‘পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসছে বিজেপি, ফিরছে গণতন্ত্র!’
ভারতের হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাটের পর পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যাতেও ক্ষমতায় আসছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। সদ্য দলটিতে যোগ দিয়ে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে বিজেপির রাজ্য দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন মুকুল রায়।
তিনি বলেন, ভারতের ১৩ রাজ্যে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী রয়েছে, ছয়টিতে রয়েছে উপ-মুখ্যমন্ত্রী। সামনে দুটি রাজ্য হিমাচল ও গুজরাটে ভোট। সেখানেও বিজেপির জয়জয়কার হবে। এরপরই বাংলা ও উড়িষ্যায় বিজেপি ক্ষমতায় আসবে।
দিল্লি থেকে আজ (৬ নভেম্বর) দুপুরে কলকাতায় ফিরেছেন তৃণমূল কংগ্রেস দল ছেড়ে আসা প্রভাবশালী নেতা মুকুল রায়। কলকাতা বিমান বন্দরে কয়েক হাজার বিজেপি সমর্থক তাঁকে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। এরপর তিনি সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে অবস্থিত বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে পৌঁছান। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষসহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দিলীপ ঘোষ বলেন, “মুকুল রায়ের মতো সংগঠক-নেতা বিজেপিতে আসছেন সেটি মৃদু ভূ-কম্পনের মতো বোঝা যাচ্ছিলো, কিন্তু এবার সেটি ভূমিকম্পই হলো।” তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “মুকুল রায় ‘কেদো পুকুর’ (কাদা ভর্তি পুকুর) থেকে সমুদ্রে আসায় তাঁকে অভিনন্দন।”
বিজেপি-তৃণমূলের রাজনৈতিক সমঝোতার কারিগর ছিলেন মুকুল রায়, তাই বিজেপির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নতুন নয়, বলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।
এর আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে জড়িয়ে ধরে মুকুল রায় বলেন, “দিল্লিতে আমার ক্যাপ্টেন অমিত শাহ আর পশ্চিমবঙ্গে দিলীপ ঘোষ।” তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যে লক্ষ্য নিয়ে পরিবর্তন হয়েছিল সেই পরিবর্তন আসার সময় আর বাকি নেই। বিজেপিই একমাত্র দল যে আগামীতে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র ফেরাবে।”
মুকুল রায় জানান, “আগামী ১০ তারিখ রাণী রাশমণি অ্যাভিনিউতে বিজেপি মহাসমাবেশ ডেকেছে। আজ আর তেমন কিছু বলবো না।” হাতে একটি ফাইল দেখিয়ে তিনি বলেন, “আজ তা তুলে রাখলাম। রাজনৈতিক বক্তব্যগুলো ১০ নভেম্বরের জন্য তোলা থাকলো। সেদিনই সব বলবো।”
মুকুল রায় তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। ২০১১ এবং ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিকভাবে তাঁর সাংগঠনিক প্রজ্ঞা নিয়ে বিরোধীরাও প্রশংসা করেন আড়ালে-আবডালে। মুকুল একদা মমতা ব্যানার্জির মস্তিষ্ক বলেও পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সারদা-নারদা কাণ্ডের পর মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়।
সম্প্রতি, মুকুল রায়ের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করার পাশাপাশি তাঁকে বেশ কিছু পদ থেকেও সরিয়ে দেন মমতা ব্যানার্জি। গেলো দুর্গা পূজার আগে সংবাদ সম্মেলনে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়বেন বলে ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী গত সপ্তাহে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এরপর, আজই প্রথম কলকাতার মাটিতে পা রাখলেন মুকুল রায়।
Comments