইটানিক’-এর শুটিংয়ে প্রথম ধারণ করা হয় কেটের নুড স্কেচ আঁকার দৃশ্যটি। তখনো মূল সেট সাজানো হয়নি। হঠাৎ তাড়া আসে ছোট ছোট দৃশ্যগুলো ধারণ করে নেওয়ার জন্যে। অগত্যা নেকলেস পড়া কেটের নুড দৃশ্যটিই আগে নিতে হয়।

সিনেমায় কেট তাঁর মার করসেটের ফিতা বেঁধে দিচ্ছেন– এমনটিই প্রথমে ধারণ করা হয়েছিলো। পরে, ক্যামেরন তা পাল্টে দেন। তাই দেখা যায় মা মেয়ের করসেটের ফিতা শক্ত করে বেঁধে দিচ্ছেন। বিষয়টিকে পরিচালক কেটের প্রতি তাঁর মায়ের শক্ত নজরদারির প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।

আপনি জানেন কি, এ ছবিটির মাধ্যমে ক্যামেরন মানব জাতির উদ্দেশ্যে একটি সতর্কবাণী প্রচার করেছেন। পরিচালকের মতে, “ইতিহাস বলে, প্রত্যেক প্রযুক্তি সঙ্গে করে কিছু অভিশাপ নিয়ে আসে। ‘টাইটানিক’-এর শিক্ষা হলো বড় কোন শক্তিকে কাজে লাগাতে চাইলে তা নিয়ে তাড়াহুড়ো করা ঠিক নয়।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago