খানিকটা বিনোদন দিতে পারবে ‘গেইম রিটার্নস’

পেশাদার খুনি নীরব (মায়া) একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে বিভিন্ন মানুষকে খুন করেন। এই প্রতিষ্ঠানের মূল হোতা হলেন মিশা সওদাগর (কাইজার)। মায়ার সহযোগী হয়ে তাঁকে খুন করতে সহযোগিতা করেন শায়েনা (লাবণ্য)। খুন করতে সাহায্য করার পাশাপাশি তাঁকে মনে-প্রাণে পছন্দ করে তিনি। এক সময় তমা মির্জাকে (পায়েল) খুন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় মায়াকে। কিন্তু, খুন করতে গিয়ে ব্যর্থ হন তিনি। ধীরে ধীরে পায়েলের প্রতি দুর্বল হয়ে তাঁর প্রেমে জড়িয়ে যান মায়া। একটি বড় বিপদ থেকেও তিনি রক্ষা করেন শায়েনাকে।
Games Returns

চলচ্চিত্র: গেইম রিটার্নস

পরিচালক: রয়েল খান

অভিনয়: নীরব, তমা মির্জা, লাবণ্য, ডন ও মিশা সওদাগর

দৈর্ঘ্য: ২ ঘণ্টা ১৮ মিনিট

দুর্বলতা: গল্প

মুক্তির তারিখ: ৩ নভেম্বর

 

কাহিনী: পেশাদার খুনি নীরব (মায়া) একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে বিভিন্ন মানুষকে খুন করেন। এই প্রতিষ্ঠানের মূল হোতা হলেন মিশা সওদাগর (কাইজার)। মায়ার সহযোগী হয়ে তাঁকে খুন করতে সহযোগিতা করেন শায়েনা (লাবণ্য)। খুন করতে সাহায্য করার পাশাপাশি তাঁকে মনে-প্রাণে পছন্দ করে তিনি। এক সময় তমা মির্জাকে (পায়েল) খুন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় মায়াকে। কিন্তু, খুন করতে গিয়ে ব্যর্থ হন তিনি। ধীরে ধীরে পায়েলের প্রতি দুর্বল হয়ে তাঁর প্রেমে জড়িয়ে যান মায়া।

তারপর, খুন করা বন্ধ করে দেয় মায়া। কোম্পানির মূল হোতা মিশা সওদাগর এটি মেনে নিতে পারেন না। এরইমধ্যে মিশা সওদাগরের ছোট ভাই মায়ার ব্যবহার করা একটি গাড়ি পছন্দ করেন। সেটি যে কোন মূল্যে নিতে চান তিনি। এক সময় মায়ার বাসায় গিয়ে হামলা করে তমা মির্জাকে খুন করেন মিশা সওদাগরের ছোটভাই। সেসময় আহত হন মায়া। প্রতিশোধ নিতে মিশা সওদাগরের ভাইকে একসময় খুন করেন মায়া। এবার মায়াকে হত্যা করার জন্য লাবণ্যকে ঠিক করা হয়। কিন্তু হত্যা করতে এসে লাবণ্য উল্টো তাঁকে রক্ষা করেন। লাবণ্যকে ধরে নিয়ে আসেন মিশা সওদাগর। তাঁকে বাঁচাতে আসেন মায়া– এ হলো ‘গেম রিটার্নস’ ছবির পুরো গল্প।

আগে এই পরিচালকের ‘গেইম’ নামে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। সঙ্গে ছিলেন আরেকজন পরিচালক। এবার একাই তিনি নির্মাণ করেছেন ছবিটি। ‘গেইম’ ছবিটি তখন কোন সাড়া ফেলেনি। তারপরও কেন ‘গেইম রিটার্নস’ নামে আরেকটি সিনেমা বানালেন তা পরিচালকই ভালো বলতে পারেন।

‘গেইম রিটার্নস’ ছবির সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো নীরবের অভিনয় আর অ্যাকশন দৃশ্যগুলো। এর আগের সিনেমাগুলো থেকে অনেক বেশি পরিণত অভিনয় করার চেষ্টা করেছেন নীরব। যারা নীরবের আগের ছবিগুলো দেখেছেন তাঁরা বিষয়টি বুঝবেন যে কতোটা ভালো করেছেন এই অভিনেতা। আরেকটু মনোযোগী হলে নীরব ভালো কিছু করবেন। তবে চরিত্র ও গল্প বাছাইয়ে আরেকটু সতর্ক থাকতে হবে তাঁকে।

মিশা সওদাগর বরাবর যেমন অভিনয় করেন ঠিক তেমনটিই করেছেন এই সিনেমাটিতে। তাঁর পরিচিত এক্সপ্রেশন ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। নিজেকে ভাঙার কোনরকম তাগাদা ছিল না তাঁর মধ্যে। কিন্তু চাইলে সেটি তিনি করতে পারেন অনায়াসে, সেই অভিনয়-ক্ষমতা রয়েছে তাঁর মধ্যে।

এদিকে, তমা মির্জা যতটুকু অভিনয় করেছেন তা দেখতে মন্দ লাগেনি। তবে চরিত্রটির বিস্তার ঠিকমতো হয়নি। কিসের যেন কমতি ছিলো। তাই ঠিকমতো ডানা মেলতে পারেনি তাঁর চরিত্রটি।

নতুন নায়িকা লাবণ্যকে বেশ সম্ভাবনাময় মনে হয়েছে। তবে তাঁকে অভিনয়, নাচ আর এক্সপ্রেশনগুলো আরো বেশি রপ্ত করতে হবে। সিনেমায় অভিনয়ের নিজস্ব ভাষা রয়েছে, তা তাঁকে আয়ত্তে আনতে হবে। তবে সিনেমায় তাঁর গ্ল্যামারাস উপস্থিতি মন্দ লাগেনি।

সিনেমার গল্প নিয়ে অনেক কথা বলা যায়। গল্পে অনেক অগোছালো ভাব রয়েছে। সংলাপগুলো ছিলো ভীষণ দুর্বল। এ দুটি বিষয় সিনেমায় বড় অংশ– পরিচালক হয়তো তা মনেই করেন নি। তিনি কোনোরকম একটি গল্প দাঁড় করিয়ে সিনেমাটির শুটিং করিয়েছেন। অথচ কাউকে দিয়ে গল্প-সংলাপ রচনা করিয়ে নিলেই ‘গেইম রিটার্নস’ ছবিটি ভালো একটা কিছু হতে পারতো।

নীরব কী কারণে পেশাদার খুনি হয়ে উঠলেন তা গল্পে দেখা যায়নি। একটি প্রতিষ্ঠান কীভাবে পেশাদার খুনিদের নিয়ে গড়ে উঠতে পারে? এমন প্রতিষ্ঠান ঢাকায় কোথাও রয়েছে কি?  নীরব যখন তমা মির্জাকে নিয়ে সব ছেড়ে দূরে চলে গেল তখন লাবণ্য কী করতো? কোথায় থাকতেন তিনি? শুরুতে দেখানো হয়েছিলো একসঙ্গে থাকেন তাঁরা।

মিশা সওদাগরের ভাইয়ের চরিত্রে একজন অভিনয় শিল্পী হঠাৎ কোথা থেকে যেন উদয় হলেন। তাঁকে একবারও দেখা যায়নি গল্পের কোথাও। গল্পের বিষয়গুলো বড় বেশি এলোমেলো ঠেকেছে। পরিচালকের বড় দায়িত্ব গল্পের এই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো দেখা। এগুলোর কতটা দেখেছেন তিনি? প্রশ্ন পরিচালকের কাছে। ক্যামেরার কাজ এবং লোকেশন নির্বাচনে তিনি আরও বেশি মনোযোগী হতে পারতেন। কিছু কিছু জায়গায় ক্যামেরার কাজে অযত্নের ছাপ রয়েছে।

‘গেইম রিটার্নস’ ছবির গানগুলো শ্রুতিমধুর ছিলো। তবে দৃশ্যায়নে কোন মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেননি পরিচালক। যাঁরা বাণিজ্যিক ধারার ছবি নিয়মিত দেখেন তাঁদের খানিক বিনোদন দিতে পারবে ‘গেইম রিটার্নস’।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago